খুলনার বাজারে আমদানী করা পেঁয়াজের দাম সাধারনের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকলেও দেশী পেঁয়াজ এখনও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। দাম কম বেশী হবে কি না এমন কথা বলাই যাচ্ছে না বিক্রেতাদের কাছে। দাম কমানোর কথা বললে শুনতে হচ্ছে নানান কথা।
গত সপ্তাহে ভোমরা ও বেনাপোল স্থলবন্দরে আটকে থাকা ট্রাক ছাড়ের খবরে খুলনায় পেঁয়াজের দাম কমলেও সম্প্রতি আবারও দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। এদিকে পেঁয়াজের দামের উর্দ্ধগতির লাগাম টানতে সরকার ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাকে করে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করলেও তার কোন প্রভাব পড়েনি বাজারে।
আজ সোমবার সকালে নগরীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা, আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০-৬৫ টাকা। তবে আমদানী করা পেঁয়াজের মান খুবই নিম্মমানের বলে জানিয়েছেন ক্রেতা সাধারণ। পাইকারী বাজার ঘুরে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৭৫-৮০ টাকা, এখনও সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে। আমদানিকৃত পেঁয়াজ যে দামে বিক্রি হয়েছিল সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভোমরা ও বেনাপোলে যে পরিমাণ পেঁয়াজের ট্রাক আটকে ছিলো, সে তুলনায় কম সংখ্যক ট্রাক আমাদের দেশে প্রবেশ করছে। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ট্রাকগুলো আটকে থাকায় অর্ধেকের বেশি পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। ফলে আমাদের এখন লোকসান গুণতে হচ্ছে। বাজারে ক্রেতা একেবারেই কম। একজন খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, সারা দিনে ২০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, পাইকারি বাজারে দাম না বাড়লেও খুচরা বাজারে দাম কেন বাড়বে।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত সেপ্টেম্বর স্থল বন্দরগুলোতে আটকে থাকা পেঁয়াজের ট্রাক ছাড়ের খবরে খুলনায় পেঁয়াজের দাম কমতে থাকে। কিন্তু যখন জানা যায় ট্রাক ছাড়ের খবর সঠিক নয়, তখন আবারও দাম বাড়ে। পেঁয়াজের এমন মূল্যবৃদ্ধিকে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি বলে তাঁদের অভিযোগ। এছাড়া মূল্য বৃদ্ধির সাথে জড়িতদের বিচার না হওয়াকে দায়ী করেছেন তাঁরা। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানের পরিসরকে তারা পর্যাপ্ত মনে করছেন না।
সরকারের মনিটরিংকে আরও জোরদার করা উচিত বলে তাঁদের দাবি। এছাড়া ট্রেডিং কর্পোরেশান অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সারাদেশের ন্যায় খুলনায় ৫টি ট্রাকের মাধ্যমে খোলাবাজারে পেঁয়াজসহ যেসব নিত্যপণ্য বিক্রি করছে, তার ব্যপ্তি আরও বাড়ানোর কথা বলেন ক্রেতারা। তাঁরা বলেন, খুলনার মত বিভাগীয় শহরে ৫ টি ট্রাক থেকে পেঁয়াজ বিক্রি ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত।
ট্রাকের সংখ্যা ১৫-২০ টি করার দাবি জানান তারা। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ট্রেডিং কর্পোরেশান অব বাংলাদেশ (টিসিবি) খুলনার উপ-উর্দ্ধতন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে খুলনায় ৫ টি ট্রাকের মাধ্যমে খোলা বাজারে ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতারা ভিড়ও করছেন। ট্রাকের সংখ্যা বাড়ানোর দাবির বিষয়ে তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে জানান। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি)’র পেঁয়াজ এখন অনলাইনে ঘরে বসেই কেনা যাচ্ছে। প্রতি কেজির দাম ৩৬ টাকা। একজন গ্রাহক একবারে তিন কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। একবারে সরবরাহ বা ডেলিভারি চার্জ বাবদ সর্বোচ্চ ৩০ টাকা নিতে পারবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো।