প্রকৃতি মানেই রহস্য। তবে এই রহস্যের দেখা মেলেনা সবসময়। যখন হঠাৎ দেখা মেলে তখন চারিদিকে পড়ে যায় শোরগোল। এমন ঘটনা ঘটেছে পীরগঞ্জের চৈত্রকোল ইউনিয়নের ঝাড়বিশলা নয়াপাড়া গ্রামে। ওই গ্রামের ছ’মিল শ্রমিক মাজেদুল ইসলামের একটি গাভীর পেট থেকে শুক্রবার রাতে একটি অদ্ভুত বাছুরের ( দুই মাথা, চার চোখ, দুই লেজ ও আট পা বিশিষ্ট) জন্ম হয়।
বাছুরটি গাভীর পেটেই মারা যাওয়ায় পশু ডাক্তারসহ স্থানীয় কয়েকজন অনেক চেষ্টা করেও প্রসব করাতে পারেনি। ফলে গাভিটিকে রাতেই কোরবানি দিয়ে বাছুরটি পেট থেকে বের করা হয়। অদ্ভুত বাছুর জন্মের এ সংবাদ রাতেই ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। ভোর বেলা হতে না হতেই শত শত মানুষের ভীড় জমে মাজেদুলের বাড়িতে। মানুষের ভীড় সামলাতে রীতিমত ঐ বাড়িসহ আশপাশের লোকজনকে হিমশিম খেতে হয়। অবশেষে বাছুরটিকে সন্ধ্যার পর পুতে রাখা হয়।
মাজেদুলের স্ত্রী মর্জিনা বেগম জানান, স্থানীয় গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ঐ গাভীটি ক্রয় করে লালন পালন করছিলাম। সন্ধ্যায় গাভীটি গোয়াল ঘরে তোলার সময় বুঝতে পারি যে বাছুর হবে। আমিও রাত জেগে সতর্ক ছিলাম। স্বামীও বাড়িতে নেই, কাজের সন্ধানে বর্তমান কুমিল্লায়।
তিনি বলেন, গাভীটি বাচ্চা প্রসব করতে গেলে প্রথমে একটি মাথা ও ৪টি পা বের হয়। অনেক চেষ্টা করেও বাকী অংশ বের করতে না পেরে প্রতিবেশীদের সহযোগীতা কামনা করি। তারাও ব্যর্থ হলে উপজেলা থেকে পশু চিকিৎসককে ডাকা হয়। কিন্তু চিকিৎসকও যখন ব্যথ হলে গ্রামের মুরব্বিদের পরামর্শে গাভীটিকে কোরবানি দিয়ে বিরল বাছুরটি পেট থেকে বের করা হয়। চোখের পানি মুছতে মুছতে মর্জিনা বেগম বলেন- হায়রে, আমার কপাল! গাভীও হারালাম, বাছুরও হারালাম। এ ধকল সামলাবো কি করে!
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডাক্তার মামুন জানান, সাধারণত এ ধরণের বাছুর বাঁচে না। কারণ বাছুরটির শরীর গঠন হলেও পরিপূর্ণ হয়নি। তবে যমজ বাছুর ছিল। কিন্তু কোনো ত্রুটির কারণে বিকশিত হতে পারেনি। জোড়াযমজে পরিণত হয়েছে।