খুলনায় হঠাৎ করেই শিশু ধর্ষন, নারী নির্যাতনসহ সামাজিক অপরাধ বেড়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুলনায় দুই কিশোরী নিকটাত্মীয়ের হাতে ধর্ষিত হয়েছে। পাইকগাছায় গৃহবধূকে ধর্ষনের পর ইন্টারনেটে ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে মোস্তাক মিস্ত্রি নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর আগে কয়রায় সাড়ে চার বছরের এক শিশু ও তেরখাদায় স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের ঘটনা ঘটে। বিশে-ষকরা বলছেন, প্রযুক্তির অপব্যবহার ও ইন্টারনেটে সহজলভ্য অশ¬ীল ভিডিওর কারণে সামাজিক অবক্ষয় বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারী ও পুর”ষ সহজেই অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। এতে পারিবারিক সম্পর্ক পরস্পরের আস্থা নষ্ট হচ্ছে ও অপরাধ প্রবনতা বাড়ছে।
আবার একটি চক্র আন্তর্জাতিক পর্নোসাইটে আপত্তিকর ভিডিওগুলো বিক্রি করে টাকা কামাচ্ছে। বর্তমানে অনলাইনে সংবাদপত্র, ফেসবুক ও ভিডি চিত্রের মধ্যে কৌশলে পর্নোগ্রাফি সংযুক্ত করা হচ্ছে। জানা যায়, খুলনায় প্রতিমাসে গড়ে ২০টির বেশি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। যার মধ্যে উদ্বেগজনকহারে বেড়েছে শিশু ধর্ষণের ঘটনা।
গত ৯ অক্টোবর মহানগরীর গল¬ামারীতে ভাগ্নিকে ধর্ষণের অভিযোগে খালু চুন্নু মিয়াকে (৪০) মারধর করে পুলিশে দেয় স্থানীয় জনতা। তার বির”দ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ ও এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে ২০ হাজার টাকা প্রস্তাবের অভিযোগ রয়েছে। একই দিন পাইকগাছায় বোনের বাড়ির সবাইকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ভাগ্নিকে ধর্ষণের অভিযোগ মামা আছানুর রহমান (২৮) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৪ অক্টোবর রাতে ওই ঘটনার চারদিন পর থানায় মামলা করেন কিশোরীর বাবা।
১৮ আগষ্ট কয়রা উপজেলার বালিয়াপুর গ্রামে সাড়ে চার বছরের এক শিশু ও ১৪ সেপ্টেম্বর তেরখাদায় পুলিশ সদস্য কর্তৃক চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া নারীকে তার গোপন মুহূর্তের তোলা ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পরিচিত পুর”ষদের কেউ কেউ তার সঙ্গে অনৈতিক সর্র্ম্পক স্থাপনের জন্য চাপ দিচ্ছে। এদিকে দীর্ঘসময় গৃহবন্দি থাকার কারণে পরিবর্তিত বিকৃত মানসিক ভাবধারা দায়ি বলে মনে করেন সরকারি সুন্দরবন কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রকাশ চন্দ্র অধিকারী।
তিনি বলেন, পাশ্চাত্য সংস্কৃতি, গৃহবন্দি অবস্থায় ইন্টারনেটে অপব্যবহার বৃদ্ধি, সহজলভ্য অশ¬ীল ভিডিও, হতাশা বোধ সামাজিক মূল্যবোধকে ভেঙে দিয়েছে। যার ভয়াবহ বাজে প্রভাব পড়ছে সমাজে। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী অপরাধ বিশে¬ষক অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, নানা কারণে আমাদের সামাজিক, পারিবারিক বন্ধন ভেঙ্গে গেছে। মামলার দীর্ঘসূত্রিতায় অপরাধ করার পরও শাস্তি হয় না। ফলে অপরাধীরা বিকৃত মানসিকতায় উৎসাহি হয়।