সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে স্বামী সন্তান ও পরিজন নিয়ে ২২ দিন ধরে অবরুদ্ধ হয়ে আছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসেনর বিভিন্ন দপ্তরে বারবার আবেদন করেও অবরুদ্ধ জীবন থেকে মুক্ত হতে পারছে না ঐ পরিবারটি। এতে তার ও তার স্বামী সন্তান পরিজনের জীবন নিয়ে চরম নিরাপত্তা হীনতা ও মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বলে জানান ভোক্তভোগী ঐ পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ পৌরসভার ধানঘরা এলাকায়।
জানা যায়, রায়গঞ্জ পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রতিবন্ধী হবিবুর রহমানের একমাত্র ছেলে লিটনের সাথে বিবাহ হয় একই উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুর রহিম শেখের কন্যা জেসমিন সুলতানার।
বিবাহের পর থেকেই তার স্বামীর বাড়ির দুই জন প্রতিবেশি রায়গঞ্জ পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাতেম আলী সুজন ও চা বিক্রেতা বানু সরকার স্থানীয় পৌরসভা কর্তৃক নির্ধারীত যাতাযাতের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এর আগে তারা এক প্রতিবেশির বাড়ির মধ্য দিয়ে যাতাযাত করে আসছিল। কিন্তু তারা গত ৪ এপ্রিলে পরিবারের সদস্য তার ও তার স্বামীর পরিবারের উপর চড়াও হলে সে পথও বন্ধ হয়ে যায়।
দীর্ঘদিন ধরে চলে আসতে থাকা বিবাদমান রাস্তা নিয়ে গত বছরের নভেম্বরে পৌর মেয়র আব্দুল্লাহ আল পাঠানের সভাপতিত্বে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এক শালীস বৈঠকে যাতায়াতের রাস্তা নির্ধারন করে দেন তিনি। কিন্তু পরবর্তিতে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবয়ন না করে ঐ পরিবারটিকে গত ২২ দিন ধরে অবরুদ্ধ করে রাখে পার্শ্ববর্তী ঐ পরিবারগুলো।
ফলে তারা চিকিৎসা সেবা, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদী ক্রয় ছাড়াও চরম মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য পড়েছে।
এ থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য ঐ মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে জেসমিন সুলতানা গত ১৯ এপ্রিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি অভিযোগ দিলেও আজও কোন কুল কিনারা হয়নি। এছাড়া গত ২৩ এপ্রিল রায়গঞ্জ থানায় বিষয়টি নিরশনের জন্য আরেকটি অভিযোগ দেয়া হয়।
এছাড়াও বিষয়টি অবগত করা ও নিরশনের জন্য মেয়র আব্দুল্লাহ আল পাঠান ৯৯৯ ফোন দিয়ে এর একটা সমাধান চেয়ে বসেন নিজেই। কিন্তু কোন অদৃশ্য ক্ষমতার কাছে হেরে যাচ্ছেন সবাই।
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আইনশৃংখলা বাহীনি, মেয়র, সমাজপতি থেকে শুরু সকলেই অবগত হলেও আজও অবরুদ্ধ জীবন থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি ঐ পরিবারটিকে।
ঐ পরিবারের মুরুব্বি প্রতিবন্ধী হবিবুর রহমান বলেন, আমি মারা গেলে আমার লাশটা বের করার মত জায়গা আটকেও দিয়েছে প্রতিবেশীারা।এ অবস্থা থেকে মুক্তি চান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমুর রহমান বলেন, আমি রায়গঞ্জ থানা ইনচার্জকে ( ওসি) ব্যবস্থা নিতে বলেছি। রায়গঞ্জ পৌর মেয়র আব্দুল্লাহ আল পাঠান বলেন, আমি মীমাংসার জন্য শালিস করে রাস্তা দেয়ার জন্য সমঝোতা করে দিলেও প্রতিবেশিরা কেউই তা বাস্তবায়ন করার জন্য এগিয়ে আসেনি বিধায় আজকের এই সমস্যা।
রায়গঞ্জ থানার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি পুলিশ পাঠিয়েছিলাম কিন্তু প্রতিপক্ষ কোন কথাই শুনতে চায় না।
অবরুদ্ধ জীবন থেকে বাঁচতে এবং সন্তান ও স্বামীর জীবন রক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা মন্রনালয় ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন ভোক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধার সন্তান জেসমিন সুলতানা।