নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঘনকুয়াশার চাদরে ঢাকতে শুরু করেছে। সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত আকাশ আর মৃদু বাতাশে বাড়তে শুরু করেছে শীতের তীব্রতা। তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে শুরু হওয়ায় জন শূন্য হতে শুরু করেছে রাস্তা ঘাট। গত রবিবার উপজেলার ক’টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে সন্ধ্যার পর মধ্য বয়স্ক আর বৃদ্ধরা কম্বল গায়ে বসে রয়েছেন জরসড়ো হয়ে। গোবাদী পশুরু গায়েও দেয়া হচ্ছে পাটের চট অথবা পুরাতন গরম কাপড়। স্থানীয় ১০০ শয্যা হাসপাতাল ও রেলওয়ে হাসপাতালেও নিউমুনিয়া আর জ্বর সর্দি রোগীর সংখ্যা।
গত দিনের তুলনায় চলতি শীত মৌসুমে শীতের প্রকপ বেড়ে যাওয়ার আশংকায় শহরের রেল লাইন এলাকায় পুরাতন গরম কাপড়ের ব্যবসা জমজমাট হতে শুরু করেছে। সেই সাথে নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষজন পুরাতন গরম কাপড় কিনতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস সুত্র জানান রবিবার রাতে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামীতে আরো কমতে হতে পারে বলে আশংকা করছেন তারা। চলতি বছরে উত্তর পশ্চিম দিক থেকে আসা ঠান্ডা বাতাসে শীত বেশী অনুভব হচ্ছে। মৃদু ঘুর্ণিঝড়ের আশংকাও রয়েছে বলে জানান তারা।
টুটুল ও জয়নাল আবেদীন হিরো জানান চলতি মৌসুমে অগ্রহায়ণ মাসেই শীতের প্রকপ আকার ধারণ করতে শুরু করেছে। পৌষ মাসে প্রচন্ড শীত পড়তে শুরু করলে বয়স্কদের অবস্থার অবনতি হতে পারে। গ্রামের প্রায় সকলেই রাতে ও ভোরে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ছে। সৈয়দপুর বনিক সমিতির সভাপতি ইদ্রিস আলী জানান দিনে খুব একটা শীত অনুভব না হলেও সন্ধ্যার পরপরই কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাস অনুভব হচ্ছে। রাতে দুর পাল¬ার যানবাহন কুয়াশায় ব্যবহৃত হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ এনামুল হক জানান এবারে অগ্রহায়ণ মাসে আগাম শীত পড়তে শুরু করেছে। পাশাপাশি করোনা ভাইরাসও মাথা চাড়া দিতে শুরু করেছে। শীতের সময় এমনিতেই ভাইরাস জনিত রোগ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। সতর্কতা অবলম্বন করা না হলে এবারে শীতের মৌসুমে মৃত্যুকে হাতছানি দেয়ার উপক্রম হতে পারে। সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং বার বার হাত ধুয়ার পাশাপাশি গরম পানির ব্যবহারসহ গরম কাপড় পরিধান করার পরামর্শ দেন তিনি।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ, এএসপি সার্কেল অশোক কুমার সরকার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসনাত সরকার জানান শীত ও করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। উপজেলার কোন মানুষ যাতে কোন কষ্ট না পায় সেজন্য পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র ও করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় পর্যাপ্ত বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে বলে জানান তারা। ছবি আছে