সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থিত প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল লিমিটেডে ডাক্তারের অবহেলায় আবারও রোগী মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। কুমিল্লার জেলার মেঘনা হসপিটাল থেকে আসা শাহনাজ বেগম (৩০) নামে সিজারের এক মহিলা রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থিত প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল লিমিটেডে ঐ রোগীর মৃত্যু হয়। এর আগে গত ২’রা ডিসেম্বর রোগীর অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত ডাক্তার ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিতে না দেওয়ায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ আত্মীয়-স্বজনদের। মৃত শাহনাজ বেগম কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানার রতনপুর গ্রামের মনির হোসেনের স্ত্রী।
মৃত শাহনাজ বেগমের স্বামী মনির হোসেন জানান, গত ৩০’শে নভেম্বর কুমিল্লার মেঘনা হসপিটালে তার স্ত্রীর সিজারে একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। পরে তার স্ত্রীর শরীর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালে এনে আইসিও’তে ভর্তি করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বললে আইসিও’তে থাকা রাইসুল ইসলাম নামে এক ডাক্তার এখানেই চিকিৎসা নিতে বলেন। চিকিৎসা শুরু করার পর কোন আত্মীয়-স্বজনকে রোগী দেখতে সুযোগ দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
গত মঙ্গলবার সন্ধায় প্রায় ১৫’হাজার টাকার ঔষধ ক্রয় করতে বলা হয় রোগীর পরিবারকে। গত মঙ্গলবার রাতে প্রায় ১১’টার সময় রোগী মারা গেছেন বলে ডাক্তাররা রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের জানান। তবে স্বজনদের অভিযোগ আরও আগেই তাদের রোগী মারা গেছে। যা প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালের চিকিৎসকরা গোপন করেছিলেন বিল বাড়ানোর জন্য।
পরে রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা ৯৯৯-এ ফোন দিলে রাতেই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ ফয়সাল আলম জানান, অসুস্থ্য অবস্থায় মেঘনা থেকে প্রো-অ্যাকটিভে রোগীকে নিয়ে আসে স্বজনরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রোগী। তবে স্বজনরা লিখিত কোন অভিযোগ করেনি। তারা লাশ নিয়ে চলে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মোবাইলে (০১৯০২৫৫৬০০৬) ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে সিদ্ধিরগঞ্জে প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সময় ডাক্তার ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। যা বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় একাধিকবার প্রকাশিত হয়েছে। প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন ভুক্তভুগী স্বজন এবং স্থানীয়রা।