নীলফামারীর সৈয়দপুরে সিনেমার সুটিংকালে ব্যবহৃত আগুন থেকে রেলওয়ে উর্ধ্বতন প্রকৌশলী/ওয়ার্কস (আই ডব্লিউ) অফিসে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ৫ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ৬ টায় সংঘটিত এ অগ্নিকান্ডে ওই অফিসের গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জমাদীসহ মূল্যবান সম্পদ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধকালীনসহ রেলওয়ের ঐহিত্যবাহী বিভিন্ন জিনিসপত্রও রয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে শহরজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, দামাল নামের একটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ডকুমেন্টরী ফিল্ম (সিনেমা) তৈরীর জন্য চ্যানেল আইয়ের সহযোগিতায় ঢাকা থেকে পরিচালক রায়হান রাফির নেতৃত্বে একটি সুটিংদল সৈয়দপুরের বিভিন্ন স্পটে চিত্রায়ন করছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৪ ডিসেম্বর শুক্রবার সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ে উর্ধ্বতন প্রকৌশলী/ওয়ার্কস (আইডব্লিউ) অফিস চত্বরে সুটিং করা হয়। রাতে অবস্থান করে দলটি ভোরের দিকেও একটি চিত্রায়নের সময় আগুন জ্বালিয়েছিল।
ওই আগুন থেকেই হঠাৎ করে অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হলে অফিস সংলগ্ন গোডাউনে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সেখানে রক্ষিত রেলপথের স্লিপার, রেলওয়ে কোয়াটার ও বাংলোর অব্যবহৃত কাঠের তৈরী দরজা-জানালা, বিভিন্ন সময় রেলওয়ের জমি থেকে কেটে আনা গাছের গুড়ি পুড়ে যায়। এছাড়াও ব্রিটিশ আমল থেকে ব্যবহৃত আলোকদানী (হারিকেন) সহ অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী পন্য সুটিংয়ের প্রয়োজনে ব্যবহার করাকালে আগুন লেগে সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
খবর পেয়ে সৈয়দপুর শহরের ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিটসহ নীলফামারীর সদর ও উত্তরা ইপিজেড এর ২ টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে দীর্ঘ ২ ঘন্টা প্রচেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। কিন্তু তার আগেই প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ভস্ম হয়ে গেছে।
রেলওয়ে উর্ধ্বতন প্রকৌশলী/ওয়ার্কস (আইডব্লিউ) শ্রী নারায়ন চন্দ্র জানান, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডিএস) মোঃ জয়দুল ইসলাম কর্তৃক প্রেরিত পত্র মারফত নির্দেশিত হয়ে সুটিং দলকে আমার অফিস চত্বরে চিত্রায়নের জন্য অবস্থানের সুযোগ দেই। তাদের সুটিংয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার (এম্বুলেন্স বা ফায়ার ব্রিগেড) এর কোন প্রকার সংস্থান ছিলনা। একারণে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে এবং এতে প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডিএস) মোঃ জয়দুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি জানান, উর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের চিঠির প্রেক্ষিতে তাদের সুটিংয়ের জন্য স্থান দেওয়া হয়েছিল। তারা সৈয়দপুর রেলওয়ের বিভিন্ন স্থানে সুটিং পরিচালনা করেছেন। এরই অংশ হিসেবে আইডব্লিউ অফিসেও তারা সুটিং করছিলেন। এসময় তাদের ব্যবহৃত আগুন থেকেই অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়েছে। আমরা তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করবো।
নীলফামারী সদর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ আমিরুল ইসলাম জানান, তিনটি ইউনিট ২ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আনুমানিক ৫ লাখ টাকা।
সুটিং গ্রুপের প্রযোজক মোঃ আবু সাইদ ইমনের ০১৯৩৬১৫৬০৫৪ নম্বরের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।