কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের অভিযোগে পুলিশ দুই মাদ্রাসা ছাত্রকে আটক করেছে। গতকাল শনিবার রাতে শহরের একটি মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ ব্যাপারে আজ রোববার প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা আজ রোববার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। প্রেস বিফ্রিংয়ে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাংসদ ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ উপস্থিত থাকবেন।
জেলা পুলিশের ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুজনকে শনাক্ত করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসা থেকে তাদের আটক করা হয়েছে। বিস্তারিত প্রেস বিফ্রিংয়ে জানানো হবে।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তা মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সামনে একটি ছাই রঙের একটি নোহা গাড়ি আসে। এ সময় গাড়ির ভেতর থেকে এক ব্যক্তি অস্ত্র বের করে ফাঁকা গুলি ছোড়েন। এরপর দ্রুত তাঁরা গাড়ি নিয়ে চলে যান।
এ ঘটনা সেখানে উপস্থিত পুলিশ লাইনসের উপপরিদর্শক (এসআই) মকছেদুর রহমান সরাসরি প্রত্যক্ষ করেন। তবে তিনি তাঁদের আটকাতে পারেননি।
এসআই মকছেদুর বলেন, আজ বেলা তিনটার দিকে তিনি ভাস্কর্যের সামনে পেশাগত দায়িত্বে আসেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সেখানে একটি নোহা গাড়ি আসে। ওই গাড়ির ভেতর থেকে ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। গাড়িটিতে কোনো নম্বর প্লেট ছিল না। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়।
কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে পৌরসভার তত্ত্বাবধানে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধুর তিনটি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে। এর একটির কাজ প্রায় শেষের দিকে। এরই মধ্যে শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা।
পুলিশ ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রাত সাড়ে সাতটার দিকে একটি নোহা গাড়ি, যার নম্বর প্লেট ছিল না। গাড়িটি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ঘিরে দুবার ঘুরে গ্লাস বের করে একজন ফাঁকা গুলি ছোড়েন। এরপর তাঁরা দ্রুত মজমপুর এলাকার দিকে চলে যান। ঘটনার পরপরই ব্যস্ততম ওই এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে দাঁড়িয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, ‘কে বা কারা করেছে, সেটি তদন্ত চলছে। এর বেশি কিছু এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।’ এদিকে ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদকের নেতৃত্বে সাংবাদিকের উপর হামলাও ঘটেছে। এ ঘটনায় দীপ্ত টিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি দেবেশ কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।