কুয়াশা আর শীতে শ্বাসকষ্ট এমনিতেই প্রকট আকার ধারণ করে। তার উপর বর্তমানে শীতে করোনার আতংক। ফলে চলমান শীতে কোনটা শ্বাসকষ্ট আর কোনটা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত তা বুঝা মুশকিল হয়ে পড়েছে। ভুক্ত ভোগীরা নির্ধারন করতে পারছেন না বলেই ছুটছেন সেবা দান কেন্দ্র অথবা নিকটস্থ হাসপাতালে।
দেখা গেছে নীলফামারী জেলাসহ সৈয়দপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আর ডাক্তাররাও এসব নিয়ে দুশ্চিন্তা বা আতংকৃত না হয়ে সুচিকিৎসার পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা বলছেন করোনা ভাইরাসের উপসর্গ আর শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা প্রায় একই। তবে রোগ নির্ণয় করা থাকলে সবরোগীরই সেবা পেতে সুবিধা হবে। হাসপাতালের সাধারণ বেড আর করোনায় আক্রান্ত হওয়া রোগীর বেডের কমতি নেই। তবে অল্প দিনে ধেয়ে আসা সৈত্য প্রবাহে সবধরনের রোগী যাতে পর্যাপ্ত ঔষধ পায় সেই ব্যবস্থার কিছুটা কমতি রয়েছে বলে জানান তারা।
নীলফামারী সদর, সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ও রেলওয়ে হাসপাতালসহ সকল চিকিৎসা সেবাদান কেন্দ্র গুলোতে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীর চাপ বেড়েছে। বহির্বিভাগে এসব রোগীর বেশী চাপ আর পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহে হিমশিম খেতে গিয়ে অনেকই চলে যাচ্ছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রংপুর আধুনিক হাসপাতালে। অনেক সময় দেখা গেছে সৈয়দপুর শহরে চেম্বার নিয়ে বসে থাকা নাক, কান, গলা ও বক্ষব্যধি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ ভিডিও কলে বা গ¬াস দিয়ে ঘেরা রুম থেকে চিকিৎসার পরামর্শ দিচ্ছেন। গুরুত্বর কোন রোগীকে সশরীরে দেখছেন না।
নীলফামারী সদর ও সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর ১০ জনই শীত জনিত বা শ্বাসকষ্ট জনিত রোগী আক্রান্ত। এসব রোগীর বয়স ৬০ বছরের উর্ধে অথবা বছর ছুই ছুই। হাসপাতাল সূত্র জানায় শীত বেড়ে যাওয়ার আগে দৈনিক ১০০ থেকে ১২০ জনের মতো রোগী সেবা মিললেও বর্তমানে ২০০ থেকে ৩০০ রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। যেসব রোগীর শ্বাসকষ্ট বেশী তাদের রংপর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হচ্ছে। তবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য বেডের অভাব না থাকলেও অনেকে এমনিতেই চলে যাচ্ছেন রংপুর আধুনিক হাসপাতালে।
নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ ডাঃ মাহবুব আলম জানান শ্বাসকষ্ট হলে রোগীকে সোজা হয়ে বসিয়ে রাখতে হবে সেই সাথে রোগীকে আশ্বাস্ত করতে হবে যে তার কিছুই হয়নি। রোগীর মাঝে আতংক ঢুকে গেলেই সমস্যা হতে পারে। কোনক্রমেই রোগীকে ঠান্ডা লাগানো চলবে না। শ্বাসকষ্ট অতিরিক্ত হলে দ্রুত অক্সিজেন প্রয়োগ করে রংপুর মেডিকেল কলেজ অথবা রংপুর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসার পরামর্শ দেন তিনি।
রংপুর বিভাগের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ কামরুজ্জামান জানান সৈয়দপুরসহ উত্তরাঞ্চলে ধেয়ে আসতে পারে শৈত্য প্রবাহ। শীতে শ্বাসকষ্ট ও করোনা আতংক বেশী হতে পারে। শ্বাসকষ্ট অতিরিক্ত দেখা দিলে দ্রুত রংপুর সদর হাসপাতালে সুচিকিৎসার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন করোনা কোন জটিল রোগ নয় তবে খেয়াল রাখতে হবে রোগী যেন আতংকিত না হয়। সুচিকিৎসায় শতকরা ৯৯% করোনা রোগী সুস্থ্য হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।