সৈয়দপুর শহরের লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ সংলগ্ন হাতিখানা কবরস্থান সড়কের দু’পাশে রেলের কোয়াটার ভেঙ্গে সম্প্রতি বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন রাজিব নামের এক যুবক। একই সাথে শহরের পাড়া-মহল¬ায় রেলওয়ে জমিতে বহুতল ভবন ও মার্কেট নির্মাণ কাজ অব্যাহত থাকলেও চোখ-কান বন্ধ রেখেছেন সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলীর ও সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলীর রহমত নামের এক পিওনসহ নির্বাহী প্রকৌশলীকে অর্থের বিনিময়ে দখলকারীরা রেলওয়ের কোয়াটার ও পতিত জমি দখল বিক্রয়ে মেতে উঠেছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে উচ্ছেদ করতে বিভাগীয় ষ্ট্যাট অফিসার (পাকশী) জিএম (রাজশাহী) ও রেলমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
অভিযোগের প্রকাশ ১৮৭০ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে থেকে পাওয়া ভূ-সম্পদ দীর্ঘ কয়েক দশকে সবচেয়ে বেশী বেদখলের খপপরে পড়েছে ২০১৯ ও ২০২০ সালে। ১৯৭০ সাল থেকে ২০২০ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬শ একর ভূ-সম্পত্তি দখল করে নেয় দখলকারীরা।
যার বর্তমান বাজার মূল্য ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশী। রেল বিভাগের নিরাবতা ও স্থানীয় রেলওয়ে কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যসহ নাম মাত্র মামলা করায় প্রশাসনের নাকের ডগায় বসেই দখলকারীরা তাদের দখল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। মাঝে মধ্যে বিভাগীয় ভূ-সম্পদ কর্মকর্তা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত করলেও কার্যত কোন সফলতা আসেনি।
সংশি¬ষ্ট সূত্র মতে সৈয়দপুর রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি রয়েছে প্রায় সাড়ে ৮শ একর। এর মধ্যে প্রায় ৬শ একর ভূ-সম্পত্তি দখলকারীরা দখল করে নিয়েছে। এর মধ্যে রেলওয়ের ৩২শ কোয়াটারের মধ্যে ২৮শ কোয়াটার দখলে নেয় দখলবাজরা। রেল বিভাগের তৎপরতা অভাব ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের ঘুষ বাণিজ্যের কারণে পতিত জমি দখলের পর সেখানে বহুতল ভবন ও মার্কেট নির্মাণ হয়।
দখলকৃত রেলওয়ের কোয়াটার গুলিও ভেঙ্গে সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে। রেলওয়ের শহর সৈয়দপুর থেকে রেলওয়ের নামনিসানা মুছে দিতে দখল বাজরা তাদের দখল কার্যক্রম অব্যাহত রেখে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছেন। রেলওয়ের হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ থাকার পরও তাদের গুনতে হচ্ছে লোকশান। আর দখলবাজরা ওই সম্পত্তি দখল বিক্রয় করে বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক। রেলওয়ে বিভাগীয় ষ্ট্যাট অফিসার ও স্থানীয় রেল কর্তৃপক্ষের নিরাবতার কারণে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বেদখল হয়ে গেছে বলে অনেকের অভিযোগ।
রেলওয়ে বিভাগীয় ষ্ট্যাট অফিসার (পাকশী) নুরুজ্জামান জানান সৈয়দপুর শহরের সিংহ ভাগ মানুষ বাস্তহারার কথা বলে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েও রেলওয়ের জমি অবৈধ ভাবে দখল করে আছেন। সেখানে তারা নির্মাণ করেছেন বহুতল ভবন ও মার্কেট। দখল হয়ে যাওয়া রেলওয়ের ওইসব সম্পত্তি উদ্ধারে কয়েকদফা নোটিশ করা হয়েছিল কিন্তু উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কঠোর নির্দেশনা ছাড়া কিছুই করতে পারেনি তিনি।
তিনি বলেন বেদখল হয়ে যাওয়া সম্পত্তি উদ্ধার করা হলে সৈয়দপুরসহ দেশের প্রায় ২/৪ লাখ যুবকদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হতো। কয়েক হাজার ভূমিহীন রেল পরিবারের স্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা করা সম্ভব হতো। স্কুল কলেজসহ মেডিকেল কলেজও নির্মাণ করা যেত। পাশাপাশি দরকার নেই এমন সম্পত্তি বিক্রি করে সৈয়দপুরের ব্যাপক উন্নয়ন করা সম্ভব। কিন্তু রেল মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশনা না পাওয়ায় রেলওয়ের জমি দখলে বুকে রক্তক্ষরণ হলেও বাধ্য হয়ে নিরাবতা পালন করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।