শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রতি তার অনুরাগ জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ধরে রাখতে চান শিল্পী নিশাত আফজা আরজু। চলমান করোনা পরিস্থিতি তার শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চার সুযোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানান এই শিল্পী।
বাংলা গানের জনপ্রিয় শিল্পী নিশাত নজরুল, রবীন্দ্র ও আধুনিক গানের শিল্পী হিসেবেও সমানভাবে সমাদৃত। বাংলাদেশ বেতার এবং বিটিভির বিশেষ গ্রেডের এই শিল্পী কঠোর সাধনা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালীন সময়েও শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চায় নিজেকে নিবেদিত রেখেছেন নিশাত।
নিশাত ১৯৬৯ সালে, ময়মনসিংহ শহরের সানকিপাড়ায় জন্মগ্রহন করেন। শৈশবকালেই সংগীতের প্রতি নিশাতের অনুরাগ প্রকাশ পায় এবং সংগীতানুরাগী বাবা ডাঃ এম এ হালিম এবং ও মা শামসুন নাহার-এর অনুপ্রেরণায় শুরু হয় তার পথ চলা যা এখনও প্রবাহমান। মেধাবী ছাত্রী নিশাত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যজ্ঞিান অনুষদ থেকে ১৯৯৭ ও ১৯৯৮ সনে যথাক্রমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষনা ইনস্টিটিউট-এ সাইনটিফিক অফিসার হিসাবে যোগদান করেন। তিন বছর চাকুরি করার পর সংসার দেখাশুনা ও সংগীতে আরো মনোনিবেশ করার জন্য স্বেচছায় চাকরী ছেড়ে দেন।
সংগীতে পথ চলায় নিশাত তার বাবা ডাঃ এম এ হালিম, স্বামী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এবং দুই মামা-আবদুল হান্নান ও আব্দুল মান্নান এর নাম উল্লেখ করেন। বিশেষভাবে তার বাবার অবদানের কথা স্বীকার করে নিশাত বলেন, বাবা আমাকে ঢাকায় ওস্তাদ ডঃ সানজিদা খাতুন, ওয়াহিদুল হক, ওমর ফারুক, সোহরাব হোসেন ও খালিদ হোসেনের কাছে গান শেখার জন্য নিয়ে যেতেন। ওস্তাদ মিথুন দে, গোপাল দত্ত, সুধীন দাস, ফাহমিদা খাতুন, অজিত রায়, ডঃ এ বি এম নুরুল আনোয়ার, সুজিত মোস্তফা এবং সাদি মোহাম্মদ-এর কাছেও তিনি তালিম নেন।
সংগীতের প্রতি বাবার অবদানের কথা স্বীকার করে নিশাত বলেন –”বাবা আমাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় ব্যাগে করে ছোট একটি টেপ-রেকর্ডার নিয়ে যেতেন ওস্তাদদের তালিম রেকর্ড করার জন্য। যাতে পরে আমি সে তালিমগুলো ভ’লে না যাই। পেশায় একজন স্বনামধন্য ডাক্তার হয়েও বাবা ছিলেন, একজন নামকরা ক্রীড়া সংগঠক ও স্থানীয় মুসলিম ইনস্টিটিউট ব্যায়ামাগারের প্রতিষ্ঠাতা ও এর প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।
শিল্পী নিশাত-এর বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া দুই মেয়ে-বেনজির বিনতে রফিক ও আনিকা নওয়ার বিনতে রফিকও মায়ের পদাংক অনুসরণ করে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নিচ্ছেন।
অডিও গানের পাশাপাশি তিনি শিল্পকলা একাডেমিতে একক সংগীত সন্ধ্যা করেছেন। শিল্পী নিশাতের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সাফল্যের ঝুলিতে জমা রয়েছে অনেক স্বীকৃতি ও সম্মাননা।
শাস্ত্রীয় সংগীত নিয়ে নিশাত বলেন, এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং এর প্রসারের জন্য খ্যাতনামা ওস্তাদদের নিয়ে সারা দেশে আরো বেশী করে কর্মশালা আয়োজন করা উচিত।