‘বেঙ্গল সিমেন্ট নিবেদিত বাংলার গায়েন’-২০২০ এর চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন রাজশাহীর প্রতিযোগী রাসেল মৃধা। ১ম রানার-আপ নরসিংদীর রাবেয়া সেতু। ২য় রানার-আপ টাঙ্গাইলের প্রতিযোগী বিলকিস আক্তার। ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার রাত ৭:৩০ মিনিটে আরটিভিতে প্রচারিত হয় গ্র্যান্ড-ফিনালের জমাকালো আয়োজন।
বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া স্টুডিও, ৯৫ তেজগাঁও-এ গ্র্যান্ড ফিনালের শুভেচ্ছা বক্তব্যে আরটিভির ভাইস চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন- আরটিভি সবসময় চেষ্টা করে মেধাবী মানুষদেরকে সম্মান জানাতে এবং তাদেরকে সবার সামনে তুলে ধরতে। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমেও আরটিভি বেশকিছু গানের শিল্পীকে সবার সামনে তুলে ধরতে পেরেছে এটাই আমাদের অর্জন।
আরটিভি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান বলেন- মানুষ যখন ঘর থেকে বের হতে না পারার কারণে বিষন্ন হয়ে পড়েছিল আমরা তাদেরকে এবং কণ্ঠশিল্পীদেরকে এক বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য এই প্রতিযোগিতার সূচনা করেছিলাম। আজ এই আয়োজনের মধ্যেদিয়ে উঠে আসা শিল্পীদেরকে সারা বিশ্বের বাংলা ভাষা-ভাষি মানুষ চিনে। তাদের গান শোনে।
এ প্রতিযোগিতার আদলে আরো বহু আয়োজন শুরু হয়েছে যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। কারণ আরটিভি সবসময় প্রতিভাবানদেরকে এগিয়ে দিতে চায় এবং এই প্রক্রিয়ায় যুগযুগ ধরে শিল্পী তৈরি হতে থাকবে।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী জনাব এম এ খালিদ এমপি বলেন- আরটিভি এ প্রতিযোগিতাটি করোনার সময়ে এমন ভাবে সবাইকে নিরাপদে রেখে করলো যা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। আরটিভির সব অনুষ্ঠানেই আমি আমন্ত্রিত হই এবং উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করি কারণ তারা সব ক্ষেত্রে যেভাবে দেশপ্রেম ও সংস্কৃতিমূল্যবোধকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে তার জন্য আমি তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
বেঙ্গল সিমেন্ট এর চিফ অপারেটিং অফিসার আসাদুল হক সুফিয়ানী বলেন- বেঙ্গল সিমেন্ট নিবেদিত আরটিভি বাংলার গায়েন যেভাবে সাধারণ মানুষের মাঝে সাড়া ফেলেছে তা সত্যি অবিশ্বাস্য। আমরা এ প্রতিযোগিতার সাথে থাকতে পেরে আনন্দিত এবং ভবিষ্যতেও এ ধরণের আয়োজনের সাথে থাকতে আগ্রহী।
করোনাকালীন ঘরবন্দি সময়ে বাংলার মাটির সুরকে বিশ্বমাঝে নতুন আঙ্গিকে পরিচয় করিয়ে দিতে আরটিভি উদ্যোগ নেয় ভিন্নমাত্রার লোকগানের আয়োজনের। সেই প্রয়াসেই ২০২০ সালের ১১জুন আরটিভি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান ফেসবুক লাইভে দেশ বরণ্য সঙ্গীতশিল্পী এবং সঙ্গীত পরিচালকদের উপস্থিতিতে উদ্বোধন ঘোষণার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় রিয়েলিটি শো ‘বেঙ্গল সিমেন্ট নিবেদিত বাংলার গায়েন’এর।
প্রাথমিক বাছাই রাউন্ডে ২লক্ষাধিক আবেদন থেকে যারা নির্দেশনা অনুযায়ী গান পাঠাতে পেরেছেন এমন ১৪৫১ জনকে রেজিষ্ট্রেশনের জন্য নির্বাচিত করা হয়। ১৪৫১ জন প্রতিযোগীর গানগুলো বিচারকদের ‘ইয়েস-নো’ কার্ড এর ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে প্রাথমিক বাছাই পর্বের জন্য ৩০০ জন প্রতিযোগীকে নির্বাচন করা হয়েছে। ৩০০ জন প্রতিযোগীর কাছ থেকে পুনরায় অনলাইনে ভিডিও আহ্বান করা হয় এবং সেখান থেকে সেরা ১০০ জন নির্বাচিত হয় । সেরা ১০০ প্রতিযোগীকে নিয়ে শুরু হয় বাংলার গায়েন-এর স্টুডিও রাউন্ড।
পরবর্তীতে ১০০ থেকে ৫০, ৫০ থেকে ৩০, এভাবেই ধাপে ধাপে গ্র্যান্ড ফিনালে’র দিকে এগিয়ে গিয়েছে বাংলার গায়েন-এর প্রতিযোগিতা। উল্লেখ্য বাংলার গায়েন এর আয়োজনে প্রতিযোগী হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি দেশের বাহির হতেও বাংলা ভাষাভাষীর মানুষ এতে অংশ নেন। ‘বেঙ্গল সিমেন্ট নিবেদিত বাংলার গায়েন’-এর পুরো আয়োজনে বিচারক হিসেবে সুনিপুণ দক্ষতার সাথে বিচারকার্য সম্পন্ন করছেন- দেশ বরণ্য সংগীতশিল্পী এস আই টুটুল, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার প্রাপ্ত খ্যাতিমান সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন এবং সংগীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী ইবরার টিপু।
পর্যায়ক্রমে ‘বেঙ্গল সিমেন্ট নিবেদিত বাংলার গায়েন’ এর গ্র্যান্ড ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠিত হলেও ব্লাইন্ড অডিশন, লালন স্মৃতিচারণে বিশেষ পর্ব এবং মৌলিক গানের বিশেষ পর্ব ছিলো দর্শকদের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু। মৌলিক গানের পর্বে বাংলার গায়েন এর সম্মানিত ৩বিচারক দেশ বরণ্য গীতিকারের লেখা গান নিজেদের কম্পজিশনে তৈরী করে তা উপহার দেন প্রতিযোগিদের গাইবার জন্য। জীবনের প্রথম মৌলিক গান চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করে সেরা ৭জন প্রতিযোগী উত্তীর্ণ হয় গ্র্যান্ড ফিনালের গালা রাউন্ডে।
গ্র্যান্ড ফিনালের পুরো আয়োজন ছিলো চমকপ্রদ। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার এই পর্বে সাত ফাইনালিস্টের সাথে কন্ঠ মিলিয়েছেন দেশের তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় সাত সঙ্গীতশিল্পী-পারভেজ সাজ্জাদ, ঐশী, সন্দীপন, লায়লা, রাজীব, পুলক এবং সাব্বির। সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন, সঙ্গীতশিল্পী এস.আই.টুটুল ও সংগীত পরিচালক ইবরার টিপুর সাথে সঙ্গীতশিল্পী সালমা এবং লিজার কন্ঠে বাংলার গায়েন এর থিম সং পরিবেশনার মাধ্যমে শুরু হয় গ্র্যান্ড-ফিনালের জমাকালো আয়োজন। সমাপ্তি হয় ফলাফল ঘোষনা এবং আতশবাজির মধ্য দিয়ে।
উপস্থিত ছিলেন- বেঙ্গল সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব ফিরোজ আলম টিপু, আরটিভি অনুষ্ঠান প্রধান দেওয়ান শামসুর রকিব, প্রাশাসন বিভাগের উপ-প্রধান মোহাম্মদ মাসুদুল আমিন, উপ-বার্তা প্রধান মামুনুর রহমান খান, হেড অব মার্কেটিং সুদেব চন্দ্র ঘোষ প্রমুখ। মাসুদুজ্জামান সোহাগের প্রযোজনায় পুরো আয়োজনে উপস্থাপনায় ছিলেন শান্তা জাহান। আয়োজনটির টাইটেল স্পন্সর- বেঙ্গল সিমেন্ট। ড্রেস পার্টনার- ফ্যাশন হাউজ আনজারা, আর্ট, ঙ২ এবং রঙ বাংলাদেশ। মেকআপ পার্টনার- রেড বিউটি পার্লার এন্ড সেলুন। ম্যাগাজিন পার্টনার হিসেবে ছিলো লুক@মি।