মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আমৃত্যু যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ফয়জুল¬াহকে ময়মনসিংহের পাগলা থানা পুলিশ রাজধানী ঢাকার শাহবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে।
ময়মনসিংহের পাগলা থানার ওসি রাশেদুজ্জামান জানান, গ্রেফতারকৃত ফয়জুল্লাহকে শুক্রবার বিকালে কড়া পুলিশ পাহাড়ায় ময়মনসিংহের আদালতে হাজির করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরন করেছে।
যুদ্ধাপরাধী ফয়জুল্লাহকে আদালতে হাজির করার সময় জেলা আওয়ামীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা ফয়জুল্লাহর ফাসিঁর দাবিতে আদালতে বিক্ষোভ করে।
স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় আমৃত্যু যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ফয়জুল্লাহ ময়মনসিংহের গফরগাঁও ও ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মা-বোনদের ইজ্জত লুট, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যা কান্ড ঘটিয়েছে, মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার দায়ে বৃহস্পতিবার আন্তজাতিক আদালত আমৃত্যু যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন। গ্রেফতারকৃত যুদ্ধাপরাধী ফয়জুল্লাহ’র বাড়ি ময়মনসিংহের পাগলা থানার সাধুয়া গ্রামে।
ফাইজুল্লাহ গফরগাঁও উপজেলার সাধুয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ খানের ছেলে। থানা পুলিশ, এলাকাবাসী ও মামলার বাদীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে ফাইজুল্লাহর পিতা মজিদ খান ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান নেজামে ইসলামি পাটির সক্রিয় কর্মী হিসেবে স্থানীয় রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিল। ফাইজুল্লাহ পিতার আর্দশ অনুসরন করে নেজামে ইসলামীর কর্মী হিসেবে ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ভূমিকায় লিপ্ত হয়।
সে তার সশস্ত্র রাজাকার সহযোগি আব্দুর রাজ্জাক, সামসুজ্জামান (কালাম), আব্দুল খালেক, বাদশা, খলিলুর রহমান মীর গংদের নেতৃত্ব দিয়ে গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারি, টাংগাব, দত্তেরবাজার ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, অপহরন, আটক ,নির্যাতন, হত্যাসহ বিভিন্ন
মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটেনে অংশগ্রহন করে। ১৯৭২ ও ১৯৭৩ সালে এ সব ঘটনায় ফাইজুল্লাহ এর বিরুদ্ধে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে গফরগাঁও থানায় ৮ টি মামলা দায়ের করা হয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৫ অক্টোবর ফাইজুল্লাহকে এসব মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর ফাইজুল্লাহ ঢাকার মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকায় বসবাস শুরু করে এবং সাপ্তাহিক জয়যাত্রা, দৈনিক নয়াদিগন্ত ও দৈনিক শক্তি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করে। ২০১৪ সালে সাধুয়া গ্রামের মরহুম আফাজ উদ্দিন বাদী হয়ে তার নামে মানবতাবিরোধী মামলা দায়ের করে।
এর পর সে আত্মগোপনে চলে যায়। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর সহযোগি, শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আল শামসদের প্রাপ্ত তালিকায় নিগুয়ারি ইউনিয়নের তালিকায় ফাইজুল্লাহ’র নাম ২৫৪ নং ক্রমিকে ছিল।
এদিকে যুদ্ধাপরাধি রাজাকার ফইজুল্লাহ গ্রেফতার ও আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে রায়ে একাত্তরের রাজাকারদের শাস্তি হওয়ায় নিগুয়ারি ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাদের রায়ে শুক্রবার বাদ জুম্মা সাধুয়া গ্রামে শুকরিয়া মিলাদ আয়োজন ও মিষ্টি বিতরন করা হয়।