রাজশাহীর তানোরে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার সকালের দিকে উপজেলার তালন্দ ইউপির মোহরগ্রামের বৈরাগীপাড়ায় ঘটে ঘটনাটি। এঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদি হয়ে শনিবার রাতে নির্যাতন কারী একই পাড়ার পরিমলকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার ভিত্তিতে গতকাল রোববার দুপুরের আগে পরিমলকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন থানার ওসি রাকিবুল হাসান।
ফলে পরিমলকে আটকের ঘটনায় পাড়ায় যেমন নেমে এসেছে সস্তি, তেমনি ভাবে তাঁর জোরালো শাস্তির দাবি করেছেন প্রতিবেশিরা। কারন পরিমল একের পর এক এমন ঘটনা ঘটিয়ে টাকার জোরে পার পেয়ে যান বলেও একাধিক প্রতিবেশিরা জানান।
জানা গেছে গত শনিবার উপজেলার মোহরগ্রামের বৈরাগীপাড়ার দিকে বাসিন্দা ৬ষ্ঠ শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্রীর মা বাড়ির পার্শের জমিতে যায় ঘাস কাটতে। এসময় বাড়ি ফাকা পেয়ে লম্পট প্রতিবেশি পরিমল বাড়িতে প্রবেশ করে ওই ছাত্রীকে নির্যাতন করা শুরু করেন। এসময় ওই ছাত্রীর মা এবং নানি ঘাস নিয়ে বাড়িতে এসে দেখে দরজা বন্ধ। মেয়েকে দরজা খুলতে বললে কোন ভাবেই পরিমল দরজা খুলতে দেয়নি। পরে প্রতিবেশিদের চাপে দরজা খুলে দেয়। সাথে সাথে ওই ছাত্রী সব ঘটনা খুলে বলে তাঁর মা ও নানিকে। মেয়ের মুখে এমন নির্যাতনের ঘটনা শুনে ওই সময় থানায় আসতে চাই । কিন্তু গ্রামের লোকজন আপোষ মিমাংসার কথা বলে বিকেল ৩টা পর্যন্ত থামতে বলেন। সাড়ে তিনটার দিকে বসে সালিশ বিচার। কিন্তু সেই আধিপত্যের বিচার মানতে পারেনি ওই ছাত্রীর পরিবার।ওই দিন সন্ধ্যার পরে থানায় এসে নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
ওই ছাত্রীর মা নানিসহ একাধিক প্রতিবেশিরা জানান পরিমল এর আগে ভাবির সাথে ভাতিজির সাথে অনৈতিক ঘটনা ঘটিয়ে জরিমানা দিয়ে পার পেয়ে যান। আমরা শুধু গ্রামের কিছু ব্যাক্তির কথায় বিকেল তিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করব। দেখি তাঁরা কি করে দিচ্ছে। নইলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে থানায় যাব। কারন পরিমলের স্ত্রী সন্তান থাকার পরও কেন এসব ঘটনা ঘটাবে। এর চরম শাস্তি হওয়া দরকার। আমাদের হিন্দু সমাজে মেয়ের গায়ে এরকম দাগ লাগলে বিবাহ দেয়া খুব সমস্যা হয়। যাতে আর কোন মেয়ে পরিমলের দ্বারা নির্যাতিত না হয়।
পরিমল এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান আমাকে ফাঁসাতে মিথ্যে অপবাদ দেয়া হয়েছে। এঘটনা নিয়ে বিকেল তিনটার দিকে বসার কথা রয়েছে। আপনি কোন ঘটনা ঘটান নি তাহলে কেন বিচার বসবে প্রশ্ন করা হলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন গ্রামের মোড়লরা বলেছেন এজন্য বসা হবে। কারা বসার কথা বলেছে জানতে চাইলে তিনি জানান রইছ উদ্দিন বাচ্চু, জালাল ও কবিরাজ গুফোর এসেছিল।
থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন ওই মেয়ের মা বাদি হয়ে নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিমলকে রোববার সকালের দিকে গ্রেফতার করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।