করোনা ভাইরাস সংক্রমন ঠেকাতেগোটা দেশবাসি যখন ঘরে অবস্থান করছেন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির, তখন বিকাশ এর মত মোবাইল ফিনানসিয়াল সার্ভিস গুলো নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে হয়ে উঠেছে বিপদের বন্ধু হিসাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক কোন চার্জ ছাড়াই লেনদেন করার সুজুগ করে দেয়ায় এবং লেনদেন এর সীমা বাড়িয়ে দেয়ায় তারা ঘরে বসেই বিকাশের মাধ্যমে কিনতে পারছেন খাদ্য সামগ্রী সহ প্রয়োজনীয় সবকিছু।
ঢাকা শহরের ৩০০ বাড়ির উপর পরিচালিত বিজেএফসিআই এর এক জরিপ এ বলা হয়, কোয়ারেনটাইনেথাকা নিম্ন আয়ের লোকজন এর খাদ্য মজুত না থাকায় তাদের প্রতিদিন খাদ্য সামগ্রী কিনতে হয়। তা ছাড়া মহিলা এবং বয়স্ক লোকদের পক্ষে বাজারে যাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এ সময় তারা টেলিফোন অর্ডার দিয়ে ডেলিভারি সার্ভিস গুলোর মাধ্যমে প্রয়োজন মিটাতে পারচেন। এবং তা সম্ভব হচ্ছে বিকাশ এর মোবাইল লেনদেন সুবিধা থাকার কারনে।
জরিপে আংশগ্রহনকারী শতকরা ৯০ ভাগ বলেছেন, বিকাশ এর মাধ্যমে সরাসরি টাকা দিয়ে তারা সহজেই বিভিন্ন দোকান, রেস্টুরেন্ট ও বাজার থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছেন। দিতে পারছেন বিভিন্ন সারভিচেসের বকেয়া বিল। ব্যাংক এ যাওয়া অনেকের পখখেই সম্ভব না হওয়ায় বিকাশের মাধমে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারছেন।
“আমার স্বামী নেই, তাই ঘরের সব কাজ আমাকেই করতে হয়। প্রথম কয়েকদিন বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলাম। আমার পাশের বাসার মুরুব্বি বিকাশের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টাকা ট্রান্সফার করে সহজ এর মাধ্যমে অনেক বাজার করলেন ধরে বসেই। এরপর শুরু করলাম আমি এবং আমার দেখা দেখি আমার ভাই ও বোনদের পরিবার। বিকাশ এ লেনদেন মানে ঝুকিহীন লেনদেন এবং ঘরে বসে বাজার করা”, বললেন শান্তিনগর এলাকার মিসেস নাজনীন আখতার।
বিকাশ সূত্রে জানা যায়, ২৬ মার্চ করোনার বিশেষ পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর ২৬ ও ২৭ মার্চ এই দুই দিনে গ্রাহক বিকাশেই ১কোটি দশ লাখের বেশি লেনদেন করেছেন। কোথাও না গিয়ে ঘরে বসে বিদ্যুৎ, গ্যাস এর বিল প্রদান, মোবাইল রিচার্জ, সেন্ডমানি, অ্যাডমানি, পেমেন্ট এর মত সেবাগুলো জরুরী এই অবস্থায় গ্রাহকের জন্য বাড়তি সুবিধা বয়ে এনেছে।
গত ২৪ মার্চ তারিখে একদিনেই সারাদেশের সবগুলো বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানীর প্রায় দেড় লাখ বিদ্যুৎ বিল বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করেছেন গ্রাহক।
“ অর্থনীতি যখন স্থবির, বিকাশ এর মত মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসগুলো তখন কিছুটা হলেও বাজার চাঙ্গা রেখেছে। আমাদের এ দিকটায় আরও নজর দিতে হবে সাধারণ মানুষের কথা ভেবে”, বললেন একটি বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন ব্যাংক যা করতে পারছেনা, বিকাশ তা করতে পারছে অনায়েসে।
জনাসমাগম এড়িয়ে চলা, ঘরে থাকা সহ নানান কর্মকান্ডের মাধ্যমে দেশবাসী করোনা প্রতিরোধে তৎপর। ডিজিটাল লেনদেন তাদের সেইসব পদক্ষেপ আরো সুবিধাজনক এবং সহজ করেছে। গ্রাহকরা জরুরী পরিস্থিতিতে ডিজিটাল লেনদেনের সুবিধার কারণেই আরো বেশি এই লেনদেনে অভ্যস্ত হচ্ছেন।
বিকাশের একজন কর্মকর্তা বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমন ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত বিশেষ পরিস্থিতে সাধারণ মানুষ জরুরী লেনদেনে বিকাশ এর মত মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসে আস্থা রাখছেন মুলতঃ ৩ টি কারনে। প্রথমতঃ এই বিশেষ সময়ে আমরা ১০০০ টাকা পর্যন্ত লেনদেন এ কোন ফি নিচ্চিনা। এতে ভাইরাস সংক্রমনের কোন সুজুগ নেই। এবং গ্রাহক যে কোন সময় তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফার করে তা খরচ করতে পারছেন। এবং সর্বোপরি, দেশের বেশিরভাগ সার্ভিস প্রতিষ্টান বিকাশের সাথে আস্থার সাথে কাজ করছে।
বিকাশ এই বিশেষ সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা প্রতিপালনেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও ঔষধ ক্রয়ের ক্ষেত্রে nirdrishto onkker পি-টু-পি লেনদেনে কোন চার্জ নিচ্ছে না বিকাশ এবং মাসিক লেনদেন সীমা ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২লাখ টাকা করা হয়েছে।
কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা প্রতিপালনের পাশাপাশি জনস্বার্থে আরো পদক্ষেপ নিয়েছে বিকাশ। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন করোনা পরিস্থিতিতে নানান রকম কার্যক্রম অব্যহত রেখেছে। বিশেষ এই মুহুর্তে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক সহায়তা সহজ করতে বিকাশ অ্যাপের সাজেশন বক্সে সরাসরি যুক্ত হয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের লোগো। এখন দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে খুব সহজেই এই প্রতিষ্ঠানটিকে আর্থিক সহায়তা দিতে পারছেন গ্রাহক।
নির্দেশনা অনুসারে বিকাশ গ্রাহকরা এই জরুরী সময়ে যেকোন ধরনের সমস্যা সমাধানে যেন কাস্টমার সার্ভিস সেবা পান এবং লেনদেন অব্যাহত রাখতে পারেন তাও নিশ্চিত করা হয়েছে। ১৬২৪৭ নম্বর, বিকাশের ফেসবুক পেজ, লাইভ চ্যাট এবং ইমেইলের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক ভাবে গ্রাহকদের সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
কর্মকর্তা বলেন, সকল বিকাশ সেবা নিরবিছিন্ন, নির্বিঘ্ন এবং নিরাপদ রাখতে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন বিকাশের shokol কর্মকর্তার o প্রযুক্তি টিম। এজেন্ট পয়েন্টগুলোতে নগদ টাকা এবং ডিজিটাল মানি সরবরাহও নিশ্চিত করা হয়েছে।
করোনা প্রতিরোধে সর্তকর্তামূলক ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে বিকাশ অ্যাপে এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তথ্য প্রচার করছে বিকাশ।