সিদ্ধিরগঞ্জে কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত ১০’বছরের শিশু সোহানের পরিবারের আরও ২’জন সদস্য আক্রান্ত হয়েছে। ৫’সদস্য’র এ পরিবারের বাকি দুই সদস্যের কোভিড-১৯ নেগেটিভ আসলেও শারীরিক অসুস্থতা বেশি হওয়ায় সোহানের বাবাকে ইতোমধ্যেই আজ শুক্রবার (১০’এপ্রিল) দুপুর ১’টায় কাঁচপুরের সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে আক্রান্ত সোহান সুস্থ্য আছে।
আক্রান্তের পরিবারের বড় ছেলে তন্ময় ইসলাম হৃদয় জানান, গত ৩ এপ্রিল আমার ছোট ভাই সোহানকে টেস্টের জন্য খানপুর হাসপাতাল থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে গত ৬’তারিখ রিপোর্ট আসে সোহান কোভিড-১৯ আক্রান্ত । পরে ৭’তারিখ পরিবারের বাকি ৪’জন সদস্যও অসুস্থতা অনুভব করলে সবারই টেস্ট করতে অনুরোধ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে ৮’এপ্রিল নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়।
৯’তারিখ তারা জানায় আমার মা আমেনা বেগম ও আমার মেঝ ভাই রিফাতের কোভিড-১৯ পজিটিভ এসেছে। আমার ও আমার বাবা জালাল আহমেদের নেগেটিভ এসেছে। তিনি আরও জানান, প্রথম থেকেই আমরা নিয়ম মেনে আমাদের ছোট ভাইকে আলাদা রাখছি। এখনো সে আলাদা। এর মধ্যে আমার বাবা শরীরিক অবস্থার অবনতি হলে আমরা বার বার চেষ্টা করি আইইডিসিআর এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের। কিন্তু কোথাও কথা বলতে পারছিলাম না। তারা ফোন ধরছিলেন না, আবার কেউ কেউ কেটে দিচ্ছিলেন।
রাত থেকে চেষ্টার পর বাবার শরীর বেশি খারাপ হয়ে গেলে দুপুরের দিকে তাদের অ্যাম্বুলেন্স এসে বাবাকে সাজেদা ফাউন্ডেশনে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর তার কাছে ভয়ে ডাক্তার কিংবা নার্স কেউই আসছিল না এবং কোনো খাবারও দিচ্ছেন না। তন্ময় ইসলাম হৃদয় আরো জানান, তাদের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক চিশতিয়া বেকারির সাথে অবস্থিত বাড়িটিতে বর্তমানে প্রধান ফটকে যেমন তালা দেয়া তেমনি তাদের ঘরের বাইরে থেকেও তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছে।
বিশেষ প্রয়োজন বা শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতালে যাওয়ারও উপায় নেই এখন আমাদের ঘরে ওষুধ ও খাবারের প্রয়োজন পড়লে সেটি আনানোর জন্যও কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না। স্থানীয় কাউন্সিলর এখন লোকের কথা বললেও তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সকালে ওষুধের কথা বললে রাতে দিয়ে যান। আর কোনো খাবারের কথা বললেই তিনি জানান, এখানে পাওয়া যাচ্ছে না।
এমন অবস্থায় আমরা খাদ্য সংকটেও রয়েছি পাশাপাশি ওষুধেরও। প্রধান ফটকে তালা দেয়ার পরও ঘরের বাইরে তালা দেয়ায় আরও ভয়ে রয়েছি যে বিশেষ বিপদ হলে তো আমরা ঘর থেকেও বের হতে পারবো না। যদিও আমরা সকল নির্দেশনা মেনে এমনিতেই ঘরেই অবস্থান করছি। তাই এতটা অমানবিক না হতে আমরা সকলের কাছে অনুরোধ করছি। বর্তমানে প্রথম আক্রান্ত আমার ছোট ভাই সোহান শারীরিক ভাবে ভাল আছে। বর্তমানে আমার মা ও বাবাসহ এক ভাই অসুস্থ্য রয়েছে।
আমি মোটা মোটি সুস্থ্য আছি। দুঃখের বিষয় চিকিৎসক আমাদের দুধ, ডিম ও মালটা খেতে বলেছে। কিন্তু আমরা কোথায় চেয়ে তা পাচ্ছিনা। নিয়মিত ঔষধও পাচ্ছি না। আমরা সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ফোন দিলে স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে যোগাযোগ করতে বলে। স্থানীয় কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন তার সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করলেও আমাদের চাহিদা পুরন হচ্ছে না। রান্না করার মত আমাদের পরিবারে কেহ নেই। আমার মা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে শারীরিক ভাবে অসুস্থ্য আছে।