কুড়িগ্রামের রাজারহাটে কোরআনের হাফেজ স্বামী ধারালো ছুরি দিয়ে তার স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেছে ! লোমহর্ষক এ ঘটনাটি ঘটেছে, গতরাতে উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের নীলেরকুটি চওড়া গ্রামে ! আজ সকাল ১০ টার দিকে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ঘাতক স্বামী হাফেজ হাবিবুর রহমানকে নাজিমখাঁ বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ! এলাকাবাসীর একাধিক সূত্র জানায়, ওই গ্রামের বাশারত উল্লার কন্যা বিউটি বেগম (২৫) এর সাথে গত ৬ বছর আগে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের মানাবাড়ি কালিরহাট গ্রামের আঃ মতিনের কোরআন এর হাফেজ পুত্র হাবিবুর রহমান (২৮) এর বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে ওই হাফেজ তার স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিলো বলে সূত্রগুলো জানায় । এরই মধ্যে তাদের কোলে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। দিন দিন স্বামীর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যাওয়ায় বেশ কয়েকবার শালিশ বৈঠকও হয়েছিল। গত ১৫ রমজান হাফেজ হাবিবুরের নির্যাতনে বিউটি বেগম আহত হলে বাবার বাড়ির লোকজন গিয়ে তাকে নিয়ে আসে।
গত ২রা জুন মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বিউটি বেগম ও তার ছোট বোন বিথী বেগম (১৩) একই ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত অনুমান ১১টার দিকে বিথী বেগম ঘুম থেকে জেগে বিউটি বেগমকে পাশে শুয়ে থাকতে না দেখে খোঁজাখুুঁজি শুরু করে। পরে বাড়ীর লোকজন পার্শ্ববর্তী একটি ভূট্টা ক্ষেতে গোঙ্গানির শব্দ শুনে ছুটে যায়। সেখানে বাড়ীর লোকজন বিউটি বেগমকে গলাকাটা রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাকে দ্রুত রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
মৃতের ছোট বোন বীথির ধারনা, দুবোন ঘুমানোর পর পরই বিউটির স্বামী হাবিবুর টিনের ঘরের বেড়া কেটে তাদের ঘরে প্রবেশ করে ! এরপর ঘরে ঢুকেই বিদ্যুতের লাইন কেটে দিয়ে বিউটির মুখ বেধে বাইরে নিয়ে গিয়ে ভুট্টা ক্ষেতে ছুরি দিয়ে গলা কেটে দেয়। ব্যাক্তিগত এবং পারিবারিক কলহের জেরে হাবিবুরই এ হত্যাকান্ড করেছে বলে তারা মনে করছেন।
খবর পেয়ে আজ ৩রা জুন বুধবার রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজু সরকারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করেন।
অন্যদিকে, সকাল ১০ ঘটিকার দিকে পুলিশ ঘাতক হাফেজ হাবিবুর রহমানকে নাজিম খান এলাকা থেকে আটক করেছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজু সরকার জানান, থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে ! আসামীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। মোটিভ উদ্ধারে পুলিশী তদন্ত অব্যাহত রয়েছে!