করোনা ভাইরাসের সংক্রমনরোধে বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ। আর এ বন্ধে ফুরফুরা মেজাজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দিনাজপুরের মিনি চিরিয়াখানায় চিত্রা হরিনের পাল। কোলাহল নেই, নেই দর্শনাথীদের বিরক্ত এমন পরিবেশ থেকে মুক্ত এই হরিনের পাল তাদের ইচ্ছামত বনজঙ্গলের মত ঘুরে বেড়াচ্ছে।
মধ্যযুগের বিখ্যাত সামন্ত রাজার অমর কীর্তি দিনাজপুরের রামসাগর, যা সারা বাংলার এক সৌন্দর্য মন্ডিত ঐতিহাসিক দীঘি। প্রাকৃতিক অপরূপ নয়নাভিরাম দীঘিটি পর্যটকদের মনকে ছুয়ে যায় ভাল লাগার পরশে। আরও বেশী পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ে এই রামসাগরের মিনি চিড়িয়াখানার মায়াবী চিত্রা হরিনগুলো। আর এই চিত্রা হরিনের সংসারে গত কয়েক মাসে এসেছে ৮টি নতুন অতিথি। এনিয়ে এখন মিনি চিরিয়াখানায় নতুন অতিথিসহ ৫৫টি চিত্রা হরিন।
চিত্রা হরিনগুলোর খাদ্যের জন্য সঠিক সময়ে খাদ্য বাজেট আসেনা। এতে একটু সমস্যা হয় যা স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা করা হয়। পরে বাজেট এলে তা সমন্বয় করা হয়। আবার চাহিদার তুলনায় খাবার বরাদ্দ পাওয়া যায় না। এতে বিকল্পভাবে খাবারের ব্যবস্থা করতে হয় স্থানীয়ভাবে। চিত্রা হরিনগুলোকে ছোলা, নেপিয়ার ঘাস, গমের ভূসি, ভূট্টা ভাঙ্গা, চক্কর, লতাপাতা ইত্যাদি খাবার দেয়া হয়। তবে রামসাগর দিঘিতে শাপলা চাষ করা গেলেই খাবারের চাহিদা পুরন করা সম্ভব বলে জানান ফরেস্টার ফসিউল আলম।
চিত্রা হরিণের প্রিয় খাবার শাপলা পাতা। বরাদ্দ কম এলেও রামসাগর দিঘিতে শাপলা চাষ করতে পারলে হরিণের খাদ্য চাহিদা কিছুটা মেটানো সম্ভব হবে। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে দিঘিতে মাছ শিকার, ইঞ্জিন নৌকা চালানোর কারণে শাপলা চাষ বন্ধ হয়ে যায়। আবার রামসাগরের জলরাশির দেখভাল করে জেলা প্রশাসন।
দিনাজপুর রামসাগর জাতীয় উদ্যানের ফরেস্টার ফসিউল আলম জানান, রামসাগর জাতীয় উদ্যানের চিড়িয়াখানায় সরকারিভাবে ৬টি চিত্রা হরিণ আনা হয়। হরিণগুলো দ্রুত বংশবিস্তারে বাড়তে বাড়তে এদের সংখ্যা হয় ৫৪টি। গত বছরের আগস্টে ৭টি চিত্রা হরিন সিলেট ইকো পার্কে নেয়া হয়। এদিকে কয়েক মাসে ৮টি মা হরিনের নতুন অতিথি এসেছে। এই নিয়ে বাচ্চাসহ এখন ৫৫টিতে দাড়িয়েছে।
তিনি আরও জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে এসব চিত্রা হরিনসহ মিনি চিরিয়াখানার বিভিন্ন জীবজন্তুর জন্য খাবার আগের যোগার করে রাখতে হচ্ছে। গ্রীষ্মকালে এই মিনি চিরিয়াখানায় ওষুধ, খাবারসহ এক লাখ টাকার অধিক ব্যয় হয় এবং শীতকালে আরও বেশী ব্যয় হয় বলে জানান তিনি।