রাজশাহীর তানোরে ছুটির দিন শুক্রবার বৃষ্টির মধ্যেই নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করে প্রাথমিক স্কুলের সীমানা প্রাচীর ও গেট ঢালায়ের কাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছুটির দিনে কোন কর্মকর্তা ছাড়াই এবং বৃষ্টির মধ্যে কাজ করার কারনে এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া। উপজেলার প্রানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। ফলে ছুটির দিনে এবং বৃষ্টির মধ্যে এমন দায়সারা কাজ করায় টিকসই নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
এর আগেও নিম্মমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় এলাকাবাসী বাধা দিলেও কোন লাভ হয়নি। ইচ্ছেমত ঠিকাদার ও এলজিইডির কতিপয় কর্তাবাবুদের যোগসাজসে এমন কাজ হচ্ছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, তানোর টু মুণ্ডুমালা রাস্তার উত্তরে এবং প্রানপুর পাঠাকাটা মোড়ে অবস্থিত প্রানপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। চলতি অর্থ বছরের শেষে জুনের প্রথম থেকে স্কুলের সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। অবশ্য ঠিকাদার কামারগাঁ ইউপি এলাকার আফাজ উদ্দিন প্রথম থেকে নিম্মমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার কারনে প্রানপুর গ্রামের রবিউল নামের স্থানীয় বাসিন্দা শিডিউল অনুযায়ী কাজ করতে বলেন । এঘটনায় দু দিন মত কাজ বন্ধও ছিল। পরবর্তীতে পুনরায় একই নিয়মে কাজ শুরু।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সীমানা প্রাচীর ও গেট ঢালায়ের কাজ করতে দেখা যায়। সেখানে সকালের দিকে এলজিইডির মাস্টার রোল কর্মচারী রানার বাইক দেখা গেলেও তাকে দেখা যায়নি।তখন ছিল মেঘলা আকাশ। শুরু হয় ভারি বর্ষণ। এর মধ্যেই চালিয়ে যায় কাজ। পানি একটু ধীর গতিতে হলে স্কুলের গেট ঢালায় দেয়া শুরু হয়। সেখানে ছিলেন কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার আফাজের ছোট ভাই মেরাজ উদ্দিন। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় কোন কর্মকর্তা নাই এবং বৃষ্টির মধ্যে কিভাবে ঢালায় দেয়া হচ্ছে, তিনি জানান ঢালায়ের জন্য সব কিছু তৈরি করা ছিল বৃষ্টি হলে তো ঢালায়ের কাজ বন্ধ থাকবেনা। বৃষ্টি হলেও ভালোমানের ঢালাই হচ্ছে ।
স্থানিয়রা জানান, শুক্রবার ছুটির দিন আবার বৃষ্টির মধ্যে কাজ করা হচ্ছে। কোন কর্মকর্তা না থাকার কারনে একেবারেই নিম্মমানের কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু কিছুই বলার নেই, ইচ্ছেমত কাজ করলেও দেখারও কেউ নেই।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, স্কুলের সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণের জন্য সাড়ে ৬ লাখ টাকার দরপত্র আহবান করা হয়। দরপত্রে কাজটি পান উপজেলার কামারগাঁ বাজার এলাকার আফাজ উদ্দিন। তবে তিনি কাজ দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন তাঁর ছোট ভাই মেরাজ উদ্দিন কে।এমনকি
৪ সুতের রোডের পরিবর্তে ৩ সুত রোড কেন ব্যবহার করা হয়েছে এবং নিম্মমানের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে ঢালায়ের কাজে। কাজটি মান্দা উপজেলার দেলুয়াবাড়ি এলাকার রাজমিস্ত্রি¿ আনোয়ার ১৫% কমিশনে কাজ করছেন । কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান এখানে আমার কিছুই করনীয় নাই ঠিকাদার ও প্রকৌশলীরা যে ভাবে বলছে সে ভাবে কাজ করা হ”েছ।
ঠিকাদার আফাজ জানান কাজে একটু নয়ছয় হবেই। না হলে পিচি কমিশন কিভাবে দেয়া হবে। এসব না দিলে তো বিলও পাশ হবেনা। প্রতিটি কাজেই অনিয়ম আছে ।আর এসব নিম্মমানের কাজের বিল সঠিক ভাবে তৈরি করতে সদ্য অবশরপ্রাপ্ত আজগর আলী ব্যাকপ পারদর্শী বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। যার ফলে তিনি অবশরে গিয়েও দেদারসে অফিসে বসে নানা ধরনের অনিয়মের বিল সঠিকভাবে তৈরি করে দিচ্ছেন।
তিনি টানা প্রায় এক যুগ ধরে এলজিইডির হিসাব রক্ষক ছিলেন, পাশাপাশি নামা বে নামে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন যা তদন্ত করলেই সব কিছু বেরিয়ে আসবে। উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনের ব্যাক্তিগত ০১৭১৯-১০৬৩২৮ এই মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হলে রিসিভ করে এই প্রতিবেদকের পরিচয় জানার পর সংযোগ বি”িছন্ন করে দেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতোর সরকারি ০১৭৭৮-৮৮৯৯৯০ এই মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হলে রিসিভ না করে কেটে দেবার কারনে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।