ঢাকাবুধবার , ১৯ জুলাই ২০২৩

স্বাস্থ্য উন্নয়নে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণেন লক্ষ্যেহেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা জরুরী

জি-নিউজবিডি২৪ডেস্ক :
জুলাই ১৯, ২০২৩ ১:২৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!


সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যখাতের জন্য নির্ধারিত বাজেট গত দশ বছরে যে পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে এই ধারা অব্যাহত থাকলে অদূরভবিষ্যতে তা রাষ্ট্রের জন্য বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। শুধুমাত্র রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমেই সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যয় কমানোর পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব। আর এর জন্য প্রয়োজন একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। আজ ১৮ জুলাই ২০২৩, মঙ্গলবার, সকাল ১১ টায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর উদ্যোগে শাহবাগ, জাতীয় জাদুঘরের সামনে “স্বাস্থ্য উন্নয়নে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন চাই” শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর বিভাগীয় প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমানের সভাপতিত্বে ও সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা মো: মিঠুনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য। সভায় অতিথি আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন পাবলিক হেল্থ এক্সপার্ট জনাব আবু জামিল ফয়সাল, প্রত্যাশা মাদক বিরোধি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জনাব হেলাল আহমেদ, ব্যুরো অফ ইকোনমিক রিসার্চ এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এম এ মান্নান মনির এবং কচিকন্ঠ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জনাব এইচ এম নূরুল ইসলাম।

মিঠুন বৈদ্য তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের জনগণের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেলেও বার্ধক্যজনিত রোগসহ নানাবিধ অসংক্রামক রোগ যেমন- হৃদরোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে রাষ্ট্র বা জনগণের পক্ষে এই ব্যয়ভার বহন করা দিনদিন অসম্ভব হয়ে পড়ছে। “বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১” লক্ষ্য বাস্তবায়নে চিকিৎসা নয় বরং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নয়ন ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। এক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের উদ্যোগ স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।

জনাব আবু জামিল ফয়সাল তার বক্তব্যে বলেন, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে বাংলাদেশে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। রোগাক্রান্ত হওয়ার আগেই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, ব্যায়াম ও হাঁটা-চলা ও জীবনাচারের পরিবর্তনে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি সর্বসাধারনের কাছে এসকল সুবিধা পৌছে দিতে অবকাঠামোগত পরিবর্তন জরুরী। এছাড়া, স্বাস্থ্যকর খাবারের জোগান ও সহজলভ্যতা নিশ্চিতের পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের প্রচারণা ও বিজ্ঞাপনের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।

হামিদুল ইসলাম হিল্লোল বেেলন, একটি দেশের জনগণের সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। জনগণকে সুস্থ রাখতে হলে সুস্থ্য পরিবেশ তৈরী করা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি তামাকজাত দ্রব্য, আ্যালকোহল, কোমল পানীয়সহ সকল স্বাস্থ্যহানিকর পণ্যের উপর আরোপিত সারচার্জের অর্থে “হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন” প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

এম এ মান্নান মনির বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে “হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন” এর প্রয়োজনীয়তা, সুযোগ ও যথেষ্ট সম্ভবনা রয়েছে। তিনি দেশের সকল স্তরের মানুষের জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতে “হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন” প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, ইতিমধ্যে বিশ্বের ২৩টি দেশ “হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন” প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটি আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এবং নির্ধারিত ফান্ড দ্বারা পরিচালিত এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে। সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে গবেষণার আলোকে কর্মপন্থা নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এই প্রতিষ্ঠান। যা জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের পাশাপাশি রাষ্ট্রের চিকিৎসা ব্যয় কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে।

উক্ত কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করে বক্তব্য রাখেন নাটাব, দি ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ (আইডাব্লিউবি), ছায়াতল বাংলাদেশ, ফিমেল সাইকেলার্স অফ বাংলাদেশ, সূর্য শিশির রানার্স কমিউনিটি, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোস্যাইটি, কনফিডেন্ট মেমরিয়াল হাইস্কুল, বিআরডিএস, আইডিএফ, ডাস,অপ্সরী ওমেন ডেভলপমেন্ট অরগানাইজেশন, দিশারী মহিলা কল্যান সমিতির প্রতিনিধীবৃন্দ।