ঢাকা ০৭:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ৮ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

অক্সিজেন সংকটে খুলনায় করোনা রোগীর চিকিৎসায় ভোগান্তি

অক্সিজেন সংকটে খুলনায় করোনা রোগীর চিকিৎসায় ভোগান্তি বাড়ছে। খুলনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ১০টি আইসিইউ বেডের সব কয়টিতে মুমূর্ষু রোগী ভর্তি রয়েছে। এ অবস্থায় নতুন কাউকে সেখানে ভর্তির সুযোগ নেই। এদিকে লিক্যুইড অক্সিজেন প্লান্ট না থাকায় রোগীকে ওয়ার্ডে রেখে অক্সিজেন সরবরাহে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। সেই সাথে মুমূর্ষু রোগীর সেবায় আইসিইউ’র পরিপূরক হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলাও চালু করা যায়নি।

খুলনা করোনা চিকিৎসায় সমন্বয়ক ডা. মেহেদী নেওয়াজ এই প্রতিবেদককে জানান, করোনা চিকিৎসায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরকারিভাবে লিক্যুইড অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির কথা রয়েছে। তবে ভুলক্রমে তা’ আবু নাসের হাসপাতালের নামে বরাদ্দ হয়। মন্ত্রনালয়ের সাথে যোগাযোগ করে তা’ অবশেষে সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু কবে নাগাদ প্লান্ট তৈরির কাজ শুরু হবে জানা যায়নি।

তিনি বলেন, মুমূর্ষু রোগীর জন্য হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা প্রয়োজন হলেও সেন্ট্রাল অক্সিজেন না থাকলে তা’ চালু করা যাবে না। এদিকে অতিরিক্ত চাপ সামলাতে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ৪২ শয্যার করোনা ইউনিট চালু করা হচ্ছে। সেখানে করোনা চিকিৎসায় অক্সিজেন প্লান্ট চালুর কথা জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ।

তিনি বলেন, জেনালে হাসপাতালে অবকাঠামো নির্মান ও অক্সিজেন প্লান্ট চালু করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী দেড় মাসের মধ্যে তা’ চালু করা যাবে। তবে জরুরি মুহূর্তে খুলনার বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আদ-দ্বীন হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসায় শয্যা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। এসব স্থানে রোগীকে প্রয়োজনে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া যাবে।

এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় লিক্যুইড অক্সিজেন সরবরাহ থাকলেও সেখানে করোনা রোগী ভর্তি করা যাবে না। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সি মো. রেজা সেকেন্দার বলেন, হাসপাতালের অভ্যন্তরে করোনা রোগী ভর্তি করা হলে পুরো হাসপাতালই সংক্রমের ঝুকিতে পড়বে। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা গতকাল নিয়মিত বুলেটিনে বলেন, করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তদের চিকিৎসায় গত সপ্তাহে দেশের তিনটি হাসপাতালে লিকুইড (তরল) অক্সিজেন ট্যাঙ্ক ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন লাইন স্থাপন করা হয়েছে। হাসপাতালগুলো হলো- কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ চলতি সপ্তাহের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জের ৩০০ শয্যার হাসপাতাল এবং কুমিল¬া জেনারেল হাসপাতালে লিকুইড অক্সিজেন ট্যাঙ্ক ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন লাইন স্থাপন সম্পন্ন করবে। ইউনিসেফের সহযোগিতায় সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ এবং ন্যাশনাল ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স, ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার দেশের অন্য করোনা হাসপাতালগুলোতে লিকুইড অক্সিজেন ট্যাঙ্ক ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন লাইন স্থাপনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান নাসিমা সুলতানা।

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

আপলোডকারীর তথ্য

অক্সিজেন সংকটে খুলনায় করোনা রোগীর চিকিৎসায় ভোগান্তি

আপডেট সময় : ০৭:৪২:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুলাই ২০২০

অক্সিজেন সংকটে খুলনায় করোনা রোগীর চিকিৎসায় ভোগান্তি বাড়ছে। খুলনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ১০টি আইসিইউ বেডের সব কয়টিতে মুমূর্ষু রোগী ভর্তি রয়েছে। এ অবস্থায় নতুন কাউকে সেখানে ভর্তির সুযোগ নেই। এদিকে লিক্যুইড অক্সিজেন প্লান্ট না থাকায় রোগীকে ওয়ার্ডে রেখে অক্সিজেন সরবরাহে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। সেই সাথে মুমূর্ষু রোগীর সেবায় আইসিইউ’র পরিপূরক হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলাও চালু করা যায়নি।

খুলনা করোনা চিকিৎসায় সমন্বয়ক ডা. মেহেদী নেওয়াজ এই প্রতিবেদককে জানান, করোনা চিকিৎসায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরকারিভাবে লিক্যুইড অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির কথা রয়েছে। তবে ভুলক্রমে তা’ আবু নাসের হাসপাতালের নামে বরাদ্দ হয়। মন্ত্রনালয়ের সাথে যোগাযোগ করে তা’ অবশেষে সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু কবে নাগাদ প্লান্ট তৈরির কাজ শুরু হবে জানা যায়নি।

তিনি বলেন, মুমূর্ষু রোগীর জন্য হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা প্রয়োজন হলেও সেন্ট্রাল অক্সিজেন না থাকলে তা’ চালু করা যাবে না। এদিকে অতিরিক্ত চাপ সামলাতে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ৪২ শয্যার করোনা ইউনিট চালু করা হচ্ছে। সেখানে করোনা চিকিৎসায় অক্সিজেন প্লান্ট চালুর কথা জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ।

তিনি বলেন, জেনালে হাসপাতালে অবকাঠামো নির্মান ও অক্সিজেন প্লান্ট চালু করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী দেড় মাসের মধ্যে তা’ চালু করা যাবে। তবে জরুরি মুহূর্তে খুলনার বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আদ-দ্বীন হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসায় শয্যা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। এসব স্থানে রোগীকে প্রয়োজনে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া যাবে।

এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় লিক্যুইড অক্সিজেন সরবরাহ থাকলেও সেখানে করোনা রোগী ভর্তি করা যাবে না। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সি মো. রেজা সেকেন্দার বলেন, হাসপাতালের অভ্যন্তরে করোনা রোগী ভর্তি করা হলে পুরো হাসপাতালই সংক্রমের ঝুকিতে পড়বে। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা গতকাল নিয়মিত বুলেটিনে বলেন, করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তদের চিকিৎসায় গত সপ্তাহে দেশের তিনটি হাসপাতালে লিকুইড (তরল) অক্সিজেন ট্যাঙ্ক ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন লাইন স্থাপন করা হয়েছে। হাসপাতালগুলো হলো- কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ চলতি সপ্তাহের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জের ৩০০ শয্যার হাসপাতাল এবং কুমিল¬া জেনারেল হাসপাতালে লিকুইড অক্সিজেন ট্যাঙ্ক ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন লাইন স্থাপন সম্পন্ন করবে। ইউনিসেফের সহযোগিতায় সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ এবং ন্যাশনাল ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স, ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার দেশের অন্য করোনা হাসপাতালগুলোতে লিকুইড অক্সিজেন ট্যাঙ্ক ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন লাইন স্থাপনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান নাসিমা সুলতানা।