ঢাকা ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ১৮ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

অপরিকল্পিত বৈদ্যুতিক পিলার স্থাপন: বাগেরহাটে বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ ব্যহত

বাগেরহাটে পল্লী বিদ্যুতের খুটি ও বৈদ্যুতিক তারে ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ ব্যহত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চিঠি চালাচালি চললেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বাঁধ সংস্কার কাজ।  এদিকে বৃষ্টি মৌসুম শুরু হওয়ার আগে কাজ না হলে, আবারও বিগতদিনের মত ভোগান্তিতে পড়বেন এলাকার মানুষ। বেড়িবাঁধ কাজে সৃষ্টি হবে দীর্ঘসূত্রিতা। এসব বিষয় চিন্তা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বৈদ্যুতিক খুটি ও তার অপসারণ করে বাঁধ সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাযায়, ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার আগেই বাঁধের উপর ও বাঁধের পাশে থাকা বেশকিছু খুটি ও বৈদ্যুতিক তার অপসারণের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাটের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কুমার স্বস্তিক। চিঠির উত্তরে বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম প্রকৌশলী পারভেজ আলম পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানান, খুটি উত্তোলন, পুনঃস্থাপন ও অন্যান্য মালামাল বাবদ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ৯ লক্ষ ৬৫ হাজার ২৯৫ টাকা প্রদান করতে হবে। পরে ৭ ডিসেম্বর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কুমার স্বস্তিক আবারও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি প্রদান করেন। ওই চিঠিতে বলা হয় বৈদ্যুতিক খুটি ও তার অপসারণ এবং প্রতিস্থাপনের জন্য এই প্রকল্পে কোন টাকা বরাদ্দ নেই। এই খাতে টাকা বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দেওয়া হবে। বরাদ্দ পেলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনুকূলে টাকা জমা দেওয়া হবে। এছাড়া চিঠিতে আরও বলা হয়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অপরিকল্পিতভাবে বাঁধের উপর খুটি স্থাপন করেছে। যার কারণে বাঁধ নির্মান কাজে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নির্মাধীন বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক খুটি রয়েছে। সেই সাথে বেশকিছু বৈদ্যুতিক তার অনেক নিচু রয়েছে।

স্থানীয় চরগ্রামের আসলাম হোসেন বলেন, প্রায় ত্রিশ বছর ধরে আমাদের এই বেড়িবাঁধটি নষ্ট ছিল। যার কারণে জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করে আমাদের জীবন চলতে। বাঁধ নির্মান শুরু হওয়ায়, আমরা খুব খুশি হয়েছিলাম, কিন্তু এখন দেখছি নানা কারণে বার বার কাজ ব্যহত হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত সময়েল মধ্যে কাজ শেষ হোক।

গোলাম রসুল নামের এক ব্যক্তি বলেন, বেড়িবাঁধের কারণে আমাদের গাছ, ঘর বাড়ি ও জমি নষ্ট করছি। তারপরও পল্লী বিদ্যুতের খুটির কারণে কাজ ব্যহত হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত কাজ শেষ হোক।

বেমরতা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান মোহেন বলেন, বাগেরহাট -২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময় আমাদের অভিভাবক তার

বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপ-মহাব্যবস্থাপক (সদর-কারিগরি) মোল্লা আবু জিহাদ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের চাহিদা অনুযায়ী বৈদ্যুতিক খুটি ও লাইন স্থানান্তরের জন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডেকে ক্ষতিপূরণের জন্য চিঠি দিয়েছি। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সমাধান হলে খুটি ও লাইন স্থানান্তর করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, অপরিকল্পিতভাবে পল্লী বিদ্যুতের খুটি স্থাপন করায় বাঁধ সংস্কার কাজ ব্যহত হচ্ছে। এজন্য আমরা বারবার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দিয়েছি। তারপরও তারা কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। যার কারণে সময়মত কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। আমরা চাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক।  দীর্ঘদিন পরে গেল ২১ নভেম্বর বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেরিবাঁধ সংস্কার শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাট। নাজিরপুর উপ প্রকল্পের অধীনে ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাতছালা থেকে মুনিগঞ্জ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার করার কথা রয়েছে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

অপরিকল্পিত বৈদ্যুতিক পিলার স্থাপন: বাগেরহাটে বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ ব্যহত

আপডেট সময় : ০৬:২৪:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২

বাগেরহাটে পল্লী বিদ্যুতের খুটি ও বৈদ্যুতিক তারে ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ ব্যহত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চিঠি চালাচালি চললেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বাঁধ সংস্কার কাজ।  এদিকে বৃষ্টি মৌসুম শুরু হওয়ার আগে কাজ না হলে, আবারও বিগতদিনের মত ভোগান্তিতে পড়বেন এলাকার মানুষ। বেড়িবাঁধ কাজে সৃষ্টি হবে দীর্ঘসূত্রিতা। এসব বিষয় চিন্তা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বৈদ্যুতিক খুটি ও তার অপসারণ করে বাঁধ সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাযায়, ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার আগেই বাঁধের উপর ও বাঁধের পাশে থাকা বেশকিছু খুটি ও বৈদ্যুতিক তার অপসারণের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাটের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কুমার স্বস্তিক। চিঠির উত্তরে বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম প্রকৌশলী পারভেজ আলম পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানান, খুটি উত্তোলন, পুনঃস্থাপন ও অন্যান্য মালামাল বাবদ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ৯ লক্ষ ৬৫ হাজার ২৯৫ টাকা প্রদান করতে হবে। পরে ৭ ডিসেম্বর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কুমার স্বস্তিক আবারও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি প্রদান করেন। ওই চিঠিতে বলা হয় বৈদ্যুতিক খুটি ও তার অপসারণ এবং প্রতিস্থাপনের জন্য এই প্রকল্পে কোন টাকা বরাদ্দ নেই। এই খাতে টাকা বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দেওয়া হবে। বরাদ্দ পেলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনুকূলে টাকা জমা দেওয়া হবে। এছাড়া চিঠিতে আরও বলা হয়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অপরিকল্পিতভাবে বাঁধের উপর খুটি স্থাপন করেছে। যার কারণে বাঁধ নির্মান কাজে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নির্মাধীন বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক খুটি রয়েছে। সেই সাথে বেশকিছু বৈদ্যুতিক তার অনেক নিচু রয়েছে।

স্থানীয় চরগ্রামের আসলাম হোসেন বলেন, প্রায় ত্রিশ বছর ধরে আমাদের এই বেড়িবাঁধটি নষ্ট ছিল। যার কারণে জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করে আমাদের জীবন চলতে। বাঁধ নির্মান শুরু হওয়ায়, আমরা খুব খুশি হয়েছিলাম, কিন্তু এখন দেখছি নানা কারণে বার বার কাজ ব্যহত হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত সময়েল মধ্যে কাজ শেষ হোক।

গোলাম রসুল নামের এক ব্যক্তি বলেন, বেড়িবাঁধের কারণে আমাদের গাছ, ঘর বাড়ি ও জমি নষ্ট করছি। তারপরও পল্লী বিদ্যুতের খুটির কারণে কাজ ব্যহত হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত কাজ শেষ হোক।

বেমরতা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান মোহেন বলেন, বাগেরহাট -২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময় আমাদের অভিভাবক তার

বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপ-মহাব্যবস্থাপক (সদর-কারিগরি) মোল্লা আবু জিহাদ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের চাহিদা অনুযায়ী বৈদ্যুতিক খুটি ও লাইন স্থানান্তরের জন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডেকে ক্ষতিপূরণের জন্য চিঠি দিয়েছি। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সমাধান হলে খুটি ও লাইন স্থানান্তর করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, অপরিকল্পিতভাবে পল্লী বিদ্যুতের খুটি স্থাপন করায় বাঁধ সংস্কার কাজ ব্যহত হচ্ছে। এজন্য আমরা বারবার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দিয়েছি। তারপরও তারা কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। যার কারণে সময়মত কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। আমরা চাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক।  দীর্ঘদিন পরে গেল ২১ নভেম্বর বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেরিবাঁধ সংস্কার শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাট। নাজিরপুর উপ প্রকল্পের অধীনে ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাতছালা থেকে মুনিগঞ্জ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার করার কথা রয়েছে।