ঢাকা ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ১০ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

অবশেষে খোর্দ্দকোমরপুর চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান সাময়িক বরখাস্ত

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীদের কাছে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী শামীমকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে আরেকটি নোটিশে কেন চুড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না তা ১০ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জানাতে বলা হয়।

রবিবার (২৮ জুন) দুপুরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ-১ শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী শামীমকে সাময়িক বরখাস্ত সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন।

সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নবীনেওয়াজ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত সংক্রান্ত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের চিঠি হাতে পেয়েছি। সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরীকে জানানো হয়েছে। এখন থেকে তিনি পরিষদের আর কোন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। তার স্থলে পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবেন’।

এরআগে, প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তার তালিকায় অনিয়ম-স্বজনপ্রীতি ও সুবিধাভোগীদের কাছে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় গত ৯ জুন প্রতিবেদন প্রচার করে যমুনা টেলিভিশন। এছাড়া অনলাইন এশিয়ান নিউজ ২৪ ডট কম ছাড়াও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবেদনটি। এতে জেলাজুড়েই তোলপাড় সৃষ্টি হলে নড়েচড়ে বসে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। পরে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে স্থানীয় সরকারের গাইবান্ধার উপ-পরিচালক রোখছানা বেগম সরেজমিন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে সত্যতা পাওয়ায় এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেন। এরপর গত ১৬ জুন তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠান জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন।

এদিকে, অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে মুঠফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

প্রসঙ্গত: সাদুল্লাপুরের ১১ নম্বর খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের অনেক কর্মহীন ও দুস্থ-অসহায়দের বাদ দিয়ে ৫৯৪ জনের নাম অন্তভুক্ত হয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার তালিকায়। কিন্তু সেই তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম-স্বজনপ্রীতি আর নয়-ছয়ের অভিযোগ ওঠে। সুবিধাভোগী দুইজনের নামের পাশে স্ত্রী ও মেয়ের মোবাইল নাম্বার জুড়ে দেন তিনি।

আর ব্যক্তিগত সহকারী রাজ্জাকের একটি মোবাইল নাম্বার আছে একাধিক সুবিধাভোগীর নামের বিপরীতে। এছাড়া পরিষদের দুই নারী সদস্য তাদের তিন ছেলে এবং পরিবারের স্বজন ছাড়াও একাধিক স্বচ্ছল আর বিত্তশালীর নাম অর্ন্তভুক্ত করা হয়। এমনকি আ’লীগ নেতাকর্মী তাদের ভাই ও পরিবারের সদস্য, এলাকার প্রভাবশালী আর বড় ব্যবসায়ীদের নামও অর্ন্তভুক্ত করা হয় তালিকাতে। শুধু তাই নয়, ‘চা-পান’ খাওয়াসহ নানা অজুহাতে চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী ও তার লোকজন সুবিধাভোগী অনেকের কাছে ৪০০/৫০০ টাকা আদায় করেন বলেও একাধিক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন।

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

আপলোডকারীর তথ্য

রাহুল গান্ধীকে পার্লামেন্টে অযোগ্য ঘোষণা

অবশেষে খোর্দ্দকোমরপুর চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান সাময়িক বরখাস্ত

আপডেট সময় : ১২:০৪:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুন ২০২০

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীদের কাছে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী শামীমকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে আরেকটি নোটিশে কেন চুড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না তা ১০ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জানাতে বলা হয়।

রবিবার (২৮ জুন) দুপুরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ-১ শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী শামীমকে সাময়িক বরখাস্ত সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন।

সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নবীনেওয়াজ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত সংক্রান্ত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের চিঠি হাতে পেয়েছি। সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরীকে জানানো হয়েছে। এখন থেকে তিনি পরিষদের আর কোন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। তার স্থলে পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবেন’।

এরআগে, প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তার তালিকায় অনিয়ম-স্বজনপ্রীতি ও সুবিধাভোগীদের কাছে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় গত ৯ জুন প্রতিবেদন প্রচার করে যমুনা টেলিভিশন। এছাড়া অনলাইন এশিয়ান নিউজ ২৪ ডট কম ছাড়াও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবেদনটি। এতে জেলাজুড়েই তোলপাড় সৃষ্টি হলে নড়েচড়ে বসে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। পরে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে স্থানীয় সরকারের গাইবান্ধার উপ-পরিচালক রোখছানা বেগম সরেজমিন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে সত্যতা পাওয়ায় এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেন। এরপর গত ১৬ জুন তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠান জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন।

এদিকে, অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে মুঠফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

প্রসঙ্গত: সাদুল্লাপুরের ১১ নম্বর খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের অনেক কর্মহীন ও দুস্থ-অসহায়দের বাদ দিয়ে ৫৯৪ জনের নাম অন্তভুক্ত হয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার তালিকায়। কিন্তু সেই তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম-স্বজনপ্রীতি আর নয়-ছয়ের অভিযোগ ওঠে। সুবিধাভোগী দুইজনের নামের পাশে স্ত্রী ও মেয়ের মোবাইল নাম্বার জুড়ে দেন তিনি।

আর ব্যক্তিগত সহকারী রাজ্জাকের একটি মোবাইল নাম্বার আছে একাধিক সুবিধাভোগীর নামের বিপরীতে। এছাড়া পরিষদের দুই নারী সদস্য তাদের তিন ছেলে এবং পরিবারের স্বজন ছাড়াও একাধিক স্বচ্ছল আর বিত্তশালীর নাম অর্ন্তভুক্ত করা হয়। এমনকি আ’লীগ নেতাকর্মী তাদের ভাই ও পরিবারের সদস্য, এলাকার প্রভাবশালী আর বড় ব্যবসায়ীদের নামও অর্ন্তভুক্ত করা হয় তালিকাতে। শুধু তাই নয়, ‘চা-পান’ খাওয়াসহ নানা অজুহাতে চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী ও তার লোকজন সুবিধাভোগী অনেকের কাছে ৪০০/৫০০ টাকা আদায় করেন বলেও একাধিক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন।