ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড এর গ্রাহক উন্নয়ন বিভাগের বর্তমান পরিচালক কে এস এম মিনহাজ-কে সদ্য অধিগ্রহণকৃত কোম্পানির ব্যবস্থা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে ইউনিলিভার। সেটফার্স্ট এর কাছ থেকে ইতোমধ্যেই গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ লিমিটেড (জেএসকে বাংলাদেশ) এর ৮১.৯৮% শেয়ার অধিগ্রহণ সম্পন্ন করেছে ইউনিলিভার। অধিগ্রহণের পর কোম্পানির নাম পরিবর্তন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (৩০ জুন,২০২০) অনুষ্ঠিত গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ লিমিটেড (”কোম্পানি”) এর পরিচালনা পর্ষদের ২৯৭-তম সভায় অনুমোদন পাওয়ার পর ঘোষণাটি দেওয়া হয়। আজ ১লা জুলাই, ২০২০ তারিখ থেকে কে এস এম মিনহাজ এর নতুন দায়িত্বকাল শুরু হচ্ছে।
কে এস এম মিনহাজ গত প্রায় দুই দশক ধরে খাদ্য, গৃহ ও ব্যক্তিগত পরিচর্যা সহ ভোগ্যপণ্যের নানান খাতে মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। এর মধ্যে গত ৯ বছর তিনি ‘বিপণন’ এবং ‘গ্রাহক উন্নয়ন কার্যক্রম’- উভয় ক্ষেত্রেই পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
২০০০ সালে নেসলে বাংলাদেশ এ যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন কে এস এম মিনহাজ। সেখানে সাপ্লাই চেইন এবং ব্র্যান্ড ব্যবস্থাপনা বিভাগে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড এ যোগ দেন ২০০৬ সালে। এর পাঁচ বছরের মাথায় পদোন্নতি পেয়ে দেশের কনিষ্ঠতম বিপণন পরিচালকদের তালিকায় নাম লেখান কে এস এম মিনহাজ।
একটি উজ্জীবিত এবং কর্মদক্ষ বিপণন দলকে নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে ডিটারজেন্ট, ত্বক এবং চুলের যতেœ ব্যবহৃত পণ্যসামগ্রীর সরবরাহে দারুণ উন্নতি ঘটান। পণ্য সরবরাহের প্রতিযোগিতায় কোম্পানিকে এগিয়ে রাখার পাশাপাশি লাভজনক প্রবৃদ্ধি অর্জনেও তার অবদান অনস্বীকার্য। এছাড়া পিওরইট, নর এবং ভ্যাসলিনের মতো শক্তিশালী ব্র্যান্ড বাজারে আনার মাধ্যমে পানি, মসলাদার সুস্বাদু খাবার এবং হাত ও শরীরের যতেœ ব্যবহৃত পণ্যের ভবিষ্যত বাজারের বীজবপনের ক্ষেত্রেও তার নেতৃত্বগুণের প্রমাণ পাওয়া যায়।
২০১৪ সালে তিনি ইউনিলিভার বাংলাদেশ এর ‘বিক্রয় ও গ্রাহক উন্নয়ন’ বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গত ৬ বছর ধরে অত্যন্ত সফলতার সাথে তিনি সেখানে দায়িত¦ পালন করে আসছেন। এছাড়া দক্ষতার সাথে পরিচালনার মাধ্যমে বিভাগটিকে ভবিষ্যত উপযোগী করে তোলা, পণ্য বিতরণের ভিত্তি সম্প্রসারণ এবং ’গো-টু-মার্কেট’ প্রতিভার চমৎকার সমন্বয় ঘটিয়েছেন তিনি।
কে এস এম মিনহাজ বলেন, ”বাংলাদেশে ইউনিলিভার এর পুষ্টি ব্যবসার নেতৃত্ব দিতে পারাটা নি:সন্দেহে আমার জন্য অনেক বড় একটা সুযোগ। আমি খুবই আনন্দিত যে, বাংলাদেশের পুষ্টি ব্যবসাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্বের খ্যাতিমান দু’টি প্রতিষ্ঠান পরস্পর হাত মিলিয়েছে। আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য আমি বোর্ডের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আশা করি, আমার পূর্বসূরীদের তৈরি দুর্দান্ত সব কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার মাধ্যমে ব্যবসাটিকে আগামীতে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। আমি বিশ^াস করি যে, এমন মেধাবী কর্মীদল এবং দৃঢ় ব্র্যান্ডগুলোর সহায়তায় আগামীতে বাংলাদেশে আমরা জোরালো ফুড ও রিফ্রেশমেন্ট পণ্যের ব্যবসা তৈরি করতে পারবো।“
‘ইউনিলিভার ওভারসিজ হোল্ডিংস বি.ভি’ কর্তৃক গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ এর ৮১.৯৮% অধিগ্রহণ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর নতুন বোর্ড ঘোষণা করেছে ইউনিলিভার। এই বোর্ডের সভাপতি হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন জনাব মাসুদ খান।
বাংলাদেশে একটি লাভজনক ও টেকসই পুষ্টি ব্যবসা গড়ে তোলার পাশাপাশি অপুষ্টি দূরীকরণে বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত জাতীয় এজেন্ডাকে সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করাই ইউনিলিভার এর মূল লক্ষ্য।
সরকারী তালিকাভূক্ত একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার লিমিটেড তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে এবং জিএসকে বাংলাদেশ এর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সকল পণ্য (হরলিক্স, বুস্ট, গ্লুাক্সোস-ডি) এখন থেকে ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার লিমিটেড এর নামে বাজারে থাকবে। এক্ষেত্রে কোম্পানিটির ৮১.৯৮% শেয়ারের মালিক হিসেবে পণ্যগুলোর মালিকানা এবং যাবতীয় দায় গ্রহণ করবে ইউনিলিভার।
ইউনিলিভার বাংলাদেশ সম্পর্কে:
ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল) বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, যারা ৫৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে এদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের প্রতি ১০টি পরিবারের ৯টিই তাদের দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা মেটাতে উক্ত প্রতিষ্ঠানের পণ্য ব্যবহার করে থাকে। সবার জন্য টেকসহ জীবনমান সম্পন্ন একটি বিশ^ গড়ে তোলার মাধ্যমে ব্যবসায়িক সম্প্রসারণই ইউনিলিভার বাংলাদেশের লক্ষ্য। পরিবেশ দূষণে নিজেদের ভূমিকা হ্রাসের পাশাপাশি নানামুখী কর্মকা-ের মাধ্যমে সমাজের বুকে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে চলেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ (ইউবিএল)।