করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সামনের সারিতে থেকে প্রশংসা কুড়াচ্ছে পুলিশ। কিন্তু রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা এই করোনা পরিস্থিতিতেও মেতে আছেন চাঁদাবাজিতে। গোদাগাড়ীর বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালকরা এমন অভিযোগ করছেন।তারা বলছেন, গোদাগাড়ীতে কারণে-অকারণে যানবাহন আটকে ট্রাফিক কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপর টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনতে হচ্ছে। এসব টাকার জন্য দেয়া হয় না কোন রশিদ।
আর টাকা না দিলেই গাড়ির কাগজ রেখে ধরিয়ে দেয়া হয় মামলার কাগজ। করোনা পরিস্থিতিতে এমন কার্যক্রম আরও বেড়েছে।চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে উপজেলা সদর ডাইংপাড়া মোড়, মাটিকাটা ডিগ্রি কলেজের সামনে, কাদিপুর ও গোদাগাড়ী ডিগ্রি কলেজের সামনে এবং গোদাগাড়ী-আমনূরা সড়কের কার্বের মোড়ে দাঁড়িয়ে বেপরোয়া চাঁদা তুলছে ট্রাফিক পুলিশ।
সার্জেন্ট আবদুল আলিম ও মুনতাসির এবং এ টিএসআই নায়েব আলী প্রকাশ্যেই টাকা আদায় করেন চালকদের কাছ থেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গাড়িচালক জানান, স্থানীয় ট্রাক, ভুটভুটি ও মাইক্রো থামায় না ট্রাফিক পুলিশ। এদের সঙ্গে মাসিক একটা টাকা দেয়ার চুক্তি রয়েছে। প্রতিটি গাড়ির জন্য মাসে ৩০০ থেকেব ৫০০ টাকা নেয় পুলিশ। মালিক সমিতি এ টাকা পৌঁছে দেয়।
বাইরের উপজেলা থেকে কোন গাড়ি এলেই গোদাগাড়ীতে তাদের হয়রানি করা হয়। তবে ট্রাফিক পুলিশের চোখ বেশি মোটরসাইকেলের দিকে। কারণে-অকারণে মোটরসাইকেল থামিয়ে ট্রাফিক কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানে টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনতে হয়। টাকা না দিলে সেখানে লেখা হয় মামলা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গোদাগাড়ীতে ট্রাফিক পুলিশের কাছে সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হন মাছ ব্যবসায়ীরা। সাত সকালে তারা যখন ভুটভুটি টেম্পু কিংবা ট্রাকে করে পুকুর থেকে মাছ বাজারে নিয়ে যান তখন অবৈধ যান বলে ভুটভুটিকে আটকানো হয়। তারপর টাকা চাওয়া হয়।
আর মনমতো টাকা না দিলে ভুটভুটিকে আটকে রাখা হয়। এতে চাষি ও ব্যবসায়ীরা সময়মতো বাজার ধরতে না পেরে লোকসানে পড়েন। এ নিয়ে স্থানীয় মাছ চষি ও ব্যবসায়ীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হতে হয় মোটরসাইকেল চালকদের। ট্রাফিক পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে তারাও ক্ষুব্ধ।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রাফিক সার্জেন্ট আবদুল আলিম তার বিরুদ্ধে আনীত চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
যদি অনিয়মে জড়িয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয় আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন। মোটরসাইকেলকে বেশি হয়রানির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেশি। আর বড় গাড়ির সংখ্যা কম। বড় গাড়িগুলোর কাজহপত্র ঠিক থাকে। কিন্তু মোটরসাইকেলের থাকে না। তাই এ রকম মনে হয় যে পুলিশের চোখ শুধু মোটরসাইকেলের দিকে। তবে মামলা দেয়া হলেই চালকরা ট্রাফিক পুলিশের নামে মিথ্যা বদনাম ছড়ায় বলেও দাবি করেন তিনি।