ঢাকা ০২:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামের নদী ভাঙ্গনে স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন – জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম

ছোট-বড় ১৬ টি নদ-নদী দ্বারা বেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলা ! এ জেলার মানুষের দুঃখ নদী ভাঙ্গন ! ফি বছরই নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয় এ জেলার হাজারো মানুষ ! বিশেষ করে ধরলা, দুধকুমার, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গনে প্রতি বছর বর্ষায় দিশেহারা হয়ে পড়ে এ জেলার মানুষজন ! ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন থেকে রক্ষা করার জন্য ব্রম্মপুত্রের ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় তীরবর্তী মানুষের মনে অনেক আলোর সঞ্চার করলেও প্রকল্পের ধীরগতি ভীতিরও সঞ্চার করেছে ! অতিসম্প্রতি, উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষ মানববন্ধন করেছে, নদী ভাঙ্গন থেকে তাদেরকে রক্ষা করার জন্য ! মানববন করেছে নাগেশ্বরী ও চিলমারী উপজেলার নদি তীরবর্তী মানুষেরা !

পক্ষান্তরে, তিস্তার নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার বিস্তর এলাকা সামান্য পানি বৃদ্ধি পেলেই ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে পড়ে হাজারো মানুষ !

গতকাল কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিম রাজারহাট উপজেলার তিস্তা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন ! এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো: রেজাউল করিম জানান, কুড়িগ্রামের নদী ভাঙ্গন এর স্থায়ী সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ দ্রুত লিখিত দাবি জানানো হবে !

কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ভাঙ্গন কবলিত রামহরি, চতুরা, মন্দির, পাড়ামৌলা, রতি, গাবুর হেলান, তৈয়বখাঁ ও চর বিদ্যানন্দ এলাকা পরিদর্শন করেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রাজারহাট উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: যোবায়ের হোসেন, রাজারহাট উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদ সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী, বিদ্যানন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মো: তাজুল ইসলাম ও অন্যান্য কর্মকর্তা বৃন্দ। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন কালে উপস্থিত সকলকে বলেন, যারা নিরাপদে নেই তাদেরকে নিরাপদ স্থানে নেয়া হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিদের নির্দেশ প্রদান করেছি। আমাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ আছে। ভাঙ্গন কবলিত মানুষদের বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ নেই ! এ সময় তিনি উপস্থিত মানুষের মাঝে মাক্স বিতরণ করেন !

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: যোবায়ের হোসেন উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের ধরলা নদীর ভাঙ্গন কবলিত জয়কুমর কামারপাড়া থেকে কালুয়া পর্যন্ত এবং বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ভাঙ্গন কবলিত রামহরি, চতুরা, মন্দির, পাড়ামৌলা, রতি, গাবুর হেলান, তৈয়বখাঁ ও চর বিদ্যানন্দ এলাকা পরিদর্শন করেন।

তিনি পরিদর্শনকালে ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা এবং ক্ষতিগ্রস্ত জমি, ফসল ও বাগানের পরিমানের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন। এ সকল এলাকার হুমকির সম্মুখীন মানুষের সাথে আলাপকালে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত এবং চাহিদা ও সমস্যার কথা শুনেছেন।

তিনি বলেন, নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত কোন পরিবারের খাদ্য কিংবা অন্য কোন সহায়তা প্রয়োজন হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরও বলেন, দেশের সকল নদী ভাঙ্গন এলাকায় একই সাথে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করার সাথে দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার সম্পর্ক রয়েছে।

পরিদর্শনকালে রাজারহাটের নদী সংলগ্ন এলাকার যেখানে যেখানে বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজন বলে মনে হয়েছে, সে বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের নিকট অতিসত্বর পত্র প্রেরণ করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

এ সময় “বন্যা কবলিত মানুষদের স্থায়ী সমাধান আমার প্রানের দাবি” বলে উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদ সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী বলেন, আশা করি জেলা প্রশাসক মহোদয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুততারসাথে গ্রহণ করবেন !

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

আপলোডকারীর তথ্য

কুড়িগ্রামের নদী ভাঙ্গনে স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন – জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম

আপডেট সময় : ০৩:৪৮:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ জুন ২০২০

ছোট-বড় ১৬ টি নদ-নদী দ্বারা বেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলা ! এ জেলার মানুষের দুঃখ নদী ভাঙ্গন ! ফি বছরই নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয় এ জেলার হাজারো মানুষ ! বিশেষ করে ধরলা, দুধকুমার, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গনে প্রতি বছর বর্ষায় দিশেহারা হয়ে পড়ে এ জেলার মানুষজন ! ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন থেকে রক্ষা করার জন্য ব্রম্মপুত্রের ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় তীরবর্তী মানুষের মনে অনেক আলোর সঞ্চার করলেও প্রকল্পের ধীরগতি ভীতিরও সঞ্চার করেছে ! অতিসম্প্রতি, উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষ মানববন্ধন করেছে, নদী ভাঙ্গন থেকে তাদেরকে রক্ষা করার জন্য ! মানববন করেছে নাগেশ্বরী ও চিলমারী উপজেলার নদি তীরবর্তী মানুষেরা !

পক্ষান্তরে, তিস্তার নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার বিস্তর এলাকা সামান্য পানি বৃদ্ধি পেলেই ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে পড়ে হাজারো মানুষ !

গতকাল কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিম রাজারহাট উপজেলার তিস্তা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন ! এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো: রেজাউল করিম জানান, কুড়িগ্রামের নদী ভাঙ্গন এর স্থায়ী সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ দ্রুত লিখিত দাবি জানানো হবে !

কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ভাঙ্গন কবলিত রামহরি, চতুরা, মন্দির, পাড়ামৌলা, রতি, গাবুর হেলান, তৈয়বখাঁ ও চর বিদ্যানন্দ এলাকা পরিদর্শন করেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রাজারহাট উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: যোবায়ের হোসেন, রাজারহাট উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদ সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী, বিদ্যানন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মো: তাজুল ইসলাম ও অন্যান্য কর্মকর্তা বৃন্দ। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন কালে উপস্থিত সকলকে বলেন, যারা নিরাপদে নেই তাদেরকে নিরাপদ স্থানে নেয়া হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিদের নির্দেশ প্রদান করেছি। আমাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ আছে। ভাঙ্গন কবলিত মানুষদের বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ নেই ! এ সময় তিনি উপস্থিত মানুষের মাঝে মাক্স বিতরণ করেন !

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: যোবায়ের হোসেন উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের ধরলা নদীর ভাঙ্গন কবলিত জয়কুমর কামারপাড়া থেকে কালুয়া পর্যন্ত এবং বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ভাঙ্গন কবলিত রামহরি, চতুরা, মন্দির, পাড়ামৌলা, রতি, গাবুর হেলান, তৈয়বখাঁ ও চর বিদ্যানন্দ এলাকা পরিদর্শন করেন।

তিনি পরিদর্শনকালে ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা এবং ক্ষতিগ্রস্ত জমি, ফসল ও বাগানের পরিমানের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন। এ সকল এলাকার হুমকির সম্মুখীন মানুষের সাথে আলাপকালে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত এবং চাহিদা ও সমস্যার কথা শুনেছেন।

তিনি বলেন, নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত কোন পরিবারের খাদ্য কিংবা অন্য কোন সহায়তা প্রয়োজন হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরও বলেন, দেশের সকল নদী ভাঙ্গন এলাকায় একই সাথে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করার সাথে দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার সম্পর্ক রয়েছে।

পরিদর্শনকালে রাজারহাটের নদী সংলগ্ন এলাকার যেখানে যেখানে বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজন বলে মনে হয়েছে, সে বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের নিকট অতিসত্বর পত্র প্রেরণ করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

এ সময় “বন্যা কবলিত মানুষদের স্থায়ী সমাধান আমার প্রানের দাবি” বলে উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদ সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী বলেন, আশা করি জেলা প্রশাসক মহোদয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুততারসাথে গ্রহণ করবেন !