ঢাকা ০৩:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

খুলনায় করোনা চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালের অনিহা!

খুলনায় সরকারি হাসপাতালে স্থান সংকুলান না হওয়ায় বেসরকারি ক্লিনিকে করোনা রোগী ভর্তির সিদ্ধান্ত হলেও তাতে অনিহা প্রকাশ করেছে হাসপাতাল-ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। অবকাঠামো সংকটসহ নানা সমস্যার কথা বলছেন বেসরকারি হাসপাতালের মালিকরা। একই সাথে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতো প্রনোদনা দাবি করছেন।

তবে আগামী তিনদিনের মধ্যে করোনা রোগী ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানিয়েছে প্রশাসন। অন্যথায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।এদিকে খুলনা সদর হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ৪২টি শয্যা খুব দ্রুততার সাথে প্রস্তুত করে কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা উপযোগী করে তোলার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনের খালিশপুরে লাল হাসপাতাল এবং তালতলা হাসপাতালে কোভিড-১৯ চিকিৎসা দেওয়া যায় কিনা, সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে।

খুলনার কোভিড হাসপাতালে দ্রুত হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা স্থাপন এবং করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঘোষিত তিনটি রেডজোন ১৪ দিন পরে ইয়োলোজোনে রূপান্তরিত হলো কিনা তা অনুসন্ধান করা হবে। রোটারি ক্লাব কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করবে।খুলনায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির এক জরুরি সভায় এসকল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গতকাল রবিবার সকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে তাঁর সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

খুলনার সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতা সীমিত। বেসরকারি হাসপাতাগুলো মানবিকতার নিদর্শন রাখতে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় নিশ্চয় এগিয়ে আসবে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালের একটি অংশে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, খুলনার চারটি বড় হাসপাতাল যথাক্রমে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আদ-দ্বীন হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি অংশে ৫০টি করে শয্যায় কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা থাকবে। আগামী তিন দিনের মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে কিচিৎসাসেবা চালু করা হবে। পাশাপাশি খুলনা সদর হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ৪২টি শয্যা অতি দ্রুততার সাথে উপযোগী করতে সিভিল সার্জন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

জানা যায়, খুলনা জেলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪৩৫ জন। এর মধ্যে ভর্তি আছেন ২৪৪ জন। মারা গেছেন ৩৩ জন। খুলনা করোনা চিকিৎসায় সমন্বয়ক ডা. মেহেদী নেওয়াজ জানান, প্রতিদিনই ১০০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। এরই মধ্যে ‘হাসপাতালে শয্যা খালি নাই’ ব্যানার টানানো হয়েছে। এদিকে অতিরিক্ত চাপ সামলাতে বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তির সিদ্ধান্ত হলেও তাতে সাড় দেয়নি হাসপাতাল ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, খুলনার বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আদ-দ্বীন হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসায় শয্যা প্রস্তুত রাখতে বলা হলেও তাতে তারা অনিহা জানাচ্ছে। যদিও গাজী মেডিকেল হাসপাতাল তাদের ৫০ শয্যা প্রস্তুতের কথা জানিয়েছে। তবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী তিন দিনের মধ্যে তাদেরকে শয্যা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।

এর মধ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যাগ না নিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবের করোনা শনাক্তের পরীক্ষার রিপোর্ট (নেগেটিভ ও পজিটিভ উভয় ক্ষেত্রে) অতি দ্রুততার সাথে মোবাইল ফোনে এসএমএস-এর মাধ্যমে সিভিল সার্জনের দপ্তর জানানোর ব্যবস্থা করবে।

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

আপলোডকারীর তথ্য

খুলনায় করোনা চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালের অনিহা!

আপডেট সময় : ০৭:৪৮:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জুলাই ২০২০

খুলনায় সরকারি হাসপাতালে স্থান সংকুলান না হওয়ায় বেসরকারি ক্লিনিকে করোনা রোগী ভর্তির সিদ্ধান্ত হলেও তাতে অনিহা প্রকাশ করেছে হাসপাতাল-ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। অবকাঠামো সংকটসহ নানা সমস্যার কথা বলছেন বেসরকারি হাসপাতালের মালিকরা। একই সাথে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতো প্রনোদনা দাবি করছেন।

তবে আগামী তিনদিনের মধ্যে করোনা রোগী ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানিয়েছে প্রশাসন। অন্যথায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।এদিকে খুলনা সদর হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ৪২টি শয্যা খুব দ্রুততার সাথে প্রস্তুত করে কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা উপযোগী করে তোলার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনের খালিশপুরে লাল হাসপাতাল এবং তালতলা হাসপাতালে কোভিড-১৯ চিকিৎসা দেওয়া যায় কিনা, সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে।

খুলনার কোভিড হাসপাতালে দ্রুত হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা স্থাপন এবং করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঘোষিত তিনটি রেডজোন ১৪ দিন পরে ইয়োলোজোনে রূপান্তরিত হলো কিনা তা অনুসন্ধান করা হবে। রোটারি ক্লাব কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করবে।খুলনায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির এক জরুরি সভায় এসকল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গতকাল রবিবার সকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে তাঁর সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

খুলনার সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতা সীমিত। বেসরকারি হাসপাতাগুলো মানবিকতার নিদর্শন রাখতে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় নিশ্চয় এগিয়ে আসবে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালের একটি অংশে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, খুলনার চারটি বড় হাসপাতাল যথাক্রমে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আদ-দ্বীন হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি অংশে ৫০টি করে শয্যায় কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা থাকবে। আগামী তিন দিনের মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে কিচিৎসাসেবা চালু করা হবে। পাশাপাশি খুলনা সদর হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ৪২টি শয্যা অতি দ্রুততার সাথে উপযোগী করতে সিভিল সার্জন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

জানা যায়, খুলনা জেলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪৩৫ জন। এর মধ্যে ভর্তি আছেন ২৪৪ জন। মারা গেছেন ৩৩ জন। খুলনা করোনা চিকিৎসায় সমন্বয়ক ডা. মেহেদী নেওয়াজ জানান, প্রতিদিনই ১০০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। এরই মধ্যে ‘হাসপাতালে শয্যা খালি নাই’ ব্যানার টানানো হয়েছে। এদিকে অতিরিক্ত চাপ সামলাতে বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তির সিদ্ধান্ত হলেও তাতে সাড় দেয়নি হাসপাতাল ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, খুলনার বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আদ-দ্বীন হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসায় শয্যা প্রস্তুত রাখতে বলা হলেও তাতে তারা অনিহা জানাচ্ছে। যদিও গাজী মেডিকেল হাসপাতাল তাদের ৫০ শয্যা প্রস্তুতের কথা জানিয়েছে। তবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী তিন দিনের মধ্যে তাদেরকে শয্যা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।

এর মধ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যাগ না নিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবের করোনা শনাক্তের পরীক্ষার রিপোর্ট (নেগেটিভ ও পজিটিভ উভয় ক্ষেত্রে) অতি দ্রুততার সাথে মোবাইল ফোনে এসএমএস-এর মাধ্যমে সিভিল সার্জনের দপ্তর জানানোর ব্যবস্থা করবে।