খুলনায় করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে আতঙ্ক। যার প্রভাব ফেলছে দেশের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে। আর সে কারণে গত ১১ মে থেকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দেশব্যাপি শুরু হয়েছে ভার্চুয়াল কোর্ট। তবে ভার্চুয়াল কোর্ট চালু থাকলেও খুলনার আদালত পাড়া এখন এক প্রকার চলছে নিরবতা।
নেই আইনজিবীদের আনাগোনা। থেমে গেছে বিচার কার্যক্রম। আদালত ভবনগুলো খাঁ খাঁ করছে। নেই মামলা, নেই জামিন প্রক্রিয়া, হারিয়ে গেছে সেই কর্মব্যস্ততা। অপেক্ষায় বিচার প্রার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সকালে আদালত পাড়ায় গিয়ে দেখা যাচ্ছে না কোন চায়ের দোকানে, হোটেলে জনসমাগম, নেই কোন ভিড়। খুলনায় আদালত পাড়ায় আয়ের উপর নির্ভর হাজার লোক বেকার কর্মহীন।
ভুগছে অর্থে কষ্টে। খুলনা আইনজিবী সমিতির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এ্যাডভোকেট তৌহিদুর রহমান তুষার এই প্রতিবেদককে বলেন, আইনজীবী পেশা সাংবিধান স্বীকৃত একটি পেশা। তবে করোনা ভাইরাসের সময়ে ও বর্তমানে হাজতী আসামীর জামিন শুনানী হচ্ছে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে।
আর আসামীদের আত্মসর্মন হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। মামলা ফাইলিংসহ অন্যান্য সকল কার্যক্রম বন্ধ আছে। আর দেওয়াণী কোর্টে জরুরী ইনজাংশন জারি, হেয়ারিং ও অল্প কিছু মামলা ফাইলিং হচ্ছে। আর সব কার্যক্রম বন্ধ আছে। তবে প্রকৃত পক্ষে এ্যাকচুয়াল কোটের বিকল্প ভার্চুয়াল কোট হতে পারে না। তবে পেশার চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশী। আরও কয়েক মাস এভাবে চলতে পারে। কিছু করার নেই।
তবে বর্তমানে নবীণ আইনজীবীরা অর্থকষ্টে আছেন। দেওয়ানি মামলার বিচার প্রত্যাশি মহিউদ্দিন বলেন, আমার একটি মামলা প্রায় ৭ বছর ধরে চলছে। এখন শুনানির সময় এগিয়ে এসছিল। করোনার মধ্যে কোর্ট বন্ধ থাকায় বিচার কার্যক্রম থেমে গেছে। আইনজিবী বলছে সব কিছু সাভাবিক না হলে কিছু করা যাবে না। আদালত পাড়ার মোহরী ফিরোজ শেখ বলেন, আমি প্রায় ত্রিশ বছরের মত এই আদালত পাড়ায় মোহরারের কাজ করে চলছি। এই কাজ আমার একমাত্র আয়ের উৎস।
আর কোন কাজ করতে পারি না। তাছাড়া আমার জীবনে কখনও আগে এমন পরিস্থিতির সম্মুখি হয়নি। আর কোন কাজ করতে পারি না। খুবই কষ্টের মধ্যে জীবন চলছে। খুলনা আইনজিবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যডভোকেট কে এম ইকবাল হোসেন বলেন, সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ি বর্তমান আদালতের কার্যক্রম চলছে। তাছাড়া সোমবার একটা চিঠি পেয়েছেন।
যেখানে সকল পিপিদের অনলাইন বা ভার্চুয়াল কোর্ট এর কার্যক্রম চালানোর জন্য বলা হয়েছে। যার ওপর আগামি ২২ জুলাই থেকে অনলাইন ট্রেনিং এর ব্যবস্থা রয়েছে। অন্যান আইনজীবিদের জন্য ১৯ জুলাই থেকে এই অনলাইন কোর্ট পরিচালনার জন্য ট্রেনিং দেয়া হবে। তাছাড়া আদালতের কিছু কিছু প্রয়োজনীয় কার্যক্রম ম্বাভাবিক আছে। গুরুতর মার্ডার মামলা ও মাদক মালা ছাড়া প্রায় সব মামলার জামিন দেয়া হচ্ছে। তবে এই অনলাইন ভার্চুয়াল কোর্ট চলবে আরও কিছুদিন।
খুলনা মহানগর এপিপি এ্যাডভোকেট মোঃ মোহাসীন বলেন, এখনও পর্যন্ত বলা যাবে না কতদিন ধরে এই ভার্চুয়াল কোর্ট ব্যবস্থ্যা অব্যাহত থাকবে। বর্তমান আইনজীবীদের অবস্থ্যা খুবই করুন। তাদের কোন আয় নেই। কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তবে সরকারের উচিত এই বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া মহানগর দায়রা জর্জ মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান করোনা ভাইরাস শুধু বাংলাদেশ না, এটি একটি বৈশ^য়িক সমস্যা।
যার প্রভাব আমাদের খুলনা আদালত পাড়ায়ও। তবে এই কারণে মানুষের সমস্যা বেড়েই যাচ্ছে। বিচার ব্যবস্থ্যা এক প্রকার থেমে গেছে। অনেকে আইনগত প্রতিকার পাচ্ছেন না। তাছাড়া সরকার ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিশেষ বিচার ব্যবস্থ্যার সুবিধা কার্যক্রম চলছে।