ছাতকে পর্তুগাল প্রবাসীর বাড়িতে গ্রিল কেটে
দূর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। সংঘবদ্ধ ডাকাত দল লোহার দরজা ভেঙে বসত ঘরে প্রবেশ করে স্বর্ণালংকার ও পাউন্ড,মোবাইল নগদ টাকাসহ ২১ লাখ টাকা মালামাল লুট করে ডাকাতদল পালিয়ে যায় ।জনতার ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ৪ জন ডাকাতকে গ্রামবাসী আটক করে গণধোলায় দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।
ভোর রাতে ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান ৩ টি রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। সংঘবদ্ধ সশস্ত্র ডাকাত দলের হামলায় গৃহকর্তাসহ ১০ ব্যক্তিকে মারপিট করে আহত করেন।
আহতদের আশংকাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে থানার পুলিশ সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর এলাকা অভিযান চালিয়ে আলী হোসেন নামে আরো একজনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে গৃহকতা সাইদুর আলম ডালিম বাদী হয়ে লাল মিয়া ওরফে জুয়েল প্রধান আসামী কবে ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করা হয়। এ ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত বুধবার দুপুরের আসামীদের সুনামগঞ্জ আদালতে মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেন থানা ওসি ।
গত মঙ্গলবার গভীব রাতে উপজেলার১১নং গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউপির জালালপুর গ্রামে পর্তুগাল প্রবাসী মাসুক মিয়ার বসত বাড়িতে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী মৃত উস্তার আলীর পর্তুগাল প্রবাসী মাসুক মিয়ার বসত বাড়িতে মঙ্গলবার ভোর রাতে ১৪-১৫ জনের সংঘবদ্ধ সশস্ত্র ডাকাত দল হানা দেয়। ডাকাতরা বাড়ির গ্রিলের গেট ও দরজা ভেঙ্গে অস্ত্রের মুখে পরিবারের লোকজনকে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারপিট ভাংচুর লুটপাট চালায়। এসময় পাশের মসজিদের মাইক থেকে ডাকাত-ডাকাত বলে উচ্চস্বরে ঘোষনা দিলে এলাকার লোকজন সূর-চিৎকার করে লাঠিসোটা নিয়ে বেরিয়ে আসে। অবস্থার বেগতিক দেখে ডাকাতরা আতংক সৃষ্টি করতে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষন করেছিল। এক পর্যায়ে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় গৃহকর্তা সহ এলাকার লোকজন ডাকাতদের ধাওয়া করে একটি পাইপগান সহ ৪ জন ডাকাতকে আটক করেন।
গণপিটুনিতে আহত ডাকাতরা হলেন, জগন্নাতপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের চকতিলক গ্রামের মখলিছ মিযার পুত্র লাল মিয়া ওরফে জুয়েল(২৯), একই ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের মৃত শহিদ উল্লাহ ওরফে সাইদুল্লার পুত্র সাইফুল ওরফে সাইকুল(২৩), ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ারাবাজার ইউনিয়নের কলাপাড়া-দত্তগ্রাম গ্রামের মৃত সফর আলী ওরফে সফর উল্লাহর পুত্র আনফর আলী ওরফে আনহার(২৪) এবং একই উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের রবিদাস-পালপাড়া গ্রামের আলিম উল্লাহর পুত্র সাইফুল ইসলাম ওরফে শফিক(২৩)কে আটক করে এলাকাবাসী। এ খবর পেয়ে ছাতক থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ডাকাতদের আটক করে থানায় নেন। এসময় ডাকাতদের ব্যবহৃত একটি পাইপগান, কয়েকটি গুলির খোসা উদ্ধার করে থানার পুলিশ।
জনতার গণধোলাইয়ে আহত ডাকাতদের ছাতক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এদিকে ডাকাতদের হামলায় আহত গৃহকর্তা ডালিম মিয়া, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সামছুল ইসলাম, আজাদ মিয়া, শাহীন মিয়া,বাবুল মিয়া,মাজেদা বেগম ও তানিয়া বেগম সহ অন্তত ১০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গ্রামবাসী জানান,প্রবাসীর বাড়িতে প্রবেশ করে রুমে টুকেই বাড়ীর সকলকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আলমারিতে রক্ষিত প্রায় ২১ ভরি ওজনের স্বর্ণের গহনা,কানের দোল,মোবাইল ফোন ঘড়ি নগদসহ ২১ লাখ টাকার মালামাভ লুট করে নেন। গ্রামবাসি ডাকাতের খবর শুনে গ্রামবাসি ছুটি এসেডাকাতদের ধাওয়া করেন। তখন ডাকাতরা পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করেছিল। জনতা ধাওয়া করে ৪ জন ডাকাতকে ধরে ফেলে গণধোলায় দেয়। এ খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ওসি মাহবুবুর রহমান, এসআই আতিকুল আলম খন্দকার ও এসআই শহীন হোসেন, এএসআই মুকুল হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে আহত ডাকাতদের উদ্ধার ও তাদের কাছে থাকা একটি দেশি পাইপগান উদ্ধার করেন।
এব্যাপারে ওসি মাহবুবুর রহমান ডাকাতির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান ও ৩টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। ৫ জন ডাকাত গত বুধবার দুপুরের আদালতে মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।