ঢাকা ১২:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ১৭ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

তানোরে করোনার মধ্যেও প্রাইভেট পড়াচ্ছেন শিক্ষক নিরাঞ্জন

মহামারী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের জন্য সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করেন। কিন্তু গত পহেলা জুন থেকে লকডাউন তুলে নিলেও শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেন। এঅবস্থায় অর্থ লোভী শিক্ষক লকডাউনের সময় থেকে এখন পর্যন্ত নিজ বাড়িতে সকাল বিকেল প্রাইভেট পড়াচ্ছেন রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তালন্দ এ এম উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক নিরাঞ্জন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এতে করে যে সব কমলমতি শিক্ষার্থীরা একযোগে প্রাইভেট পড়তেন তাদের মধ্যে কেউ যে করোনার উপসর্গ নিয়ে পড়তেন না সেটাই বা কে যানে। কারন তালন্দ উপর পাড়া বেলপুকুরিয়া গ্রামের একাধিক ব্যাক্তি ছিলেন হোম কোয়ারেন্টনে এবং ওই গ্রামেই দুজনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। ফলে শিক্ষক নিরাঞ্জনের এমন কর্মকাণ্ডে ওই এলাকায় দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ এবং তাঁর বিরুদ্ধে যথাযত ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের সু দৃষ্টি কামনা করেছেন।

জানা গেছে চলতি বছরের গত ২৬ মার্চ থেকে পহেলা জুন পর্যন্ত মহামারী করোনাভাইরাসের হাত থেকে দেশ ও জনগণকে রক্ষা করতে সরকারি নির্দেশে সারা দেশ লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। পরে দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে পহেলা জুনে লকডাউন তুলে নেয়া হয়। কিন্তু কমল মতি শিক্ষার্থীদের এভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাইভেট কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়।

এরপরও তানোর পৌর এলাকার তালন্দ এএম উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক সব আইন অমান্য করে নিজ বাড়িতে সকাল বিকেল প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। গত মঙ্গলবার তালন্দ উপরপাড়াগ্রামের কিছু কমল মতি শিক্ষার্থীদের বাইসাইকেলে বই সহ আসতে দেখে তাদের কে জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা বলেন আমরা নিরাঞ্জন স্যারের বাড়িতে প্রাইভেট পড়ে আসছি।

গত মঙ্গলবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম মোবাইলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং গণ মাধ্যম কর্মীদের মেসেজ দেন এই বলে যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি হতে শিক্ষার্থীদের সু রক্ষার সরকারি নির্দেশে সকল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনা না করে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতিপয় শিক্ষক প্রাইভেট কোচিং চালু করেছেন মর্মে বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এসব কার্যক্রমে আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষক জড়িত থাকলে তা থেকে বিরত থাকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হল। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রাইভেট পড়ানো শিক্ষক নিরাঞ্জনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে পড়ানোর কথা স্বীকার করে এই প্রতিবেদককে বলেন আপনি নিষেধ করলে আর পড়াবো না। সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে কোন ভাবেই প্রাইভেট পড়ানো যাবেনা আপনি কেন পড়াচ্ছেন প্রশ্ন করা হলে কোন ধরণের সদ উত্তর না দিয়ে নিরব থাকেন।

তালন্দ এএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাবের সাথে যোগাযোগ করে প্রাইভেট পড়ানো সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান এটা আমার অজানা। শিক্ষক নিরাঞ্জন নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি প্রাইভেট পড়ান সে ক্ষেত্রে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি জানান আমি বুঝে পাইনা সরকার প্রতিমাসে বেতন দিচ্ছেন তাঁর পরেও কেন প্রাইভেট পড়াতে হবে।আমার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের নিয়ে আগামি শনিবার মিটিং করা হবে, সে মিটিঙয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম জানান আমি গত মঙ্গলবারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান দের মেসেজ দিয়ে প্রাইভেট কোচিং সেন্টার কোন শিক্ষক জড়িত থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর এধরনের কোন খবর প্রকাশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং ইউএনও স্যার সুস্থ হওয়া মাত্রই এসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোটের মাধ্যমে জেল জরিমানা করা হবে বলে জানান তিনি।

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

আপলোডকারীর তথ্য

তানোরে করোনার মধ্যেও প্রাইভেট পড়াচ্ছেন শিক্ষক নিরাঞ্জন

আপডেট সময় : ০৮:৪৩:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই ২০২০

মহামারী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের জন্য সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করেন। কিন্তু গত পহেলা জুন থেকে লকডাউন তুলে নিলেও শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেন। এঅবস্থায় অর্থ লোভী শিক্ষক লকডাউনের সময় থেকে এখন পর্যন্ত নিজ বাড়িতে সকাল বিকেল প্রাইভেট পড়াচ্ছেন রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তালন্দ এ এম উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক নিরাঞ্জন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এতে করে যে সব কমলমতি শিক্ষার্থীরা একযোগে প্রাইভেট পড়তেন তাদের মধ্যে কেউ যে করোনার উপসর্গ নিয়ে পড়তেন না সেটাই বা কে যানে। কারন তালন্দ উপর পাড়া বেলপুকুরিয়া গ্রামের একাধিক ব্যাক্তি ছিলেন হোম কোয়ারেন্টনে এবং ওই গ্রামেই দুজনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। ফলে শিক্ষক নিরাঞ্জনের এমন কর্মকাণ্ডে ওই এলাকায় দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ এবং তাঁর বিরুদ্ধে যথাযত ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের সু দৃষ্টি কামনা করেছেন।

জানা গেছে চলতি বছরের গত ২৬ মার্চ থেকে পহেলা জুন পর্যন্ত মহামারী করোনাভাইরাসের হাত থেকে দেশ ও জনগণকে রক্ষা করতে সরকারি নির্দেশে সারা দেশ লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। পরে দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে পহেলা জুনে লকডাউন তুলে নেয়া হয়। কিন্তু কমল মতি শিক্ষার্থীদের এভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাইভেট কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়।

এরপরও তানোর পৌর এলাকার তালন্দ এএম উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক সব আইন অমান্য করে নিজ বাড়িতে সকাল বিকেল প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। গত মঙ্গলবার তালন্দ উপরপাড়াগ্রামের কিছু কমল মতি শিক্ষার্থীদের বাইসাইকেলে বই সহ আসতে দেখে তাদের কে জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা বলেন আমরা নিরাঞ্জন স্যারের বাড়িতে প্রাইভেট পড়ে আসছি।

গত মঙ্গলবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম মোবাইলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং গণ মাধ্যম কর্মীদের মেসেজ দেন এই বলে যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি হতে শিক্ষার্থীদের সু রক্ষার সরকারি নির্দেশে সকল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনা না করে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতিপয় শিক্ষক প্রাইভেট কোচিং চালু করেছেন মর্মে বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এসব কার্যক্রমে আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষক জড়িত থাকলে তা থেকে বিরত থাকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হল। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রাইভেট পড়ানো শিক্ষক নিরাঞ্জনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে পড়ানোর কথা স্বীকার করে এই প্রতিবেদককে বলেন আপনি নিষেধ করলে আর পড়াবো না। সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে কোন ভাবেই প্রাইভেট পড়ানো যাবেনা আপনি কেন পড়াচ্ছেন প্রশ্ন করা হলে কোন ধরণের সদ উত্তর না দিয়ে নিরব থাকেন।

তালন্দ এএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাবের সাথে যোগাযোগ করে প্রাইভেট পড়ানো সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান এটা আমার অজানা। শিক্ষক নিরাঞ্জন নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি প্রাইভেট পড়ান সে ক্ষেত্রে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি জানান আমি বুঝে পাইনা সরকার প্রতিমাসে বেতন দিচ্ছেন তাঁর পরেও কেন প্রাইভেট পড়াতে হবে।আমার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের নিয়ে আগামি শনিবার মিটিং করা হবে, সে মিটিঙয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম জানান আমি গত মঙ্গলবারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান দের মেসেজ দিয়ে প্রাইভেট কোচিং সেন্টার কোন শিক্ষক জড়িত থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর এধরনের কোন খবর প্রকাশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং ইউএনও স্যার সুস্থ হওয়া মাত্রই এসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোটের মাধ্যমে জেল জরিমানা করা হবে বলে জানান তিনি।