রাজশাহীর তানোরে পশু চিকিৎসক মোবারকের ভুল চিকিৎসা এবং হাবিবুর রহমান নামের এক ব্যাক্তির জোর পূর্বক ইনজেকশন প্রয়োগের কারনে নওমুসলিম গৃহবধূ খাদিজা বেওয়ার(২৭) করুন মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর পর রাতারাতি কাউকে কোন কিছু বুঝতে না দিয়ে পাচন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মতিনের সহযোগিতায় দাফন সম্পন্ন করা হয় বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
এমন অমানবিক ঘটনাটি ঘটে চলতি মাসের ৩রা জুন গত মঙ্গলবার উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর বাজারে।ঘটনাটি প্রথমে ধামাচাপা থাকলেও মৃত খাদিজার বসতবাড়িতে চেয়ারম্যানের একান্ত অনুসারী হাবিবুর রহমান অন্য ব্যাক্তিকে উঠিয়ে দিলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়।ফলে এঘটনার মুলহোতা পশু চিকিৎসক মোবারকসহ জড়িতদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী।ফলে ঘটনাটি নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং এতদিনেও কোন ধরনের ব্যবস্থা না নেবার কারনে প্রশাসনের বিরুদ্ধেও উঠেছে সমালোচনা।কিন্তু ঘটনা মর্মান্তিক হলেও কোন অভিযোগ না হবার কারনে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিতে পারছেন না বলে দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে চলতি মাসের ৩রা জুন মঙ্গলবার নওমুসলিম গৃহবধূ খাদিজা আদরি অসুস্থ হলে কৃষ্ণপুর গ্রামের পশু চিকিৎসক মোবারক আলী রোগির শরীরে স্যালাইন দেন এবং হাবিবুর নামের আরেকজন ইনজেকশন পুশ করেন। সঙ্গে সঙ্গে রোগী বুক জলছে বলে ছটপট করতে থাকেন। এসময় দুই চিকিৎসক স্যালাইন ইনজেকশন শরীর থেকে খুলে দ্রুত কৃষ্ণপুর বাজারের আরেক চিকিৎসক রেজাউলের কাছে নিয়ে যান। কিন্তু রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি মেডিক্যালে নিয়ে যাবার পরামর্শ দেন। মেডিকেলে নেবার কিছুক্ষন পরেই মারা যান অসহায় গৃহবধূ খাতিজা বেওয়া।
তবে হাবিবুর রহমান হাবিব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান রোগীর মৃত্যু হয়েছে মেডিকেলে। আমি নিজ খরচে তাঁর মরদেহ নিয়ে ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের পরামর্শে দাফন করা হয়েছে। আপনি মৃত্যুর দিনেই খাতিজার বাড়িতে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আরেকজন ব্যাক্তিকে তুলে দিয়েছেন কেন এমন প্রশ্ন করা হলে টাকার বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন বাড়িটি ফাকা পড়ে থাকত এজন্য আরেকজন নও মুসলিমকে বাড়িতে তুলে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান পশু চিকিৎসক হয়ে কিভাবে মানুষের চিকিৎসা করে।
তাঁর ভুল চিকিৎসার কারনেই গৃহবধূ খাতিজার মৃত্যু হয়েছে। আবার তাঁর মৃত্যু হওয়া মাত্রই চেয়ারম্যানের আনুসারি হাবিবুর খাতিজার বাড়িতে অন্য আরেক ব্যাক্তিকে তুলে দেন। নাম প্রকাশ না করে এক ব্যাক্তি জানান আমারতো মনে হয় হাবিবুর টাকার বিনিময়ে বাড়িতে লোক তুলে দিয়েছেন। নাহলে মৃত্যুর সাথে সাথে তিনি কেন বাড়িতে লোক তুলবেন। অবশ্যই এখানে কোন ঘটনা আছে। পশু চিকিৎসক মোবারক জানান আমার চিকিৎসা দেয়া ভুল হয়েছে বলে দায় সারেন।আবার খাদিজার মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। আসলে অসহায় ব্যাক্তিদের জন্য বিচার নাই, আছে প্রভাবশালীদের জন্য। যার ফলে এত দিনেও কোন ব্যবস্থা হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এবিষয়ে পাঁচন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বলেন, খাদিজার সাভাবিক মৃত্যু হবার কারনে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, এবিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে মৃত খাদিজার আত্মীয় স্বজনরা অভিযোগ করলে কবর থেকে লাশ উত্তলন করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মর্গে পাঠানো হবে ও ঘটনাটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যব¯’া গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।