রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ বাজারে প্রতি বছরের ন্যায় বান্নি মেলা উপলক্ষে মন্দিরে লীলাকির্তনের ছামিয়ানা ও চেয়ার টেবিল ভাংচুর করায় হিন্দু সম্প্রদয়ের তোপের মুখে পড়েছেন থানার ওসি বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে ভাংচুর ক ছামিয়ানা ছিড়ার ঘটনা ঘটে। পরদিন শনিবার পুনরায় ওসি ভাঙ্গতে গেলে কয়েকগ্রামের হিন্দু সম্প্রদয়ের লোকজন ওসিকে ঘিরে ধরেন এবং শাস্তির দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন।
পরে সহকারী পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবতির হস্তক্ষেপে পরিবেশ শান্ত হয়। এঘটনায় ওসির প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত লীলা কীর্তন করবেন না বলে ঘোষনা দেন হিন্দু সম্প্রদয়ের লোকজন। শনিবার বিকেলের দিকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, এমপি, ডিসি ও ইউপি চেয়ারম্যানের আশ্বাসে ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্বান্ত নেয়। ফলে একজন ওসির এমন খাম খেয়ালী ও কান্ডজ্ঞান হীন কাজের জন্য চরম বিব্রত। ঘটনাটি টক অব দ্যা তানোরে পরিনত হয়েছে।
জানা গেছে, যুগযুগ ধরে উপজেলার কামারগাঁ বাজারে বান্নি মেলা ও পার্শ্বে মন্দিরে তিনদিন ব্যাপী লীলা কীর্তন হয়। বান্নি মেলা উপজেলা ভূমি অফিস থেকে নিলাম হয়। এবারে নিলাম পায় কামারগাঁ বাজারের বাসিন্দা যুবলীগ নেতা রবিউল ইসলাম।
তিনি জানান, গত শনিবার রাতে থানার ওসি আমাকে মোবাইল করে অকাথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। এরপর রাতেই এসে মেলার বিভিন্ন দোকান ভাংচুর ও মন্দিরে লীলাকীর্তনের ছামিয়ানা ছিড়ে হিন্দু সম্প্রদয়ের লোকজনকেও গালিগালাজ করেন। এসংবাদ পেয়ে হিন্দু সম্প্রদয়ের লোক চরম উত্তেজিত হয়ে উঠেন। রবিবার পুনরায় ওসি মন্দিরের ছামিয়ানাসহ বিভিন্ন আসবাব পত্র ভাঙ্গতে শুরু করে ওসি কে ঘিরে ফেলেন।
মন্দির কমিটির সভাপতি মনোরঞ্জন জানান, বাব দাদার আমল থেকে লীলাকীর্তন হয়ে আসছে। কিন্তু ওসি কোন কিছু না বলে আক্রোশ মুলুক ভাবে ভাংচুর করেন। আমরা কয়েকগ্রামের লোকজন ওসির শাস্তি ও বদলী না হওয়া পর্যন্ত ধর্মীয় কাজ করব না। কিন্তু সহকারী পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবতি আইনগত ভাবে ওসির শাস্তির আশ্বাস দিয়ে আমাদেরকে ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলেন।
শুধু তিনি না এমপি এবং ইউপি চেয়ারম্যানও আমাদের ধর্মীয় কাজ করতে বলেছেন। আমরা সবার কথায় ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করব। কিন্তু ওসির শাস্তি না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
থানার ওসি কামরুজ্জামান মিয়ার সরকারি মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলে রিসিভ করেন নি।
সহকারী পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবতি জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে, হিন্দু সম্প্রদয়ের লোকজনকে ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলা হয়েছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে ওসির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।