ঢাকা ০৬:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ৮ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

তানোরে হাটের কোটি টাকার দোকান উচ্ছেদের পরিবর্তে চাবি হস্তান্তর

রাজশাহীর তানোর উপজেলার কৃষ্ণপুর হাটের কোটি টাকা মুল্যের জায়গার পাকা মার্কেট উচ্ছেদের নোটিশ পাবার পরও উচ্ছেদ এবং কোন ধরনের শুনানি না করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার সুশান্ত কুমার মাহাতোকে ভুল বুঝিয়ে এবং করোনাভাইরাসের সুযোগে ভুমি অফিসের নাজির শহাহিনুর রহমান মার্কেট মালিক কে চাবি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার পাচন্দর ইউপির কৃষ্ণপুর বাজারে ওই গ্রামের প্রভাবশালী মাহতাব শিক্ষক আলতাব এবং রানা ইট দিয়ে মার্কেট নির্মাণ করে দেদারসে ব্যবসা করছেন।

অথচ এর আগের ইউএনও এবং দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ভুমি নাসরিন বানু চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অবৈধ দখলদার নোটিশ দিয়ে জানান ৯৮ নং কৃষ্ণপুর মৌজার প্রস্তাবিত ৬১২ নং খতিয়ানে অবৈধ ভাবে ইট দ্বারা দোকান ঘর নির্মাণ করেছেন মর্মে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এঅবস্থায় নোটিশ প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ না করলে ১৯৭৮ সালে ভুমি এবং বিল্ডিং আইনে আপনাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে। তিনি বদলি হয়ে যাবার পর করোনার সুযোগে অভিযোগ কারিকে অবহিত বা শুনানি না করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে গত প্রায় এক সপ্তাহ আগে দোকান মালিক মাহতাবকে চাবি দিয়েছেন বলে অভিযোগ কারী এই প্রতিবেদককে অবহিত করেন। চাবি দেবার ঘটনা জানার পর কৃষ্ণপুরগ্রামের আব্দুর রব চলতি মাসের ৩ তারিখে অধিকতর শুনানির জন্য সহকারী কমিশনার বরাবর আবেদন করেছেন।

অভিযোগকারী রব জানান যেখানে উচ্ছেদের নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং উচ্ছেদ না হলে ফৌজদারি আইনে মামলার নির্দেশনা দেন তৎকালীন ইউএনও দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ভুমি নাসরিন বানু। তিনি বদলি হয়ে যাবার পর করোনার সুযোগে ভুমি অফিসের নাজির নিজ ক্ষমতা বলে আইন অমান্য করে বর্তমান ইউএনও এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ভুমি সুশান্ত কুমার মাহাতোকে ভুল বুঝিয়ে অবৈধ দোকান মালিক মাহতাবের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বন্ধ দোকানের চাবি দিয়েছেন।

তিনি আরো অবৈধ দখলদার দলিলে অভার রাইটিং করে ৫৮৯ দাগকে ৫৮৪ বানিয়েছেন। হাটের প্রায় এক একর ৩৯ শতক জমি বিগত প্রায় ২৩ বছর আগে খারিজ হয়েছে। যার খারিজ কেস নম্বর ৬০৫/১-৪/ ১৯৯৭-৯৮, তারিখ ৩১/১২/১৯৯৭। প্রস্তাবিত খতিয়ান ৬১২ হিসাব নম্বর ৬৩০, কৃষ্ণপুর বাজার বাধা দরগা, পক্ষে বরাবর বরাবর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) রাজশাহী। ১২ বছর পার হলে খারিজ বাতিলের এখতিয়ার থাকে এডিসির।

অভিযোগে উল্লেখ উচ্ছেদের নোটিশ প্রাপ্তির পরও উচ্ছেদ না করে গত মার্চ মাসের ৪ তারিখে শুনানির জন্য অভিযোগ কারী আব্দুর রব কে মৌখিক ভাবে অবহিত করা হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে শুনানি না করে জালিয়াতির মাধ্যমে বিবাদী মাহতাব কে চাবি দেয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ রুপে আইন বিরোধী।

বিষয়টি সম্পর্কে ইউএনওকে অবহিত করেন আব্দুর রব। তাঁর কথার প্রেক্ষিতে ইউএনও তাকে অধিকতর শুনানির জন্য লিখিত আবেদন করতে বলেন।

স্থানীয়রা জানান আদিকাল থেকে জেনে আসছি এসব হাটের জায়গা। কিন্তু মাহতাব প্রভাব শালী হবার কারনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পাকা মার্কেট নির্মাণ করেন। আমরা অনেক আগেই শুনলাম সবকিছু উচ্ছেদ হবে এখন দেখছি দেদারসে তাঁরা ব্যবসা করছেন।দখলদার মাহতাব জানান জায়গাটি আমাদের নিজস্ব ভুল করে খারিজ হয়েছিল।

উপ সহকারী ভুমি কর্মকর্তা রবিউল জানান সম্পূর্ণ জায়গা হাটের, আমি সরেজমিনে মাপযোগ করে দেখে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।
ভুমি অফিসের নাজির শাহিনুরের ব্যাক্তিগত ০১৭১৪-৫৪০৪৩০ নম্বরে ফোন দিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান আমি মোবাইল কোর্টে আছি পরে কথা বলা যাবে। তাকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে পুনরায় ফোন দেয়া হলে রিসিভ করেননি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন অভিযোগ কারীর কাছ থেকে সব কিছু শুনে তাকে অধিকতর শুনানির জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে, তিনি আবেদনও করেছেন উভয় পক্ষকে নিয়ে শুনানি শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

আপলোডকারীর তথ্য

তানোরে হাটের কোটি টাকার দোকান উচ্ছেদের পরিবর্তে চাবি হস্তান্তর

আপডেট সময় : ০৯:৪১:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন ২০২০

রাজশাহীর তানোর উপজেলার কৃষ্ণপুর হাটের কোটি টাকা মুল্যের জায়গার পাকা মার্কেট উচ্ছেদের নোটিশ পাবার পরও উচ্ছেদ এবং কোন ধরনের শুনানি না করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার সুশান্ত কুমার মাহাতোকে ভুল বুঝিয়ে এবং করোনাভাইরাসের সুযোগে ভুমি অফিসের নাজির শহাহিনুর রহমান মার্কেট মালিক কে চাবি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার পাচন্দর ইউপির কৃষ্ণপুর বাজারে ওই গ্রামের প্রভাবশালী মাহতাব শিক্ষক আলতাব এবং রানা ইট দিয়ে মার্কেট নির্মাণ করে দেদারসে ব্যবসা করছেন।

অথচ এর আগের ইউএনও এবং দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ভুমি নাসরিন বানু চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অবৈধ দখলদার নোটিশ দিয়ে জানান ৯৮ নং কৃষ্ণপুর মৌজার প্রস্তাবিত ৬১২ নং খতিয়ানে অবৈধ ভাবে ইট দ্বারা দোকান ঘর নির্মাণ করেছেন মর্মে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এঅবস্থায় নোটিশ প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ না করলে ১৯৭৮ সালে ভুমি এবং বিল্ডিং আইনে আপনাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে। তিনি বদলি হয়ে যাবার পর করোনার সুযোগে অভিযোগ কারিকে অবহিত বা শুনানি না করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে গত প্রায় এক সপ্তাহ আগে দোকান মালিক মাহতাবকে চাবি দিয়েছেন বলে অভিযোগ কারী এই প্রতিবেদককে অবহিত করেন। চাবি দেবার ঘটনা জানার পর কৃষ্ণপুরগ্রামের আব্দুর রব চলতি মাসের ৩ তারিখে অধিকতর শুনানির জন্য সহকারী কমিশনার বরাবর আবেদন করেছেন।

অভিযোগকারী রব জানান যেখানে উচ্ছেদের নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং উচ্ছেদ না হলে ফৌজদারি আইনে মামলার নির্দেশনা দেন তৎকালীন ইউএনও দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ভুমি নাসরিন বানু। তিনি বদলি হয়ে যাবার পর করোনার সুযোগে ভুমি অফিসের নাজির নিজ ক্ষমতা বলে আইন অমান্য করে বর্তমান ইউএনও এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ভুমি সুশান্ত কুমার মাহাতোকে ভুল বুঝিয়ে অবৈধ দোকান মালিক মাহতাবের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বন্ধ দোকানের চাবি দিয়েছেন।

তিনি আরো অবৈধ দখলদার দলিলে অভার রাইটিং করে ৫৮৯ দাগকে ৫৮৪ বানিয়েছেন। হাটের প্রায় এক একর ৩৯ শতক জমি বিগত প্রায় ২৩ বছর আগে খারিজ হয়েছে। যার খারিজ কেস নম্বর ৬০৫/১-৪/ ১৯৯৭-৯৮, তারিখ ৩১/১২/১৯৯৭। প্রস্তাবিত খতিয়ান ৬১২ হিসাব নম্বর ৬৩০, কৃষ্ণপুর বাজার বাধা দরগা, পক্ষে বরাবর বরাবর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) রাজশাহী। ১২ বছর পার হলে খারিজ বাতিলের এখতিয়ার থাকে এডিসির।

অভিযোগে উল্লেখ উচ্ছেদের নোটিশ প্রাপ্তির পরও উচ্ছেদ না করে গত মার্চ মাসের ৪ তারিখে শুনানির জন্য অভিযোগ কারী আব্দুর রব কে মৌখিক ভাবে অবহিত করা হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে শুনানি না করে জালিয়াতির মাধ্যমে বিবাদী মাহতাব কে চাবি দেয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ রুপে আইন বিরোধী।

বিষয়টি সম্পর্কে ইউএনওকে অবহিত করেন আব্দুর রব। তাঁর কথার প্রেক্ষিতে ইউএনও তাকে অধিকতর শুনানির জন্য লিখিত আবেদন করতে বলেন।

স্থানীয়রা জানান আদিকাল থেকে জেনে আসছি এসব হাটের জায়গা। কিন্তু মাহতাব প্রভাব শালী হবার কারনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পাকা মার্কেট নির্মাণ করেন। আমরা অনেক আগেই শুনলাম সবকিছু উচ্ছেদ হবে এখন দেখছি দেদারসে তাঁরা ব্যবসা করছেন।দখলদার মাহতাব জানান জায়গাটি আমাদের নিজস্ব ভুল করে খারিজ হয়েছিল।

উপ সহকারী ভুমি কর্মকর্তা রবিউল জানান সম্পূর্ণ জায়গা হাটের, আমি সরেজমিনে মাপযোগ করে দেখে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।
ভুমি অফিসের নাজির শাহিনুরের ব্যাক্তিগত ০১৭১৪-৫৪০৪৩০ নম্বরে ফোন দিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান আমি মোবাইল কোর্টে আছি পরে কথা বলা যাবে। তাকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে পুনরায় ফোন দেয়া হলে রিসিভ করেননি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন অভিযোগ কারীর কাছ থেকে সব কিছু শুনে তাকে অধিকতর শুনানির জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে, তিনি আবেদনও করেছেন উভয় পক্ষকে নিয়ে শুনানি শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।