ঢাকা ০৯:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ১৭ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

পরিবারিক পরিচয়ে নয় মেধা ও যোগ্যতায় নারীকে এগিয়ে যেতে হবে

পরিবারিক পরিচয়ে নয় বরং মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই নারীকে এগিয়ে যেতে হবে। অর্থের প্রভাবে অনেক ব্যবসায়ী পার্লামেন্টে যাচ্ছে, ভোট কিনে ফেলছে। পিতা-মাতা, দাদা-নানার পরিচয়েও নমিনেশন দেওয়া হচ্ছে। পাওয়ার গেমে টিকে থাকতে হলে বুদ্ধিমত্তা ও কৌশলের সাথে নারীকে দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার বিকল্প নাই। পুরুষের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নারীর ক্ষমতায়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। নারী-পুরুষের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দুর করতে গণতন্ত্রের সাথে সমতন্ত্র কায়েম করতে হবে। একই সাথে উন্নয়নের স্বার্থে নারী-পুরুষ বৈষম্য বিলোপ প্রয়োজন। আদালতের আদেশে সন্তানের পরিচয়ের জন্য শুধুমাত্র মায়ের নাম লিপিবদ্ধ করা যাচ্ছে।

যা নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার দৃষ্টান্ত। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শির্ক্ষার্থী ফুলপরীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের প্রতিকারে ফৌজদারী আদালতে মামলা করার জন্য আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতো মানবাধিকার সংগঠগুলোর সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। আজ (০৬ মাচর্, ২০২৩ সোমবার) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নারী দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে দৈনিক ইত্তেফাক ও পাক্ষিক অনন্যা’র সম্পাদক তাসমিমা হোসেন এসব কথা বলেন।

রাজধানীর বাংলাদেশ চলচিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাই নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রধান অন্তরায় শীর্ষক বিষয়ে সরকারি বাঙলা কলেজকে পরাজিত করে ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, নারী পুরুষের মতো পূর্ন মানবসন্তান হিসেবে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু সমাজের তৈরী প্রথা, নিয়ম-কানুন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, আইন, ধর্ম একজন নারীকে পূর্ন মানবের পরিবর্তে অর্ধ মানব বানিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।

সর্বস্তরে নারীর সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। পূরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা, ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থনৈতিক বৈষম্য, তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার, যৌতুক প্রথা, বাল্যবিবাহ, নারীর ক্ষমতার অপর্যাপ্ততা, মূল্যবোধের অভাব, ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা, বিচারের ধীরগতিসহ সমাজের সর্বস্থরে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত না হওয়ার কারণে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়াচ্ছে। ফলে নারী নীপিড়ন বাড়ছে।

কোন ধর্মই নারীকে ছোট করার কথা বলেনি। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে নারীকে অপমান করা আইন করে বন্ধ করা উচিত। ধর্মের ভুল ব্যাখ্যার মাধ্যমে নারীকে অবমাননা করার বিরূদ্ধে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে। নারীর রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় নির্বচনে এক তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোয়ন দেওয়া উচিত। ধর্মীয় বিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ছেলে সন্তানের পাশাপাশি মেয়ে সন্তানের সম্পত্তি প্রাপ্তিতে সমতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এছাড়াও নারী দিবসের এ আয়োজনে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারমন্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ১০ দফা সুপারিশ করেন।

পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাই নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রধান অন্তরায় শীর্ষক বিষয়ে সরকারি বাঙলা কলেজকে পরাজিত করে ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়। নারী দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক ড. শাকিলা জেসমিন, সাংবাদিক রোকসানা আনজুমান নিকল ও নিউজ প্রেজেন্টার সিফাত শারমিন। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

পরিবারিক পরিচয়ে নয় মেধা ও যোগ্যতায় নারীকে এগিয়ে যেতে হবে

আপডেট সময় : ১১:৪৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ মার্চ ২০২৩

পরিবারিক পরিচয়ে নয় বরং মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই নারীকে এগিয়ে যেতে হবে। অর্থের প্রভাবে অনেক ব্যবসায়ী পার্লামেন্টে যাচ্ছে, ভোট কিনে ফেলছে। পিতা-মাতা, দাদা-নানার পরিচয়েও নমিনেশন দেওয়া হচ্ছে। পাওয়ার গেমে টিকে থাকতে হলে বুদ্ধিমত্তা ও কৌশলের সাথে নারীকে দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার বিকল্প নাই। পুরুষের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নারীর ক্ষমতায়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। নারী-পুরুষের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দুর করতে গণতন্ত্রের সাথে সমতন্ত্র কায়েম করতে হবে। একই সাথে উন্নয়নের স্বার্থে নারী-পুরুষ বৈষম্য বিলোপ প্রয়োজন। আদালতের আদেশে সন্তানের পরিচয়ের জন্য শুধুমাত্র মায়ের নাম লিপিবদ্ধ করা যাচ্ছে।

যা নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার দৃষ্টান্ত। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শির্ক্ষার্থী ফুলপরীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের প্রতিকারে ফৌজদারী আদালতে মামলা করার জন্য আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতো মানবাধিকার সংগঠগুলোর সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। আজ (০৬ মাচর্, ২০২৩ সোমবার) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নারী দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে দৈনিক ইত্তেফাক ও পাক্ষিক অনন্যা’র সম্পাদক তাসমিমা হোসেন এসব কথা বলেন।

রাজধানীর বাংলাদেশ চলচিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাই নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রধান অন্তরায় শীর্ষক বিষয়ে সরকারি বাঙলা কলেজকে পরাজিত করে ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, নারী পুরুষের মতো পূর্ন মানবসন্তান হিসেবে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু সমাজের তৈরী প্রথা, নিয়ম-কানুন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, আইন, ধর্ম একজন নারীকে পূর্ন মানবের পরিবর্তে অর্ধ মানব বানিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।

সর্বস্তরে নারীর সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। পূরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা, ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থনৈতিক বৈষম্য, তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার, যৌতুক প্রথা, বাল্যবিবাহ, নারীর ক্ষমতার অপর্যাপ্ততা, মূল্যবোধের অভাব, ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা, বিচারের ধীরগতিসহ সমাজের সর্বস্থরে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত না হওয়ার কারণে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়াচ্ছে। ফলে নারী নীপিড়ন বাড়ছে।

কোন ধর্মই নারীকে ছোট করার কথা বলেনি। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে নারীকে অপমান করা আইন করে বন্ধ করা উচিত। ধর্মের ভুল ব্যাখ্যার মাধ্যমে নারীকে অবমাননা করার বিরূদ্ধে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে। নারীর রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় নির্বচনে এক তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোয়ন দেওয়া উচিত। ধর্মীয় বিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ছেলে সন্তানের পাশাপাশি মেয়ে সন্তানের সম্পত্তি প্রাপ্তিতে সমতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এছাড়াও নারী দিবসের এ আয়োজনে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারমন্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ১০ দফা সুপারিশ করেন।

পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাই নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রধান অন্তরায় শীর্ষক বিষয়ে সরকারি বাঙলা কলেজকে পরাজিত করে ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়। নারী দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক ড. শাকিলা জেসমিন, সাংবাদিক রোকসানা আনজুমান নিকল ও নিউজ প্রেজেন্টার সিফাত শারমিন। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।