ঢাকা ১০:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ১৭ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

কোন দেশ থেকে হজে যেতে কত খরচ?

চলতি বছর হজে যেতে নির্দিষ্ট কোটা পূরণ না হওয়ায় তৃতীয়বারের মতো নিবন্ধনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। এক সপ্তাহ বাড়িয়ে নতুন সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ মার্চ। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন হজ হতে পারে।তবে এই বছরে হজে যেতে বাংলাদেশের যে কোটা রয়েছে, এখনো তার অর্ধেকও পূরণ হয়নি।

যদিও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, শেষ সপ্তাহে অনেক আগ্রহী নিবন্ধন করবেন।বাংলাদেশ থেকে চলতি বছর হজে যেতে পারবেন এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেতে পারবেন ১৫ হাজার ব্যক্তি, বাকিদের যেতে হবে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।

তবে যারা হজে যেতে চান তারা বলছেন, এই বছর হজের খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিবন্ধন করা নিয়ে জটিলতায় পড়েছেন।

হজ এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বা হাব জানিয়েছে, ৮ মার্চ পর্যন্ত সরকারিভাবে নয় হাজার আর বেসরকারিভাবে ৬০ হাজার মানুষ হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন।

হজের কোন খাতে কত খরচ?
বাংলাদেশ থেকে ২০২৩ সালে হজের জন্য সরকারিভাবে হজ প্যাকেজ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। অন্যদিকে বেসরকারি খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা।

গত বছরেও সরকারিভাবে হজে যেতে প্যাকেজ ধরা হয়েছিল ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। গত বছর কোরবানি ছাড়া প্যাকেজের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৪৯ টাকা।

অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে এই বছরে হজের খরচ দেড় লাখ থেকে প্রায় ২ লাখ ২১ হাজার পর্যন্ত বেড়েছে।

এর আগে ২০২০ সালে এই প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছিল জনপ্রতি ৩ লাখ ৬১ হাজার ৮০০ টাকা।

ধর্ম মন্ত্রণালয় ২০২৩ সালের হজের খরচের যে হিসাব দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে-

বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা।
মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়া ২ লাখ ৪ হাজার ৪৪৪ টাকা।
জেদ্দা, মক্কা, মদিনা-মুযদালিফা,আল-মাশায়েরের পরিবহন ব্যয় ৩৫ হাজার ১৬২ টাকা।
বাস সার্ভিস ২ হাজার ৮৩৯ টাকা।
জমজম পানি ৪২৫ টাকা।
তাঁবু, ম্যাট্রেস, বিছানা, চাদর, বালিশ কম্বল, খাবার সরবরাহে মোয়াল্লেম সেবার সার্ভিস চার্জ ১ লাখ ৬০ হাজার ৬৩০ টাকা।

মক্কায় লাগেজ পরিবহন ৫৮৭ টাকা।
মক্কা-মদিনা-আরাফাত-মুজদালিফা-মিনা-মক্কা বাস ভাড়া ১৯ হাজার ৩৩৩ টাকা।
দেশে ফেরার সময় মক্কা-মদিনা থেকে লাগেজ পরিবহন ৮৫১ টাকা।
ভিসা ফি ৮ হাজার ৫১৭ টাকা।
স্বাস্থ্য বীমা বাবদ সৌদি সরকারকে দেয়া ফি ৯৪৬ টাকা।
আইটি কার্ড, লাগেজ ট্যাগিং, আইটি সার্ভিস ইত্যাদি ৮০০ টাকা।
হজযাত্রীদের কল্যাণ তহবিল ২০০ টাকা।
প্রশিক্ষণ ফি ৩০০ টাকা।
খাওয়া খরচ ৩৫ হাজার টাকা।
হজ গাইড ১৫ হাজার ১৭৮ টাকা।

যে কারণে বেড়েছে হজের খরচ
সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছরে ডলারের দাম বৃদ্ধি, বিমান ভাড়া বেড়ে যাওয়া, সৌদি আরবে খরচ বেড়ে যাওয়ায় হজ প্যাকেজে বাড়িয়ে ধরতে হয়েছে।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মতিউল ইসলাম বলেন, ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধি, বিমান ভাড়া বেড়ে যাওয়া আর সৌদি আরবে মোয়াল্লেমসহ নানা খরচ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের সরকারকেও বাধ্য হয়ে হজের খরচ বাড়াতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের হাজিরা মক্কা-মদিনার কেন্দ্রস্থলে থাকতে চান, যাতে যাতায়াতে সুবিধা হয়। যেমন মদিনায় আমরা মারকাজি এলাকায় হাজিদের রাখার ব্যবস্থা করি। এই কারণে আমাদের খরচ বেশি পড়ে যায়।

তবে অতিরিক্ত সচিব মোঃ মতিউল ইসলাম বলেন, অন্যসব বছরের তুলনায় এই বছরে সৌদি আরবে খাবার, মোয়াল্লেম, আবাসনসহ সব খরচ বেড়েছে। বিমান ভাড়াও অনেক বেশি। এসব কারণে হজ প্যাকেজের খরচ বাড়াতে হয়েছে।

হাবের মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার বলেন, সৌদি আরবে সব খরচ বেড়ে যাওয়া, ডলারের বিনিময় মূল্য আর বিমান ভাড়া অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণে হজের খরচ বেশি বেড়েছে। সৌদি আরবের খরচ নিয়ে আমাদের তো কিছু করার নেই। কিন্তু বিমান ভাড়ার কারণে আমাদের খরচ বেড়ে যায়।

তিনি বলছেন, পাকিস্তান বা ভারত থেকে সৌদি আরবে ফ্লাইং দূরত্ব কম হওয়ায় বিমান ভাড়াও কম হয়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ বিমানও হজের সময় মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে থাকে। তারা বিমান ভাড়া কম নিলে হজের খরচও কমে যেতো।

অবশ্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বলছে, সার্বিক পরিস্থিতি ও খরচ বিবেচনা করেই বিমান ভাড়া ঠিক করা হয়েছে যাতে বিমানের লাভ হবে না, তবে লোকসান এড়ানো সম্ভব হবে।

তবে এভিয়েশন বিশ্লেষকরা মনে করেন, হজ যাত্রীদের জিম্মি করে বিমান বাংলাদেশ ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সকে ব্যবসার সুযোগ করে দেয়ার জন্যই ভাড়া আকাশচুম্বী করা হয়েছে।

কোন দেশে হজের খরচ কেমন?
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নানারকম বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর এবার আবার সারা বিশ্ব থেকে মুসলমানরা হজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। এবার মোট ১০ লাখ মানুষ হজ করবেন।

তবে বিভিন্ন দেশের খরচ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবার সব দেশেই তুলনামূলকভাবে হজের খরচ বেড়েছে।

ইন্দোনেশিয়া থেকে একজন মুসলমানকে হজে যেতে হলে খরচ করতে হবে ৩ হাজার ৩০০ ডলার বা ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৩৪৭ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি। বাকিটা সরকারি ‘হজ ফান্ড ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি’ তহবিল থেকে ভর্তুকি দেয়া হবে।
মালয়েশিয়ায় যেসব পরিবারের মাসিক আয় ৯৬ হাজার টাকার কম, সেইসব পরিবারের সদস্যদের জন্য হজের খরচ ধরা হয়েছে দুই লাখ ১৮ হাজার ৭৫৪ টাকা। মাসিক আয় এর বেশি হলে দিতে হবে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা।

দেশটিতে হজের জন্য সরকার বড় অংকের ভর্তুকি দিয়ে থাকে। তবে প্রাইভেট হজ প্যাকেজগুলো বাংলাদেশি টাকায় নয় লাখ টাকা থেকে শুরু হয়েছে।

পাকিস্তানে গত বছরের তুলনায় হজের খরচ ৩৬.৫৯ শতাংশ বাড়িয়ে ১১ লাখ ৭০ হাজার পাকিস্তানি রূপি বা বাংলাদেশি টাকায় ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৬১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভারতে হজের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হলেও, চূড়ান্ত খরচের হিসাব এখনো জানানো হয়নি। তবে ২০২১ সালে এই খরচ ছিল বাংলাদেশি টাকায় চার লাখ ২৩ হাজার ৫৭১ টাকা। তবে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, হজ প্যাকেজের খরচ ৫০ হাজার টাকা কমানো হবে। অর্থাৎ সেদেশে হজ কমিটি অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে যারা যাবেন, তাদের খরচ হবে চার লাখ টাকার কম।

সিঙ্গাপুরে হজের খরচ গত বছরের তুলনায় প্রায় দেড় হাজার ডলার বেড়েছে। সেখানে সবচেয়ে কম প্যাকেজের জন্য দিতে হবে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৯২০ টাকা।

সূত্র: বিবিসি

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

কোন দেশ থেকে হজে যেতে কত খরচ?

আপডেট সময় : ১১:৫৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০২৩

চলতি বছর হজে যেতে নির্দিষ্ট কোটা পূরণ না হওয়ায় তৃতীয়বারের মতো নিবন্ধনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। এক সপ্তাহ বাড়িয়ে নতুন সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ মার্চ। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন হজ হতে পারে।তবে এই বছরে হজে যেতে বাংলাদেশের যে কোটা রয়েছে, এখনো তার অর্ধেকও পূরণ হয়নি।

যদিও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, শেষ সপ্তাহে অনেক আগ্রহী নিবন্ধন করবেন।বাংলাদেশ থেকে চলতি বছর হজে যেতে পারবেন এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেতে পারবেন ১৫ হাজার ব্যক্তি, বাকিদের যেতে হবে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।

তবে যারা হজে যেতে চান তারা বলছেন, এই বছর হজের খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিবন্ধন করা নিয়ে জটিলতায় পড়েছেন।

হজ এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বা হাব জানিয়েছে, ৮ মার্চ পর্যন্ত সরকারিভাবে নয় হাজার আর বেসরকারিভাবে ৬০ হাজার মানুষ হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন।

হজের কোন খাতে কত খরচ?
বাংলাদেশ থেকে ২০২৩ সালে হজের জন্য সরকারিভাবে হজ প্যাকেজ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। অন্যদিকে বেসরকারি খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা।

গত বছরেও সরকারিভাবে হজে যেতে প্যাকেজ ধরা হয়েছিল ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। গত বছর কোরবানি ছাড়া প্যাকেজের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৪৯ টাকা।

অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে এই বছরে হজের খরচ দেড় লাখ থেকে প্রায় ২ লাখ ২১ হাজার পর্যন্ত বেড়েছে।

এর আগে ২০২০ সালে এই প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছিল জনপ্রতি ৩ লাখ ৬১ হাজার ৮০০ টাকা।

ধর্ম মন্ত্রণালয় ২০২৩ সালের হজের খরচের যে হিসাব দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে-

বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা।
মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়া ২ লাখ ৪ হাজার ৪৪৪ টাকা।
জেদ্দা, মক্কা, মদিনা-মুযদালিফা,আল-মাশায়েরের পরিবহন ব্যয় ৩৫ হাজার ১৬২ টাকা।
বাস সার্ভিস ২ হাজার ৮৩৯ টাকা।
জমজম পানি ৪২৫ টাকা।
তাঁবু, ম্যাট্রেস, বিছানা, চাদর, বালিশ কম্বল, খাবার সরবরাহে মোয়াল্লেম সেবার সার্ভিস চার্জ ১ লাখ ৬০ হাজার ৬৩০ টাকা।

মক্কায় লাগেজ পরিবহন ৫৮৭ টাকা।
মক্কা-মদিনা-আরাফাত-মুজদালিফা-মিনা-মক্কা বাস ভাড়া ১৯ হাজার ৩৩৩ টাকা।
দেশে ফেরার সময় মক্কা-মদিনা থেকে লাগেজ পরিবহন ৮৫১ টাকা।
ভিসা ফি ৮ হাজার ৫১৭ টাকা।
স্বাস্থ্য বীমা বাবদ সৌদি সরকারকে দেয়া ফি ৯৪৬ টাকা।
আইটি কার্ড, লাগেজ ট্যাগিং, আইটি সার্ভিস ইত্যাদি ৮০০ টাকা।
হজযাত্রীদের কল্যাণ তহবিল ২০০ টাকা।
প্রশিক্ষণ ফি ৩০০ টাকা।
খাওয়া খরচ ৩৫ হাজার টাকা।
হজ গাইড ১৫ হাজার ১৭৮ টাকা।

যে কারণে বেড়েছে হজের খরচ
সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছরে ডলারের দাম বৃদ্ধি, বিমান ভাড়া বেড়ে যাওয়া, সৌদি আরবে খরচ বেড়ে যাওয়ায় হজ প্যাকেজে বাড়িয়ে ধরতে হয়েছে।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মতিউল ইসলাম বলেন, ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধি, বিমান ভাড়া বেড়ে যাওয়া আর সৌদি আরবে মোয়াল্লেমসহ নানা খরচ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের সরকারকেও বাধ্য হয়ে হজের খরচ বাড়াতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের হাজিরা মক্কা-মদিনার কেন্দ্রস্থলে থাকতে চান, যাতে যাতায়াতে সুবিধা হয়। যেমন মদিনায় আমরা মারকাজি এলাকায় হাজিদের রাখার ব্যবস্থা করি। এই কারণে আমাদের খরচ বেশি পড়ে যায়।

তবে অতিরিক্ত সচিব মোঃ মতিউল ইসলাম বলেন, অন্যসব বছরের তুলনায় এই বছরে সৌদি আরবে খাবার, মোয়াল্লেম, আবাসনসহ সব খরচ বেড়েছে। বিমান ভাড়াও অনেক বেশি। এসব কারণে হজ প্যাকেজের খরচ বাড়াতে হয়েছে।

হাবের মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার বলেন, সৌদি আরবে সব খরচ বেড়ে যাওয়া, ডলারের বিনিময় মূল্য আর বিমান ভাড়া অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণে হজের খরচ বেশি বেড়েছে। সৌদি আরবের খরচ নিয়ে আমাদের তো কিছু করার নেই। কিন্তু বিমান ভাড়ার কারণে আমাদের খরচ বেড়ে যায়।

তিনি বলছেন, পাকিস্তান বা ভারত থেকে সৌদি আরবে ফ্লাইং দূরত্ব কম হওয়ায় বিমান ভাড়াও কম হয়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ বিমানও হজের সময় মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে থাকে। তারা বিমান ভাড়া কম নিলে হজের খরচও কমে যেতো।

অবশ্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বলছে, সার্বিক পরিস্থিতি ও খরচ বিবেচনা করেই বিমান ভাড়া ঠিক করা হয়েছে যাতে বিমানের লাভ হবে না, তবে লোকসান এড়ানো সম্ভব হবে।

তবে এভিয়েশন বিশ্লেষকরা মনে করেন, হজ যাত্রীদের জিম্মি করে বিমান বাংলাদেশ ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সকে ব্যবসার সুযোগ করে দেয়ার জন্যই ভাড়া আকাশচুম্বী করা হয়েছে।

কোন দেশে হজের খরচ কেমন?
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নানারকম বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর এবার আবার সারা বিশ্ব থেকে মুসলমানরা হজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। এবার মোট ১০ লাখ মানুষ হজ করবেন।

তবে বিভিন্ন দেশের খরচ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবার সব দেশেই তুলনামূলকভাবে হজের খরচ বেড়েছে।

ইন্দোনেশিয়া থেকে একজন মুসলমানকে হজে যেতে হলে খরচ করতে হবে ৩ হাজার ৩০০ ডলার বা ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৩৪৭ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি। বাকিটা সরকারি ‘হজ ফান্ড ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি’ তহবিল থেকে ভর্তুকি দেয়া হবে।
মালয়েশিয়ায় যেসব পরিবারের মাসিক আয় ৯৬ হাজার টাকার কম, সেইসব পরিবারের সদস্যদের জন্য হজের খরচ ধরা হয়েছে দুই লাখ ১৮ হাজার ৭৫৪ টাকা। মাসিক আয় এর বেশি হলে দিতে হবে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা।

দেশটিতে হজের জন্য সরকার বড় অংকের ভর্তুকি দিয়ে থাকে। তবে প্রাইভেট হজ প্যাকেজগুলো বাংলাদেশি টাকায় নয় লাখ টাকা থেকে শুরু হয়েছে।

পাকিস্তানে গত বছরের তুলনায় হজের খরচ ৩৬.৫৯ শতাংশ বাড়িয়ে ১১ লাখ ৭০ হাজার পাকিস্তানি রূপি বা বাংলাদেশি টাকায় ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৬১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভারতে হজের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হলেও, চূড়ান্ত খরচের হিসাব এখনো জানানো হয়নি। তবে ২০২১ সালে এই খরচ ছিল বাংলাদেশি টাকায় চার লাখ ২৩ হাজার ৫৭১ টাকা। তবে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, হজ প্যাকেজের খরচ ৫০ হাজার টাকা কমানো হবে। অর্থাৎ সেদেশে হজ কমিটি অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে যারা যাবেন, তাদের খরচ হবে চার লাখ টাকার কম।

সিঙ্গাপুরে হজের খরচ গত বছরের তুলনায় প্রায় দেড় হাজার ডলার বেড়েছে। সেখানে সবচেয়ে কম প্যাকেজের জন্য দিতে হবে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৯২০ টাকা।

সূত্র: বিবিসি