পাবনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পাবনা কার্যালয়ের পরিদর্শক ও স্টাফদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ উঠেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পাবনা কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. আব্দুল মান্নান এর নির্দেশনায় উপ-পরিদর্শক মো. আফজাল হোসেন, সহকারি উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ শের আলম, মো. কামরুজ্জামান মন্ডল, সিপাই মো. মামুনার রশিদ এবং মো. আব্দুল ওহাব পারভেজ ব্যবসায়ীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নগদ টাকা চাঁদাবাজী করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
সূত্রমতে জানা যায়, পাবনা শহরের নয়নামতি মহল্লার জেনারেল ট্রয়লেট্রিজ’র সত্ত্বাধিকারী মো. ইকবাল হোসেন ব্যবসার জন্য গত ১৯’ মে রাজধানী ঢাকার মিডফোর্ড হতে ৪ড্রাম থিনার পাইকারী ক্রয় করেন। তার বৈধ চালান ও ব্যবসা পরিচালনার বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও যখন আমার সোনার বাংলা এজেন্সি দিলালপুর থেকে থিনারের ড্রাম তুলে তার নিজ এলাকার অফিস নয়নামতি নিয়ে যাওয়ার পথে আব্দুল হামিদ সড়কের বিনা সিনেমা হল মোড়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উল্লেখিত অফিসারগণ বহনকারী ভ্যান জব্দ করেন।
তারা বলেন এটা অবৈধ মাল তোমার মালিক কে ফোন দাও। ভ্যান চালক ভয়ে সত্ত্বাধিকারী মো. ইকবাল হোসেন কে ফোন দেয়। এ সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পাবনা কার্যালয়ের উপ-পরিদর্শক মো. আফজাল হোসেন মোবাইল নম্বর নিয়ে ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন এর সাথে কথা বলেন। অফিসার আফজাল ব্যবসায়ী ইকবাল কে বলেন আমার বসের (পরিদর্শক মো. আব্দুল মান্নান) সাথে কথা বলেন।
আপনার তো অবৈধ মাল ধরা পড়ছে। এটা থেকে ছাড় পেতে ৫ লক্ষ টাকা লাগবে। ঐ সময় ইকবাল হোসেন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তার একমাত্র মেয়ে অস্স্থু হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। এ অস্থায় ইকবালকে অফিসাররা ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রেসার করেন। অবশেষে ব্যবসায়ী ইকবাল ভয়ে ৫লক্ষ টাকা না দিয়ে, মেয়ের অসুস্থতার কথা বলে আকুতি মিনতি করেন। এক পর্যায়ে ইকবালের বাসায় গিয়ে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসেন অফিসাররা।
টাকা নেলদেনের বিষয়টি ইকবাল হোসেন ১২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজিব হোসেনকে অবগত করেন। তারপরও বিষয়টি এলাকার লোক মুখে জানাজানি হলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পাবনা কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. আব্দুল মান্নান ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেনকে উপ-পরিদর্শক মো. আফজাল হোসেন দিয়ে ফোন কলের মাধ্যমে আরও ভয়ভীতি দেখায়, ডিসি অফিসের অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে তার কোম্পানীর ব্যবসা ক্ষতি করার হুমকি দেয়। রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তবে ইকবালের মতো সাধারণ ব্যবসায়ী ভয় পাওয়টা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তারপর ইকবালের এক নিকট আত্মীয় বিষয়টি জানতে পেরে সাংবাদিকদের অবগত করেন।
সূত্রমতে আরও জানা যায়, পরিদর্শক মো. আব্দুল মান্নান কতিপয় অফিসারদের যোগসাজেসে দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের চাঁদাবাজী করে আসছেন, কিন্তু উপ-পরিদর্শক মো. আফজাল হোসেন পাবনা নতুন যোগদান করে কোন কিছু বোঝার আগেই ফেঁসে গেলেন।
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পাবনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক পারভীন আখতার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যত্যা নিশ্চিত করে বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমি দেরিতে হলেও জানতে পেরেছি। জানা মাত্রা এ বিষয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ পূর্বক প্রতিবেদন তৈরি করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরাধ প্রমানিত হলে চাঁদাবাজির সাথে জড়িত অফিসারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।