র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে নিয়ে উত্তরার একটি বাসায় অভিযানে চালাচ্ছে র্যাব। বুধবার বেলা ১২টার দিকে এ অভিযান শুরু হয় বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে সাহেদের প্রতারণার বেশ কিছু আলামত রয়েছে।
অভিযানে র্যাবের গোয়েন্দা ইউনিটের পাশাপাশি আছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। ওই বাড়িতে সাহেদ ও তার সহযোগীরা হুট করেই চলে আসরতো বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।
এর আগে ব্যাপক অভিযানে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেফতার হন এ প্রতারক। পরে তাকে ঢাকায় এনে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নেয়া হয় র্যাবের সদর দফতরে। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসবাদ শেষে অভিযানে নেমেছে র্যাব। যা আগেই জানিয়েছিলেন র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া ইউংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ।
এর আগে গ্রেফতারের পর হেলিকপ্টারযোগে সকাল ৯টার দিকে ঢাকায় আনা হয় রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটে ডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদকে।
সে সময়ই র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ জানান, ‘সাহেদ ছদ্মবেশে বোরকা পরে নৌকা দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। আমাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল। আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য পেয়ে তাকে গ্রেফতার করি। তার বাসা সাতক্ষীরায়। কিন্তু তিনি তারই জেলায় ছদ্মবেশে বিভিন্ন যানবাহনে চলাফেলা করেছিলেন।
জানা গেছে, বহুল আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতাল প্রতারণা মামলার প্রধান পলাতক আসামি সাহেদকে বুধবার ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদীর তীর সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তিন রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকালে সাহেদ বোরখা পরা অবস্থায় ছিলেন। এমনকি পালিয়ে থাকতে চুলে কালো রং করে এবং গোঁফ কেটে তিনি চেহারা বদলের চেষ্টা করেন। ভারতে পালিয়ে গিয়ে সাহেদ আত্মগোপন করতে মাথা ন্যাড়া করারও পরিকল্পনা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন র্যাবের কর্মকর্তারা।
এরআগে, করোনার নমুনা পরীক্ষায় প্রতারণার একই অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপের এমডি মাসুদ পারভেজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যার পর গাজীপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে করোনার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অনিয়ম ধরা পড়ায় ৭ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখা বন্ধ করে দেয়া হয়।
এর পরপরই রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. শাহেদকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা (মামলা নম্বর- ৫) করে র্যাব। এর মধ্যে শাহেদসহ ৯ জন গ্রেফতার রয়েছেন। ওই মামলায় শাহেদসহ নয়জনকে পলাতক হিসেবে এজাহারভুক্ত করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন-রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ (৪৩), ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজ (৪০), অ্যাডমিন আহসান হাবীব (৪৫), এক্সরে টেকনিশিয়ান হাসান (৪৯), মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট হাকিম আলী (২৫), রিসিপশনিস্ট কামরুল ইসলাম (৩৫), রিজেন্ট গ্রুপের প্রজেক্ট অ্যাডমিন রাকিবুল ইসলাম (৩৯), রিজেন্ট গ্রুপের এইচআর অ্যাডমিন অমিত অনিক (৩৩), গাড়িচালক আব্দুস সালাম (২৫), নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রশীদ খান জুয়েল (২৮), হাসপাতালের কর্মচারী তরিকুল ইসলাম (৩৩), স্টাফ আব্দুর রশিদ খান (২৯), স্টাফ শিমুল পারভেজ (২৫), কর্মচারী দীপায়ন বসু (৩২) এবং মাহবুব (৩৮)। দুদজনের নাম জানা যায়নি।