লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের আঘাতে নিহতের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ৭জনকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে আত্মসমর্পণ করতে এলে আদালতের বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২১ডিসেম্বর বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারামারা গ্রামে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোহার তৈরী লাঙ্গলের আঘাতে গুরুত্বর জখম হন ওই মসজিদের সভাপতি অলিয়ার রহমান (৭০)। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার সকালে সে মারা যায়।
পাটগ্রাম থানা সুত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের উফারমারা বায়তুল আমান নামক টিনশেড মসজিদটিতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় মসজিদটি সরিয়ে ছাঁদ ঢালাই করে নতুন মসজিদ ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় কমিটি। গত ২১ ডিসেম্বর সকালে প্রাথমিকভাবে বেজ ঢালাইয়ের খাল খননসহ অন্যান্য নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এ সময় পুরাতন মসজিদের জমি দাতা হামিদুল ইসলাম, ফরিদুল ইসলাম ও জাহিদুল ইসলাম কাজে বাঁধা দেন। মসজিদ কমিটির সভাপতি অলিয়ার রহমান, তাঁর ছেলে আবু আলম ও শাহা আলম অন্যান্য মুসল্লিরা বাঁধার কারণ জানতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে সাবেক সেনা সদস্য হামিদুল ইসলাম (৫৫) লোহার তৈরি লাঙল দিয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি অলিয়ার রহমানের মাথায় সজোরে আঘাত করে। এতে মাথা ফেটে গুরুতর আহত হন অলিয়ার। এসময় অলিয়ারের ছেলে আবু আলম ও শাহা আলম এগিয়ে আসলে তাঁদেরকেও বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে হামিদুল ও তার লোকজন।
গুরুত্বর আহতাবস্থায় স্থানীয়রা অলিয়ার ও তাঁর ছেলে আবু আলমকে উদ্ধার করে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদ পূর্ণনির্মাণ ও সরিয়ে নেওয়ার আলোচনায় এবং সিদ্ধান্তে সকল জামায়াতবাসীর পাশাপাশি হামিদুল এবং তার ভাইয়েরা সম্মত ছিলেন। তাঁরা তিনভাই মসজিদে অনুদান দিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করে পুরাতন মসজিদটি সরানোয় বাঁধা দিয়ে সভাপতিকে মেরে মাথা ফাঁটিয়ে দেয় তারা।
পাটগ্রাম থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহত অলিয়ার রহমানের ছোট ছেলে শাহ আলম ঘটনার দিন বাদি হয়ে থানায় মামলা দিলে হামিদুল ইসলামের স্ত্রী আঞ্জু বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মঙ্গলবার হামিদুল তাঁর ভাই ফরিদুল ও জাহিদুলসহ বাকী আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।