করোনার কারণে সতর্কাবস্থায় চলাফেরা, প্রতিকূল পরিবেশ ও খোলা বাজারে দাম বেশি হওয়ায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় সরকারিভাবে ধান-চাল ক্রয়ে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ধানের মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে কৃষকদের নিকট থেকে সরাসরি ৪ হাজার ৮শ ২০ মেট্রিক টন ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত ১৮ মে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলেও গত দেড় মাসে খাদ্য গুদামে ধান ক্রয় করা হয়েছে এক হাজার ২ শ ১০ মেট্রিক টন। প্রতি কেজি ধানের সরকারি ক্রয় মূল্য ধরা হয়েছে ২৬ টাকা।
ধান ক্রয়ের জন্য লটারীর মাধ্যমে ৪ হাজার ২শ কৃষক নির্বাচন করা হয়। কিন্তু খোলা বাজারে দাম বেশি পাওয়ায় সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান দিতে কৃষকদের আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা। এছাড়া সরকারিভাবে ধান দিতে গেলে আদ্রতা নিরুপন,ব্যাংক একাউন্ট খোলাসহ নানান ধরণের ঝুট-ঝামেলা পোহাতে হয় বলে কৃষকরা সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন।
যার কারণে গত দেড় মাসে প্রায় ২৫% ধান ক্রয় করতে সক্ষম হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে চলতি বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহ অভিযান ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে চালকল মালিকদের নিকট থেকে কেজি প্রতি ৩৬ টাকা দরে দুই হাজার ৯ শ ৫৩ মেট্রিক টন চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। উপজেলায় ১ শ ১৬ জন চালকল মালিকের পক্ষে চলতি মৌসুমে খাদ্য গুদামে চাল দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। খোলা বাজারে ধানের মূল্য বেশি হওয়ায় চালের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে ।
কারণ ধান ক্রয়ের পর চাল তৈরি করে সরকারি খাদ্য গুদামের উপযোগী করতে সরকারি ক্রয় মূল্যের চেয়ে খরচ বেশি হচ্ছে। এব্যাপারে উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি শাহাদত হোসেন আনন্দ জানান, করোনার কারণে আমরা মিল চালাতে পারছিনা। কারণ মিলে সারিবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হয়। শ্রমিকরা করোনা আক্রান্তের আশঙ্কায় মিলে কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করছে।
তাছাড়া চাল উৎপাদন খরচ সরকারি মূল্যের চেয়ে বেশি। এ নিয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলাউদ্দিন বসুনিয়া জানান, সরকারি দামের চেয়ে খোলা বাজারে দাম বেশী হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হতে পারে। এছাড়া আবহাওয়াও অনুকূলে নেই। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চেষ্টা চালিয়ে যাব।