কুমিল্লার হোমনা উপজেলার করোনা ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধা ও উপজেলার প্রথম (কোভিড-১৯) করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহকারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমনান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। শুক্রবার তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ডাক্তার মাহবুবের করোনা পজেটিভের খবরে সাধারণ মানুষ ও আক্রান্ত রোগীদের মাঝেও হতাশা দেখা দেয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিজস্ব ফেইসবুক পেইজেও তাকে সবচেয়ে উদ্যমী ডাক্তার হিসেবে মূল্যায়ণ করা হয়েছে। তার শারিরিক অবস্থা জানতে মোবাইলে ফোন করলে অসুস্থতার খবর জানা যায়। তিনি মানুষের সেবায় নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে। ভবিষ্যতেও সাধারণ মানুষের সোবায় নিজেকে নিবেদিত রাখতে পারার আকুতি জানিয়ে তিনি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। হোমনা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক মরহুম নূরুল ইসলাম (বিকম-স্যার)’র পুত্র ডা. মাহবুব অল্প সময়েই সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করে প্রিয় হয়ে উঠেছেন।
ডাক্তার মাহবুব গত চার-পাঁচদিন ধরেই কাশি, জ¦র, শরীরে প্রচ- ব্যথা-যন্ত্রণা ও ডায়রিয়ায় ভুগছেন। করোনার সবগুলো উপসর্গ দেখা দিলে তিনি গত ১ জুন করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। শুক্রবার ১০ জনের সঙ্গে তারও করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। তার করোনা পজেটিভের খবরটি তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন। হোমনা উপজেলায় তাকেসহ আরও ১০ জনের পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার মধ্য দিয়ে উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৩৮ জনে।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত ডা. মাহবুব জানান, “ভাই- সকাল সন্ধ্যা মানুষের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। অসুস্থতার খবরটি কাউকে জানাইনি। শুনলে অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়বে। হোমনায় করোনাক্রান্ত রোগীরা এখনও দিনে কিংবা রাতের যে কোনো সময় তাদের খবরাখবার জানিয়ে ব্যবস্থাপত্র নিতেন। আমিও ফোনেই নিদ্বিধায় তাদের সান্তনা দিয়েছি। মানসিক শক্তি সঞ্চয় করার চেষ্টা করেছি। আমার অসুস্থতার মাঝেও তাদের বুঝতে না দিয়ে ওষুধপত্রসহ সব ধরনের পরামর্শ দিয়েছি। তাতেও আমার কোনো কষ্ট লাগে না। আমি আবারও সুস্থ হয়ে সাধারণ মানুষের সেবা দিতে চাই।
হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আবদুছ ছালাম সিকদার জানান, শুক্রবার রিােপার্ট এসেছে ১৯টি। এদের মধ্যে করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে ১০টি। এদের মধ্যে পুরুষ ৭ ও নারী ৩ জন। এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারসহ মোট ১৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। শুক্রবাার পর্যন্ত আমারা ৮৫১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ৮১০ জনের রিপোর্ট পেয়েছি। রিপোর্ট বাকী রয়েছে আরও ৪১ জনের। সুস্থ হয়েছেন সর্বমোট ৭০ জন।