প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে এবার নীলফামারী জেলাকে লকডাউন ঘোষনা করলেন জেলা প্রশাসন।
জেলার ছয় উপজেলার মুল প্রবেশ পথে বসানো হয়েছে পুলিশের ১৪ টি চেক পোষ্ট। তারপরেও থামছে না বহিরাগতদের প্রবেশ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাহারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত ৯ এপ্রিল থেকে নীলফামারী অঘোষিত লকডাউন ছিল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের সিন্ধ্যান্ত অনুযায়ী আজ দুপুর থেকে লকডাউন ঘোষনায় মাইকিং করা হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহে জেলায় ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে এসেছেন ১ হাজার ১৭৩ জন। তাদের সকলকে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। ফলে করোনার ঝুঁকিতে পড়েছে নীলফামারীর ২০ লাখ মানুষ।
আইইডিসিআর তথ্যমতে নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুরকে ডেঞ্জারজোন ঘোষনা করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, ও গাজীপুরের অসংখ্য মানুষ উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী জেলায় আসছে।
বিভিন্ন জেলায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর চেকপোষ্ট থাকায় প্রধান সড়ক ব্যবহার না করে চোরাই পথে ১৩-১৪ জন মিলে মিনিবাসে রাতের আধারে নিজ এলাকায় প্রবেশ করছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে তাৎক্ষনিকভাবে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানো হচ্ছে।
সরকার নিজ নিজ অবস্থানে থাকার জন্য বার বার বললেও তারা নিজ নিজ গ্রামের বাড়ীতে (এলাকায়) ফিরে আসছে। এতে আতঙ্ক তৈরী হয়েছে সাধারন মানুষের মাঝে।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত ডিসেম্বর থেকে বিদেশ ফেরত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৪৫জন।
এরমধ্যে হোম কোয়ারেন্টিনে শেষ করেছেন ৩৩৩ জন। তারা সবাই সুস্থ্য আছেন। গত ২৪ ঘন্টায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ১৫৮ জন।
এদিকে, জেলায় চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ায় তাদের নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে আইসোলশনে রাখা হয়েছে। স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ১১৭৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. রনজিৎ কুমার বর্মন জানান এ পর্যন্ত ১৪২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাটানো হলে এ পর্যন্ত জেলায় চারজনের করোনা পজেটিপ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল জেলার কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে একজন চিকিৎসক করোনা শনাক্ত হলে হাসপাতালটি লকডাউন করা হয়। অপরদিকে, সৈয়দপুরে নারায়নগঞ্জ থেকে আসা এক ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হওয়ায় ও গ্রামের ২০টি বাড়ী লকডাউন করা হয়। গত ১১ এপ্রিল ডিমলার বালাপাড়া ইউনিয়নের সুন্দর খাতা গ্রামের এক কিশোরের করোনা শনাক্ত হয়। ওই গ্রামের ১৪ টি বাড়ী লকডাউন করা হয়।
আবার গত ১৩ এপ্রিল জেলার জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের মাঝাপাড়া গ্রামের এক যুবকের করোনা শনাক্ত হওয়া সেখানে ১৬ টি বাড়ী লকডাউন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে, স্থানীয় প্রশাসন ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে আসা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরী করে ১ হাজার ১৭৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।
এব্যাপারে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাহারুল ইসলাম জানান, করোনা পরিস্থিতি মোবাবিলায় বাদ্য হয়ে নীলফামারীকে লকডাউন ঘোষনা করা হয়।