গাইবান্ধায় করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মাহাবুব আরা বেগম গিনি।
সভায় হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি বলেন, গাইবান্ধায় করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করতে হবে। এজন্য গাইবান্ধার সর্বস্তরের মানুষের ঐক্যবদ্ধ এবং ঐকান্তিক প্রচেষ্টা একান্ত অপরিহার্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং জনসমাগম না করে বাড়ী বাড়ী গিয়ে দুঃস্থদের মধ্যে মানবিক সহায়তা পৌছে দিতে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে আহবান জানান।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, গাইবান্ধা জেলার কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও ত্রান সম্বনয়কারি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: নূর উর রহমান।
এছাড়া সভায় অন্যান্যদের মধ্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার আতা, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ্ সারোয়ার কবীর, পৌর মেয়র অ্যাড. শাহ্ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন, সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ, জেলা সদর হাপসাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহফুজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফরহাদ আব্দুল্যাহ হারুন বাবলু, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, জেলা বিএমএ সভাপতি ডা. মতিয়ার রহমান, জেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ড. আব্দুস সামাদ সহ জেলা পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় গাইবান্ধা জেলার নোভেল করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত সার্বিক তথ্য তুলে ধরা হয় এবং করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
উল্লেখ করা হয় যে, করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় জেলার প্রস্তুতি হিসেবে ৭টি সরকারি হাসপাতালে মোট ৪শ’ ৮১টি বেড রয়েছে। এরমধ্যে প্রস্তুতকৃত বেডের সংখ্যা ৩৫টি ও বেসরকারি ১৯টি। এছাড়া জেলায় মোট ১শ ২৬ জন ডাক্তার ও বেসরকারি ১৯ জন ডাক্তার বর্তমানে কর্মরত রয়েছে। সরকারি নার্স ১শ’ ৯০ জন এবং বেসরকারি নার্স ১৯ জন। চিকিৎসকদের জন্য সরকারি ৫ হাজার ৫শ’ ৩৫টি এবং বেসরকারি ১১০টি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) মজুদ রয়েছে। এরমধ্যে ৪ হাজার ১০৫টি পিপিই বিতরণ করা হয়েছে। অপরদিকে ১৪ হাজার মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে এবং ৭শ’ মাস্ক মজুদ রয়েছে। এছাড়া ও করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের জরুরী চিকিৎসায় স্থানান্তরের নিমিত্তে ২টি এ্যাম্বুলেন্স ও ২টি মাইক্রোবাস সর্বক্ষনিক প্রসÍুত রয়েছে। এছাড়া চিকিৎসা কেন্দ্রে জরুরী বিভাগে ১শ’টি আইসোলেসন কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে।
এছাড়া করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত দুর্যোগ নিয়ন্ত্রনে দুঃস্থদের মধ্যে মানবিক সহায়তা প্রদানে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত হয়। এবং সরকারি মানিবক সহায়তা বিতরণ বিষযয়ে সার্বিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে জরুরী সরকারি মানবিক সহায়তা বিতরণ কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। জেলায় জি আর ১০ লাখ ৮৩ হাজার মে. টন চাল, জি আর নগদ ৫০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ১২ হাজার টাকা উপ-বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে জেলায় ২১২ মে. টন চাল এবং ২ লাখ নগদ টাকা মজুদ রয়েছে ।