বিপ্লবী সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলী রেজা’র অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এক শোক বিবৃতিতে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, এম. এস সিদ্দিকী, আব্দুল হামিদ শরীফ, অধ্যাপক হাসিনা বেগম এবং নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, মোঃ আলী রেজা ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক, আত্মনিবেদিত শ্রমিকনেতা।
সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের পেশাগত উন্নয়নের জন্য তিনি আমৃত্যু চেষ্টা করেছেন। বিশেষ করে শ্রমিকদের নিযোগপত্র, বেতনব্যবস্থা, কর্মঘন্টা নির্দিষ্টকরণ, বিশ্রামাগার নির্মাণ, সড়কে নির্বিঘেœ গণপরিবহন চলাচলে বাধাসমূহ অপসারণ ইত্যাদি দাবিতে তিনি সোচ্চার ছিলেন। এসব বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নিয়মিত আবেদন ও চিঠিপত্র প্রদান করতেন এবং পত্রিকায় লেখালেখিও করতেন, যা অন্যান্য পরিবহন শ্রমিক নেতাদের ক্ষেত্রে তেমনটি দেখা যায় না। তিনি ছিলেন ¯্রােতের বিপরীতে একজন মননশীল শ্রমিকনেতা।
বিভিন্ন পরিবহন মালিক সমিতি এবং শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যখন বেপরোয়া চাঁদাবাজির ব্যাপক অভিযোগ, চাঁদাবাজির কারণে গোটা গণপরিবহন ব্যবস্থা যখন বিপর্যস্ত, তখন মোঃ আলী রেজা এই চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, সামান্য শক্তি নিয়ে হলেও রুখে দাঁড়াবার চেষ্টা করেছেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে বারবার চাঁদাবাজি বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন। এজন্য তিনি স্বার্থান্বেসী মহলের বিরাগভাজন হয়েছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মোঃ আলী রেজা সত্যিকার অর্থে একটি সুশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, যেখানে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কাজ করবে এবং যাত্রীসাধারণ নিরাপদে যাতায়াত করবে। একটি নিরাপদ-জনবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা-ই ছিল তাঁর জীবনের আকাঙ্খা। কিন্তু খুব অসময়ে অকালেই তিনি চলে গেলেন। তাঁর এই মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামের অনেক বড় ক্ষতি হলো। গণপরিবহন খাতে চলমান অনিয়মের বিরুদ্ধে ন্যুনতম প্রতিবাদটিও অনেকাংশে থেমে গেল। এটি একটি জাতীয় ক্ষতিও বটে।
নেতৃবৃন্দ দায়িত্বসচেতন, নির্মোহ এই শ্রমিক নেতার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য, মোঃ আলী রেজা লাং ইনফেকশন নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ১৬ মে রাজধানীর রাশমনো হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর।