চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের টোলবাড়ি গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মোঃ জীবন আলী (৪০) স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে অত্যন্ত মানবেতদর জীবন যাপন করছিলেন। সংসারে দু’মুঠো খাবারের অভাবে তার আর্তনাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তার সহায়তায় খাবার পাঠিয়েছেন কুমিল্লার এসপি সৈয়দ নূরুল ইসলাম। জীবন আলীর পরিবারকে প্রায় দুই মাসের খাবারের জন্য ৫০ কেজি চাল ও নগদ আর্থিক সহায়তা প্রেরণ করেন তিনি।
এদিকে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে জীবন আলীর পুরো পরিবার। জানা গেছে, জদৃষ্টি প্রতিবন্ধী জীবন আলী নিজ বাড়িতে বসবাস করেন এবং গ্রামে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন ছোট পরিসরে থালা বাসন। এখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে তিনি কোন রকমে সংসার চালান। তবে প্রায় দুই মাস ধরে করোনার ভয়াল থাবায় বন্ধ হয়ে যায় তার ছোট এই ব্যবসাটি। ফলে ঘরে যে পরিমাণ খাবার ছিল, তা শেষ হয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে সামান্য সাহায্যের জন্য ছুটে গেছেন তার ইউনিয়নের মেম্বার ও চেয়ারম্যানের কাছে কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি। কেউ সাহায্য করেনি তাকে। এদিকে গত রবিবার (১৭ মে) সকালে এক মুঠো খাবার জোগাড় করতে জীবন আলী ছুটে আসেন শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে। সেখানেও গিয়েও ব্যর্থ হন তিনি।
এসময় নিরুপায় জীবন আলীর আলোহীন চোখ দিয়ে অঝোরে অশ্রু গড়িয়ে পড়লে বিষয়টি স্থানীয়দের দৃষ্টিতে পড়ে। এমন সময় এক ব্যক্তি তার এই করুণ দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে ছড়িয়ে দেয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। এদিকে বিষয়টি দেখতে পান চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান ও কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম এবং তিনি সোমবার (১৮ মে) সকালে লোক পাঠিয়ে পরিবারটির খোঁজ খবর নেন। পরবর্তীতে তার কাছে খাবার ও নগদ অর্থ সহায়তা পৌছে দেন সৈয়দ নুরুল ইসলাম। এসময় হঠাৎ করে দুই মাসের খাবার ও টাকা পেয়ে আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন প্রতিবন্ধী জীবন আলী।
তিনি পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এব্যাপারে পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অসহায় মানুষকে সকল বিত্তবান মানুষ সহায়তা করবেন এমনটিই প্রত্যাশা করেন অসহায়রা। আর জীবন আলীকে সহায়তা করতে পেরে তিনি ক্ষুদ্র একটি কাজ করেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।