মাত্র ৪২ বছর বয়সে প্রয়াত বিখ্যাত সুরকার জুটি সাজিদ-ওয়াজিদের ওয়াজিদ খান। কিডনিতে সংক্রমণজনিত জটিলতার কারণে সোমবার ভোরে মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে প্রয়াত হন তিনি। ওয়াজিদ খান আর তাঁর ভাই সাজিদ খান- এই জুটি বলিউডে একের পর এক বিখ্যাত গান উপহার দিয়েছেন। সুরকারের অকালপ্রয়াণে অমিতাভ বচ্চন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, পরিণীতি চোপড়া, করণ জোহর, বরুণ ধাওয়ান, প্রীতি জিন্টা সহ বলিউডের খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বরা টুইটারে শোক প্রকাশ করেছেন। “ওয়াজিদ খানের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ।
একটি উজ্জ্বল হাসিমুখের প্রতিভা ঝরে গেল। প্রার্থনা করি,” টুইট করেছেন অমিতাভ বচ্চন। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া টুইটে লিখেছেন: “ভয়াবহ সংবাদ। একটি জিনিস যা আমি সবসময় মনে রাখব তা হ’ল ওয়াজিদ ভাইয়ের হাসি। সবসময় হাসিখুশি থাকতেন। খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন, তার পরিবার এবং শোকগ্রস্থ প্রত্যেকের প্রতি আমার সমবেদনা। শান্তিতে থাকুন আমার বন্ধু।” করণ জোহর টুইট করেছেন: “ওয়াজিদ খান, তোমার সঙ্গীত বেঁচে রইবে। লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে প্রীতি টুইট করেছেন: “আমি তোমাকে এবং আমাদের জ্যাম সেশন চিরকালের জন্য মিস করব।
যতক্ষণ না আমাদের আবার দেখা হচ্ছে।”দাবাং সিনেমায় ওয়াজিদ খানের সঙ্গে কাজ করেছিলেন আরবাজ খান, ইনস্টাগ্রামে তিনি পোস্ট করেছেন: “সঙ্গীত শিল্প এক রতœকে হারিয়েছে।”সঙ্গীত জগতে ওয়াজিদ খানের সহকর্মীরাও এই সুরকারের স্মৃতিচারণ করেছেন। গায়ক-সুরকার সেলিম মার্চেন্ট টুইট করেন: “আপনি খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন। এ আমাদের জগতে এক বিশাল ক্ষতি। আমি হতবাক, ভেঙে পড়েছি।” শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছেন গায়ক বিশাল দাদলানি, শঙ্কর মহাদেবন, আদনান সামি, হর্ষদীপ কৌর, সুরকার জুটি শচীন-জিগর প্রমুখরাও।
ওয়াজিদ খানের মৃত্যুর পরে সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের সাথে কথা বলার সময় সেলিম মার্চেন্ট জানান, কিডনি সংক্রমণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ওয়াজিদ খানকে কিছুদিন আগে চেম্বুরে মুম্বইয়ের সুরানা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এবং তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সেলিম বলেন, “তাঁর একাধিক সমস্যা ছিল। কিডনিজনিত সমস্যা এবং কিছুদিন আগে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টও হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি কিডনির সংক্রমণ ধরা পড়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে শুরু করে, গত চার দিন ধরে তিনি ভেন্টিলেটারে ছিলেন।
সাজিদ-ওয়াজিদ সুরকার হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন, ১৯৯৯ সালে সলমান খানের চলচ্চিত্র ‘প্যায়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া’ দিয়ে এবং সলমান খানের চলচ্চিত্রের জন্য একের পর এক গান রচনা করে গিয়েছেন এই জুটি। পার্টনার, ওয়েলকাম এবং দাবাং সিরিজের সব কটি সিনেমার সঙ্গীতের দায়িত্বে ছিলেন এই জুটি। ওয়াজিদ খান সম্প্রতি সলমানের ‘প্যায়ার করোনা এবং ‘ভাই ভাই’ গানের পরিচালনাও করেন। সলমান খান লকডাউনের সময়ই প্রকাশ করেন এই গান দু’টি। সাজিদ-ওয়াজিদ সলমান খান-আয়োজিত রিয়েলিটি টিভি সো বিগ বস ৪ এবং বিগ বস ৬-এর থিম সংও রচনা করেছিলেন।
ওয়াজিদ খান একজন প্লেব্যাক গায়কও ছিলেন এবং মেরা হি জলওয়া, ফেভিকল সে, চিনতা তা চিতা চিতা, মাশাল্লাহর মতো গান তাঁরই গলায় বিখ্যাত হয়েছে। ওয়াজিদ খান আইপিএল ৪-এর থিম সংও গেয়েছিলেন, এই জুটিই সুর দিয়েছিলেন ওই গানে।
ওয়াজিদ খান এবং তার ভাই সাজিদ রিয়েলিটি মিউজিক শো সা রে গা মা পা ২০১২ এবং সা রে গা মা পা সিঙ্গিং সুপারস্টারের বিচারকও ছিলেন।