কুয়েতে গ্রেপ্তার সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের অপকর্মের সঙ্গে সেদেশের সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ ৭ কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তদন্তকারীদের বরাতে কুয়েতের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম আরব টাইমস এ তথ্য দিয়েছে।
এদিকে, দুর্নীতি মামলার তদন্ত পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাপুল ও তার সহযোগী মূর্তজা মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেদেশের পাবলিক প্রসিকিউটর।
৬ জুন মানব ও অর্থ পাচারের অভিযোগে কুয়েতে আটক হন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। তার জিজ্ঞাসাবাদের পর সেদেশের ৭ নাগরিকের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী দল।
নাম প্রকাশ না করলেও আরব টাইমস জানিয়েছে, এদের মধ্যে তিনজন কুয়েত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিভাগের প্রধান আর কেউ কেউ অবসরে গেছেন। তাদের ঘুষ এবং উপহার দিয়ে বিশেষ সুবিধা নিতেন এমপি পাপুল। এছাড়া কুয়েত সরকারের টেন্ডার কমিটি এবং স্বরাষ্ট্রসহ দুই মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ ছিল তার।
জিজ্ঞাসাবাদে এমপি পাপুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন ১১ প্রবাসী বাংলাদেশি। তাদের কাছ থেকে ভিসা ও বসবাসের অনুমতির নামে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ করেন তারা।
কুয়েতের গণমাধ্যমের দাবি, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে ইউরোপ ও উপসাগরীয় অঞ্চলে সম্প্রতি বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার করেছেন এমপি পাপুল। মানব ও অর্থ পাচারের অভিযোগ ওঠার পর কুয়েতের বাইরে ব্যবসা স্থানান্তরের পরিকল্পনা ছিল তার।এমপি পাপুলের নাম উল্লেখ না করে টুইটে মানব পাচারের বিরুদ্ধে কুয়েতের কঠোর অবস্থানের কথা জানান উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনাস আল সালেহ। সেই সঙ্গে অপরাধীরা ছাড় পাবেন না বলে জানান তিনি।
এদিকে, অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করাসহ যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন কুয়েতের এমপি আব্দুল করিম আল-কানদারিসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিরা।
গত ফেব্রুয়ারিতে কুয়েতের গণমাধ্যম পাপুলের বিরুদ্ধে মানব ও অর্থপাচারের অভিযোগ তুললে ভিত্তিহীন বলে দাবি করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হন পাপুল। পাপুলের স্ত্রী কাজী সেলিনা ইসলামও কুমিল্লার সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য।