গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতার প্রশ্নে মশিউর রহমান যাদু মিয়ার রাজনৈতিক জীবন মানুষকে চিরদিন অনুপ্রাণিত করবে। রাজনৈতিক সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। দেশের এ ক্রান্তিকালে তার মতো মেধাবী ও সাহসী নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা জাতি উপলব্ধি করছে। মনে রাখতে হবে রাজনীতি পথ হারালে দেশও পথ হারাবে। যার ফলশ্রুততে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র সকল কিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে রাজনীতি পথ হারাতে চলছে।
রবিবার (১৯ জুরাই) গণতন্ত্রের সিংহ পুরুষ, জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার ৯৬তম জন্মবার্ষিকী স্মরণে ভাসানী টিভি’র সৌজন্যে আয়োজিত ভার্চুয়াল স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, রাজনীতি যখন পথ হারায় তখনই শাহেদ, সাবরিনা, মামুন, পাপিয়াদের জন্ম হয়। সকল শাসগোষ্টির মধ্যেই এদের বিচরন থাকে। বর্তমান সরকারই নয় প্রায় সকল রাজনৈতিক দলই হয়তো রাজনীতির পথ হারিয়ে ফেলেছে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোতে রাজনীতিবিদরা অবহেলার শিকার। দলগুলোর নিয়ন্ত্রন এখন অরাজনৈতিক ব্যাক্তিদের হাতে। যার ফলাফল কখনোই শুভ হবে না, হতে পারে না।
তিনি বলেন, আজ আমাদের নতুন আন্দোলনের সূচনা করতে হবে, রাজনীতির নিয়ন্ত্রন রাজনীতিদিদের হাতে ফিরিয়ে আনতে হবে। দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন মুক্ত রাজনীতি ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।
যুক্তফ্রন্ট সমন্বয়কারী ও সাবেক মন্ত্রী গোলাম সারোয়র মিলন বলেন, মহান দেশপ্রেমিক যাদু মিয়া ছিলেন প্রগতিশীল বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা। যে চেতনা ধারন করে জাতীয়তাবাদী শক্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তারা আজ সেই পথে নেই, তারা আজ পথভ্রষ্ট। পারিবারিক রাজনীতির, দলবাজির রাজনীতির বিরুদ্ধে দেশের সাম্যতা, ন্যায় ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই ছিলো যাদু মিয়ার রাজনীতি।
তিনি বলেন, আজকে রাজনৈতিক দৈন্যদশার জন্য বৃহত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বই দায়ি। দলগুলোর মূল নেতৃত্ব অরাজনৈতিক ব্যাক্তিদের হাতে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু ক্ষমতার পরিবর্তন হলেই দেশ থেকে দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন মুক্ত হবে বলে আশা করা কঠিন।
তিনি আরো বলেন, ক্ষমতাসীনরা রাজনীতির পথ হারিয়ে ফেলেছে। মনে রাখতে হবে, শুধু নির্বাচিত হলেই সরকার গণতান্ত্রিক হয় না, শুধু উন্নয়ন দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। দেশে নতুন প্লাবনের পদধ্বনী শোনা যাচ্ছে, যে প্লাবনে সকল দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন-অন্যায় অত্যাচার ভেসে যাবে। নতুন দেশপ্রেমিক শক্তির উম্বেষ এখন সময়ের দাবী।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা ও গণদল চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী বলেন, যাদু মিয়া মানুষের মুক্তি রাজনীতির করেছেন। তার সেই অসামাপ্ত রাজনীতি সমাপ্ত করতে আজ রাজনীতির গুনগত পরিবর্তন আনতে হবে। রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তন আনা এখন সময়ের দাবী।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে, রাজনীতির প্রয়োজনে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজন যাদু মিয়ার প্রদর্শিত পথে সাচ্ছা জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্য প্রয়োজন। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জাতীয় ঐক্য নয়, শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ঐক্য নয়। ঐক্য হতে হবে রাষ্ট্রের প্রয়োজনে, জনগনের মুক্তির প্রয়োজনে। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী, যাদু মিয়ার দেখানো পথে পরিবারতন্ত্র, দলবাজির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া’র সভাপতিত্বে ও সঞ্চলনায় মশিউর রহমান যাদু মিয়ার কর্মময় জীবনের উপর আলোচনায় অংশগ্রহন করেন যুক্তফ্রন্টের সমন্বয়কারী, বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ও বিকল্পধারা (একাংশ) মহাসচিব এডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন সমন্বয়ক মো. মহসিন ভুইয়া, দলের ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, যুগ্ম মহাসচিব মো. নুরুল আমান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া প্রমুখ।