সেই তিন দশক আগে বা ১৯৯০ সালের দিকে উপজেলা বাসির একটাই দাবি রাস্তা চাই রাস্তা চাই। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর উপজেলা বাসির সেই স্বপ্ন পুরুন করেন ওই সময়ের( তানোর- গোদাগাড়ী) আসনের সাংসদ গোদাগাড়ীর কৃতি সন্তান সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হক। উপজেলা বাসির মুল যোগাযোগের সড়ক এটি,সেই মাটির কাঁচা রাস্তাটি প্রথম পাকারণ করা হয়েছিল ১৯৯২ সালে।
শুধু এই রাস্তায় না দুই উপজেলার আনাচে কানাচে পাকা রাস্তা তৈরি করা হয়। ৯২ সালের পর থেকে আর কোন সংস্কার হয়নি। রাস্তার পিচ পাথর তো উঠেছে অনেক আগেই এমনকি নিচের ইট বালি উঠে কাদাতে পরিণত হয়ে পড়েছে । অনেক জায়গাই বড় বড় গর্তের্র সৃষ্টি হয়ে খাল ডুবায় পরিণত হয়ে পড়েছে । যার কারনে প্রতিনিয়ত গর্তে পড়ে ছোট বড় যানবহন বিকল হয়ে পড়ে থাকছে সড়কের মাঝ পথে।
এতে করে সৃষ্টি হচ্ছে যান জটের, যা যাত্রীদের চরম বিরক্তির কারণ। এছাড়াও টানা বৃষ্টির কারনে উপজেলা পরিষদ থেকে তালন্দ পর্যন্ত রাস্তার ভিবিন্ন জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে পড়েছে। গুবিরপাড়াগ্রামের সামনে চুকয়ের ব্রিজের উত্তরে বিশাল গর্ত হয়ে পড়েছে এবং গোকুল মোড়ের বানির ধানের আড়তের সামনে গর্তের সৃষ্টি হয়ে সেন ৯০ দশকের মাটি বেড়িয়ে পড়েছে।
বাইক ও সাইকেল ছাড়া যে কোন যান গর্তে পুতে যাচ্ছে। আজ বুধবার সেখানে মালবাহী একটি ট্রলি পুতে যাবার কারনে অনেক মালবাহী গাড়ী আটকা পড়ে আছে।এই রাস্তাটি গত বছরেই সাংস্কার করা হয়েছিল। আর কর্তাবাবুরা শুধুই শান্তনার বানী শুনিয়েই যাচ্ছেন।
জানা গেছে, রাজশাহীর তানোর উপজেলার মু-ুমালা-আমনুরা প্রধান সড়কের চিত্র এটি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরে যাতায়াতের আর কোন বিকল্প রাস্তা না থাকায় অনেকটা বেকায়দায় পড়ে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করছে তানোর ও মোহনপুর উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ।
তবে,এ সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে কয়েক যুগ ধরে কর্তৃপক্ষ আশার বানী শুনালেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন পদেক্ষপ দেখা যায়নি । শুধু মুন্ডুমালা-আমনুরা সড়কই নয়,তানোরের সাথে গোদাগাড়ী উপজেলার যোগাযোগের এক মাত্র রাস্তাটির অবস্থাও মারাত্মক করুণ অবস্থায় পড়ে আছে। মুন্ডুমালা হতে গোদাগাড়ীর জটেবটতলা পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার রাস্তাটি ১৫ বছর ধরে সংস্কার না হওয়াই এমন পর্যায়ে গেছে যে দেখে মনে হবে এটি পাকা সড়ক নয়, কাদাময় কোন গ্রামের রাস্তা।
পিচ পাথর ইট বালুর কোন চিহ্ন নেই। মাঝে মাঝে কুচি কুচি পথর চোখে পরে । রাস্তাটিতেও বড় বড় গর্ততে পরিণত হয়েছে। গোদাগাড়ী হতে মুন্ডুমালা পর্যন্ত চলছিল বাস। এ করুণ রাস্তার কারণে ৭ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে বাস চলাচলও। কর্তৃপক্ষও এব্যাপারে চরম উদাসীন।
এলজিইডি সুত্রে মতে,১৯৯২ সালের দিকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার রাস্তা আমনুরার থেকে তানোর হয়ে রাজশাহী পর্যন্ত প্রধান সড়ক কাচা মাটির রাস্তা থেকে পাকা করণ করা হয় । এর মধ্যে আমনুরার ধামধুম ব্রিজ থেকে বাগসারা পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার প্রধান সড়কটি তানোর উপজেলার মধ্যে রয়েছে।
তানোর উপজেলার ৩৩ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে মুন্ডুমালা বাজার হতে-বাগসারা পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার সড়ক একাধিক বার সংস্কার করা হলেও মুন্ডুমালা-থেকে আমনুরা ধামধুম পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কটি ১৯৯২ সালের পরে ২৮ বছরেও একবারেও সাংস্কার করা হয়নি। যার কারণে এ সাত কিলো সড়কের এখন এমন পর্যায়ে গেছে যে রাস্তার পিচ পাথর উঠেছে তো বটে নিচ থেকে ইট বালি সরে গিয়ে খাল-ডুবাতে পরিণত হয়েছে। হয়েছে সড়কের মাঝে বিশাল বিশাল ভয়ঙ্কর গর্ত। এমন সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছেন কয়েক লাখ মানুষ।
স্থানীয়রা জানান,আমনুরা থেকে মুন্ডুমালা মাত্র সাত কিলোমিটার রাস্তার জন্য পোরশা,রহনপুর, নাচোল আড্ডার উপজেলার কয়েক লাখ মানুষকে ৪০ কিলোমিটার ঘুরে গোদাগাড়ী হয়ে রাজশাহী শহরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে খরচ ও সময় দুটোই বেশি লাগছে। আর ৪০ কিলোমিটার ঘুরে রাজশাহী যাতায়াতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছে রোগীবহন কারী যানবহন গুলো।
আমনুরা থেকে রাজশাহী যাতায়াত করে এমন একাধিক বাস চালক জানান,মুন্ডুমালা থেকে সাত কিলোমিটার আমনুরা সড়কটি চলাচলে একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ রাস্তায় চলতে হচ্ছে হেলে দুলে। যাত্রীরা ভয়ে জড়সড় হয়ে পড়ে। অনেক সময় সড়কের মাঝ পথে চাকা পুতে পড়ে থাকে গাড়ি।
তারা আরো জানান,সড়কটি সংস্কারের জন্য একযুগ ধরে সড়ক কতৃপক্ষকে বাস মালিক সমিতি পক্ষে অনুরোধ করা হলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি। বাস মালিক সমিতি প্রতিবছর এ রাস্তায় ভাঙ্গা চোরা ও বড় গর্তে নিজে থেকে ইটের খোয়া ফেলে। তবু ও কর্তৃপক্ষ রাস্তাটি একবারের জন্য দেখ ভাল করেনি। শুধু সাধারণ যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে গাড়ী চালাচ্ছেন তারা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর( এলজিইডির ) উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান,তানোর হতে আমনুরা ধামধুম ১৭ কিলোমিটার রাস্তা শুধু সাংস্কার নয়,রাস্তার দুই পাশে তিন ফিট করে সম্প্রাসরণ ও করা হবে। ইতি মধ্যে এ রাস্তার আংসিক কাজ শুরু হয়েছে। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে পুরোদমে কাজ শুরু করবে ঠিকাদার বলে শুনান আসার বানী।