“করোনা মহামারীতে আদিবাসীদের জীবন-জীবিকার সংগ্রাম” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস-২০২০ পালন উপলক্ষে আজ ১২ আগস্ট বুধবার সকাল ১১টায় জাতীয় আদিবাসী পরিষদ পাবনা জেলা শাখার উদ্যোগে মাস্ক বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার বাাঘলবাড়ী কৈ আদিবাসী কমিউনিটি সেন্টার প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি পালিত হয়। শতাধিক আদিবাসীর মাঝে মাস্ক বিতরণ করা হয়।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ পাবনা জেলা সভাপতি রামপ্রসাদ মাহাতো এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন চাটমোহর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রভাষক ফিরোজা পারভীন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিভূতী ভূষণ মাহাতো, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রচার সম্পাদক প্রদীপ মাহাতে, আটঘরিয়া উপজেলা সভাপতি অর্পন বানিয়াস, আদিবাসী নারী নেত্রী অলোকা মাহাতো, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ সিরাজগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক চৈতন্য সিং, চাটমোহর উপজেলার আহ্বায়ক অপূর্ব সিং প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, আদিবাসীরা দীর্ঘদিন থেকে শোষন-বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। আদিবাসীরা এদেশের নাগরিক হলেও এখনো অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেই চলেছে। আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, ভূমি রক্ষার জন্য পৃথক ও স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠন সহ ৯ দফা দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্র আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মনোনিবেশ করছেনা। উল্টো আদিবাসীদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। সরকারি চাকরিতে আদিবাসী কোটা বাতিল করেছে। এতে আদিবাসীরা আরও পিছিয়ে পড়বে।
করোনা ভাইরাস আদিবাসীদের জীবন-জীবিকার সংগ্রামকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রান্তিক ও দরিদ্র আদিবাসীরা কাজের অভাবে কষ্টে দিন পার করছে। আদিবাসীরা প্রতিনিয়ত সংগ্রামের মধ্যে জীবন যাপন করলেও করোনায় অনেক এলাকায় আদিবাসীরা পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তাও পায়নি। সেখানেও বৈষম্যের শিকার হয়েছে। আদিবাসী শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বিমূখ হয়ে পড়ছে। করোনা সময়েও আদিবাসীদের উপর নির্যাতন, ভূমি দখল থেমে নেই। সামগ্রিকভাবে আদিবাসীদের মানবাধিকার পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে।
বক্তারা দাবি করেন, করোনা মহামারীতে আদিবাসীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা, আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া থেকে রক্ষায় বিশেষ নজর বা ব্যবস্থা, আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সরকারি চাকরিতে আদিবাসী কোটা পূনর্বহাল, পৃথক ও স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠন, আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রণালয় সহ আদিবাসীদের ৯ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়াও পাবনা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অ-আদিবাসী কর্তৃক নিবন্ধিত ও পরিচালিত আদিবাসীর নামে সমিতি বাতিলের দাবি জানান বক্তারা।