সাধারণ মানুষ বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দায়সারা মাস্ক ব্যবহার করছে। তারা চলাচলেও নিরাপত্তাকে অগ্রাহ্য করছেন। মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক ব্যাবহারে সরকারিভাবে বাধ্য বাধকতা রয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ টার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর ও আশ পাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাস্ক না পড়লে বা স্বাস্থ্য মেনে না চলঠে জরিমানাও করার বিধান রয়েছে। জরিমানা এড়াতেই মাস্ক সাথে রাখেন সাধারণ মানুষ। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রধান ফটকের সামনে এমন চিত্র নিত্যদিনের। পাশাপাশি বাজার এলাকায় জনসমাগম বাড়লেও নিরাপদ দুরত্বের বালাই নেই।
গায়ের সাথে গা ঘেষে চলাচলই এখন অহরহ হচ্ছে। মাস্কের ব্যবহার নেই। রাস্তা ঘাটে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলাচল করছে। মসজিদে মুসল¬ীদের অর্ধেকই দেখা যায় মাস্ক ছাড়া। ভিতরে নিরাপদ দুরত্ব মানার চেষ্টা থাকলেও মাস্ক না থাকার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্টার ব্যহত হচ্ছে। ফলে সার্বিকভাবে করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে সিগারেট হাতে নিয়ে মুখের মাস্ক থুতনির নিচে রাখা বিএল কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, জরিমানা থেকে বাঁচতেই মাস্কটি সাথে রাখা। নগরীর বিভিন্ন চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে এমন চিত্র রয়েছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ বলেন, করোনা ভাইরাস সকলের হয়ে গেছে এবং এই রোগ মানব দেহের কোন ক্ষতি করতে পারবে না – এমন তথ্য ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, দেশে করোনা ভাইরাসে অক্রান্তে মৃত্যর হার অনেক কম। অক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শতকরা ৭৫ ভাগ বাসায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হচ্ছেন। বাকি ২০ ভাগ রোগী হাসপাতাল সেবায় সুস্থ্য হচ্ছেন।
৫ ভাগ রোগীর মধ্যে যেসব রোগী আইসিইউতে ভ্যান্টিলেটার ব্যাবহার করতে হয় তার ১.৩১ শতাংশ করোনা অক্রান্ত রোগী মারা যায়। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, আমরা সামাজিক নিরাপত্তা বা মাস্ক বা সুরক্ষা সামগ্রি ব্যাবহার করা বন্ধ করব। এটা বোকামি হবে। তাছাড়া গত ১২ জুলাই থেকে খুলনা জেলা প্রশাসন থেকে খুলনা জেলা ও মহানগরীতে শর্ত সাপেক্ষে সব ধরনের দোকানপাট, মার্কেট ও শপিংমল খুলে দেওয়া হয়েছে।
তবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে সকলকে মাস্ক পরিধান ব্যতীত কোনো ক্ষেত্রে দোকানে প্রবেশ করতে পারবে না এবং সকল ক্রেতা ও বিক্রেতা দোকান কর্মচারীকে মাস্ক ও হ্যান্ডগ¬াভস পরিধান ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। অথছ নগরীতে হরহামেশা চোখে দেখা যাচ্ছে উল্টো পরিবেশ। খুলনা বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়গনিষ্টিক এ্যাসোসিয়ানের সভাপতি ডাঃ গাজী মিজান বলেন, অনেকে মনে করছেন করোনা ভাইরাস এ দেশে কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
এই ভাইরাস আমাদের দেশের আবহাওয়ায় দুর্বল। তবে এ ধরনের মন্তব্য করা সম্পূর্ন বোকামি। এটা এক ধরনের গুজব। আমাদের সচেতন থাকতে হবে। সবাইকে চলাচলের ক্ষেত্রে তিন ফুট দুরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং সকলকে হ্যান্ড স্যানেটারাইজ দিয়ে হাত পরিস্কার রাখতে হবে। মুখে মাস্ক পড়তে হবে। খুলনা সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ বলেন, যতদিন খুলনায় একজন করোনা পজেটিভ থাকবে, ততদিন করোনা থাকবে।
সুতারাং করোনা ভাইরাস থেকে বাচতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে এবং সুরক্ষা সামগ্রি পড়তে হবে। সচেতন থাকতে হবে এবং বিশেষ করে মুখে মাস্ক ব্যাবহার ও হাত পরিস্কার রাখতে হবে। খুলনা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্টেট মোঃ ইউসুপ আলী বলেন খুলনা জেলা প্রশাসন থেকে মাস্ক ব্যাবহারের উপর প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে এবং মাস্ক ব্যাবহারের ক্ষেত্রে আগের মত নিয়ম মাফিক তদারকি করা হচ্ছে। গুজবে কেউ যেন কান না দেন। মাস্ক ব্যাবহারে অনিহা প্রকাশ হলে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।